<p>জয়পুরহাটের কালাইয়ে জন্মের আগেই সাফ কবালা দলিলমূলে জমির মালিক হয়েছেন তানজির আহমেদ সাকিব নামে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা। আবার সেই জমি অন্যের কাছে বিক্রির ২৭ বছর পর নাবালক সেজে মালিক বলেও দাবিদার তিনিই। দখল নিয়ে মারপিটের ঘটনায় মামলা ও স্থানীয় লোকজনের দরবার-সালিসও মানেন না ওই নেতা। উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের তেলিহার গ্রামের ঘটনা এটি। উদয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য তানজির আহমেদ সাকিব একই ইউনিয়নের তেলিহার গ্রামের আফতাব উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। তিনি জেলার ক্ষেতলাল সরকারি সাঈদ আলতাফুন নেছা কলেজের প্রভাষকও।</p> <p>জাতীয় পরিচয়পত্র ও ক্রয়-বিক্রয়কৃত জমির দলিলমূলে জানা যায়, তানজির আহমেদ সাকিব ১৯৮৫ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। অথচ ১৯৮৪ সালের ৩০ মে সাফ কবালা দলিলমূলে তিনিসহ চার ভাই মিলে এক একর ৮ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। চার ভাইয়ের নামে ওই জমিসহ মোট এক একর ৫৫ শতাংশ জমি আরএস খতিয়ানভুক্ত হয়। ১৯৯৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাকিবসহ তিন ভাই মিলে ৬০৮৪ ও ৬০৮৫ নম্বর দলিলমূলে জন্মের আগে ক্রয়কৃত জমিসহ এক একর ১১ শতাংশ জমি অন্যর কাছে বিক্রি করেন। জমি ক্রেতা একই ইউনিয়নের করমকা গ্রামের আব্দুল গফুরের মেয়ে শ্যামলী আকতার ও শিউলি এবং উত্তর তেলিহার গ্রামের ফজলুর রহমান। তারা সেই থেকে ওই জমি ভোগদখল করে আসছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতা তানজির নাবালক সেজে গত আমন ধান রোপণের সময় ওই জমি নিজের দাবি করেন। তার পরও জমির মালিকরা আমন ধান রোপণ করলে কাটার সময় তিনি লোকজন নিয়ে এসে জোরপূর্বক ধান কেটে নিয়ে যান। বাধা দিলে জমিতে দুই পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে কালাই থানায় উভয় পক্ষের মামলাও চলমান।</p> <p>এদিকে জমি ক্রয়ের পর শ্যামলী আকতার ও শিউলি ৫৬ শতাংশ এবং ফজলুর রহমান ৫৫ শতাংশ জমি নিজেদের নামে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নামজারি করে নেন। অথচ ওই জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার সাত মাস পর তানজির আহমেদ সাকিবের জন্ম হয়েছে বলে জানা যায়।</p> <p>তেলিহার গ্রামের বাসিন্দা তানজির আহমেদ সাকিবসহ তার দুই ভাই মাহমুদুন নবী ও সেখ সাদি দীর্ঘ ২৭ বছর পর ওই জমির মালিকানা দাবি করেন। এক পর্যায়ে তারা মালিকানা পোক্ত করতে খাজনা দিতে ভূমি কার্যালয়ে যান। তখন জন্ম তারিখের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।</p> <p>জমির মালিক শ্যামলী আকতার ও ফজলুর রহমান জানান, তিন ভাই মিলে তাদের কাছে জমি বিক্রি করেছেন। এখন বলছেন জমি নাকি ওদের।</p> <p>উদয়পুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, নথি অনুযায়ী শ্যামলী আকতার ও শিউলি এবং ফজলুর রহমানের নামে ওই জমি থেকে এক একর ১১ শতাংশ জমি নামজারি হয়েছে। তারাই জমির বৈধ মালিক। </p> <p>বিক্রির পর দখল কেন জানতে চাইলে তানজির আহমেদ সাকিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বলার কিছুই নেই।’</p> <p> </p> <p> </p>