<p>বরগুনার সদর উপজেলার এসবিসি ব্রিকস মালপত্র পরিবহনের সুবিধার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে কালভার্টের আদলে সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে। এতে বন্যার হুমকিতে রয়েছে উপজেলা সদরসংলগ্ন এলাকার হাজারো বাসিন্দা। এই ভাটার আগের মালিক এই সুড়ঙ্গটি তৈরি করেছে বলে দাবি বর্তমান ভাটার মালিকের লোকজনের। দ্রুত বাঁধ সংস্কার করে ইটভাটার মালিকের শাস্তি দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরগুনা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন বাঁধ কাটা বেআইনি।</p> <p>এই ভাটার বর্তমান মালিক বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র  দেবনাথ শম্ভুর আপন ভায়রা।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার কুমড়াখালী গ্রামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সঙ্গে এসবিসি ব্রিকস স্থাপন করেন গোলাম মোস্তফা। ওই ভাটায় মালপত্র পরিবহনের সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে মালপত্র পরিবহনের জন্য রাস্তা (সুড়ঙ্গ) তৈরি করেন মালিক। বাঁধ কেটে ফেলায় হুমকিতে পড়েছে বদরখালী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস হলে এই বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে জান-মাল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ছাড়া খাকদোন নদের চর দখল করে ভাটার পরিধি বাড়ানো হচ্ছে।</p> <p>গত বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের কুমড়াখালী এলাকার  বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে চলাচলের জন্য পথ তৈরি করা হয়েছে। সুড়ঙ্গটি কালভার্টের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে।  ভাটার  পরিধি  বাড়ানোর  জন্য খাকদোন নদের  তীরে  ইট, সুরকি ফেলা হচ্ছে।</p> <p>ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা সুজন মিয়া বলেন, ইটভাটার মালিক বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ইটভাটার মালপত্র পরিবহনের সুবিধার্থে পথ তৈরি করেছেন। প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস হলে ওই বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে জান-মালের ক্ষতি হবে।</p> <p>কুমড়াখালী গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে ফেলায় হুমকির মুখে পড়েছে  আমাদের গ্রামসহ তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ঝড়-বন্যার সময় এই কাটা স্থান দিয়ে পানি  ঢুকে  গ্রাম তলিয়ে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।’ বাঁধ কাটার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।</p> <p>ইটভাটার ম্যানেজার মতিউর রহমান বলেন, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাটিনি। এই ভাটার আগের মালিক বাঁধ কেটে এটি বানিয়েছে। ঝড়-বন্যা হলে যাতে এলাকায় না ঢুকতে পারে তার জন্য ভেকু (এক্সকাভেটর) মেশিন  দিয়ে সুড়ঙ্গর মুখে মাটি ফেলে রাখি।</p> <p>বরগুনা নদীবন্দর কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, বাঁধ কেটে সুড়ঙ্গ করা সম্ভব না। আমরা ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।</p>