সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় ১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয় স্কুল অব ফিউচার ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব (বর্তমান নাম আইসিটিডি)। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প থেকে আরো পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের উপকরণ সরবরাহের ফলে শুরুতেই এসব ডিজিটাল ল্যাব মুখ থুবড়ে পড়েছে। অথচ এসব ল্যাব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন করে ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তাঁরা সরকারিভাবে মাসিক বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইটি বিশেষজ্ঞ বলেন, এসব ল্যাব স্থাপনে গড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সে অর্থে তাড়াশ উপজেলায় মোট ১৮টি ডিজিটাল ল্যাবে ৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটি সিন্ডিকেট পুরনো সংস্করণের হার্ডওয়্যার ও ফার্নিচার সরবরাহ করায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
তারা মানহীন পণ্য সরবরাহ করে এসব ল্যাব থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশির ভাগ ডিজিটাল ল্যাবই অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপন করা স্কুল অব ফিউচার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম বলেন, অপারেটর না থাকায় কার্যত স্কুল অব ফিউচারের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগে বারবার চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি।
নওগাঁ জিন্দানী ডিগ্রি কলেজে স্থাপিত ডিজিটাল ল্যাবে ৩০টি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ ল্যাবের অন্যান্য ডিজিটাল সামগ্রী সম্পূর্ণই অচল। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. বেলাল হোসেন আনছারী ‘নিম্নমানের ডিজিটাল সরঞ্জামাদি’কে দায়ী করেছেন।
গুল্টা বাজার শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রি কলেজের ল্যাবটির দশা আরো করুণ। এ প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপগুলো নষ্ট। পাশাপাশি পাঁচ থেকে সাতটি কম্পিউটারের কোনো হদিস নেই।
তাড়াশ উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা মো. আবু রায়হান বলেন, ‘আমার অফিস থেকে বিভিন্ন ল্যাব পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।’ এ কর্মকর্তা আরো বলেন, দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করে বিশেষজ্ঞ দ্বারা ল্যাবগুলো নিয়মিত সার্ভিস করা না গেলে, শিক্ষার্থীদের সরকারের আইসিটি শিক্ষা কোনোভাবেই দেওয়া সম্ভব হবে না।