<p>পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মিরুখালী ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামের দোগনা ও ভূতা খালের ওপর পাঁচটি অবৈধ বাঁধের কারণে প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে টানা ১৪ বছর ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার কৃষকরা। গ্রামবাসী মাইকিং করে বাঁধ কাটার উদ্যোগ নিলে প্রশাসন দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, খালের বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি বাঁধের কারণে এলাকায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ফসল ফলাতে না পেরে কৃষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এরই মধ্যে বাঁধ অপসারণ করার জন্য মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও আন্দোলন করেছেন তাঁরা। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে বাঁধ কাটার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার গ্রামবাসী মাইকিং করে বাঁধ কাটার উদ্যোগ নেয়। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা সরে আসে।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিষখালী ও বলেশ্বর দুই নদীর সংযোগ খালে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পাঁচটি বাঁধ দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ ও মাছ চাষ করে আসছেন। বাঁধ নির্মাণের ফলে পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। নদী ও খালের জোয়ারের পানির সঙ্গে উঠে আসা নানা জাতের মাছের রেণুপোনা বাঁধের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না, এ জন্য মৎস্য চারণ ক্ষেত্র নামে খ্যাত এলাকাগুলো মৎস্যশূন্য হয়ে পড়ছে। খালে বাঁধের কারণে বর্ষা-প্লাবনে প্রচণ্ড জলাবদ্ধতা ও খরা মৌসুমে পানিসংকট দেখা দেয়। প্রতিবছর শত শত একর তিন ফসলি জমি অনাবাদী পড়ে থাকে। তাতে কয়েক হাজার কৃষক ও মৎস্যজীবী বেকার হয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছে।</p> <p>স্থানীয় বাদুরা গ্রামের কৃষক সংগঠনের নেতা কৃষক শাহ আলম হাওলাদার জানান, গ্রামবাসী ১৪ বছর ধরে অভিশপ্ত বাঁধ অপসারণের জন্য মানববন্ধনসহ নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ বাঁধের কারণে কৃষি ও কৃষক চরম বিপর্যস্ত।</p> <p>মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম বলেন, প্রবহমান খাল সুরক্ষার স্বার্থে সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যথাযথ সমাধানের চেষ্টা চলছে। খালের নাব্যতা ফেরানো কিংবা অবৈধ দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।</p> <p> </p>