<p>ইউরোপ-আমেরিকায় প্রকৃতির কোলে গ্রীষ্মের অবকাশ যাপন খুবই জনপ্রিয়। শীতপ্রধান দেশে নিজের মতো করে নিরিবিলিতে ছুটি কাটানোর অন্যতম অনুষঙ্গ ক্যাম্পিং তাঁবু। আর শীতের দেশে ক্যাম্পিং তাঁবু সরঞ্জাম রপ্তানি করে বাংলাদেশ গত অর্থবছরে আয় করেছে ৪২ কোটি আট লাখ মার্কিন ডলার বা তিন হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ জানুয়ারি মাস পর্যন্ত রপ্তানির যে চিত্র তাতে চলতি বছরে তাঁবু সরঞ্জাম রপ্তানি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।</p> <p><img alt="" src="http://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/ckfinder/innerfiles/images/Print Version Online/print /2022/03. March/13-03-2022/13-3-2022-p14-1a.jpg" style="border-style:solid; border-width:1px; float:left; height:230px; margin-left:10px; margin-right:10px; width:250px" />এই তাঁবু রপ্তানির অর্ধেকই গেছে এইচকেডি গ্রুপের কারখানা থেকে। গত অর্থবছরে এইচকেডি গ্রুপের আটটি কারখানা থেকে ২০ কোটি ডলার বা এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার বিশ্বমানের তাঁবু সরঞ্জাম রপ্তানি হয়েছে। শুধু তাঁবু রপ্তানিতে বিশ্ববাজারের ৪০ শতাংশের বেশি এইচকেডির দখলে বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। বিশ্বে তাঁবু রপ্তানির শীর্ষস্থানটি তাই এইচকেডির দখলে।</p> <p>বিশ্বখ্যাত বাজার গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইমার্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিশ্বে ক্যাম্পিং তাঁবু সরঞ্জামের বাজার ছিল ২৬৫ কোটি ডলারের। আগামী ২০২৭ সালে বাজারটি ৩৮৭ কোটি ডলারে উন্নীত হতে পারে বলে তাঁরা ধারণা করছেন। এ সময় প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬.৮৭ শতাংশ। অর্থবছরের হিসাবে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে তাঁবু রপ্তানি হয়েছে ৪২ কোটি আট লাখ ডলার। এর মধ্যে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ডলারের তাঁবু গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, বেলজিয়াম, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়ে, রাশিয়া প্রভৃতি দেশেও তাঁবু রপ্তানি হচ্ছে।</p> <p>বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের হিস্যা আরো বাড়ানোর সুযোগ আছে বলে মনে করেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। বিশ্ববাজারে তাঁবুর প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ পূর্বাভাস করা হলেও বাংলাদেশে গত দুই বছরে তাঁবু রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৪০ শতাংশের বেশি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তাঁবুর বিশ্ববাজারে নিজেদের অবস্থান ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁবু সরঞ্জাম বলতে তাঁবু ছাড়াও গাজাবো, ক্যাম্পিং চেয়ার, তাঁবুর অভ্যন্তরীণ আসবাব, তাঁবুর আউটডোর গার্মেন্ট। এর মধ্যে গাজাবো মূলত ফ্যামিলি তাঁবু। যেখানে এক তাঁবুতেই ড্রয়িং, লিবিং রুমসহ আট থেকে ১০ থাকতে পারে। বাংলাদেশের তাঁবু কম্পানিগুলো মূলত ইপিজেডকেন্দ্রিক। বেপজা সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম ও কর্ণফুলী ইপিজেডে এই মুহূর্তে ১৪টি তাঁবু কম্পানি উৎপাদনে আছে। এ ছাড়া আরো একটি বাস্তবায়নাধীন। এইচকেডি গ্রুপ, ক্যাম্পভেলি গ্লোবাল, ক্যামপেক্স (বিডি), ইউসেবিও স্পোর্টিং (বিডি), জেসিনহা আউটডোর প্রভৃতি ইপিজেডের শীর্ষস্থানীয় তাঁবু রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার মালিকানাধীন এইচকেডি গ্রুপ তো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তাঁবু রপ্তানিকারক। ইপিজেডের তাঁবু কম্পানিগুলোতে এ পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ এসেছে ১৭ কোটি ১৭ লাখ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থান হয়েছে ২০ হাজার ৭৭৩ জনের।</p> <p>বেপজা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৪২ কোটি আট লাখ মার্কিন ডলার বা তিন হাজার ৬৮৫ কোটি টাকার তাঁবু সরঞ্জাম রপ্তানি হয়েছে, যা আগে অর্থবছরের (২৯ কোটি ১৩ লাখ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি। তবে জুলাই থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত রপ্তানির যে পূর্বাভাস মিলেছে তাতে চলতি অর্থবছরে তাঁবুু সরঞ্জাম রপ্তানি সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। জানুয়ারি পর্যন্ত অর্থবছরের সাত মাসে ৩০ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলারের তাঁবু সরঞ্জাম রপ্তানি হয়েছে ইপিজেড থেকে।</p>