<p><strong>দেশে ফিরেই ক্রিকেট অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায়। কী কী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন?</strong></p> <p>এবারের বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর ফাঁকে অনুষ্ঠান করার স্বত্ব কেবল টফির আছে। তো এখানেই তিনটি শো উপস্থাপনা করছি। এগুলো হলো—ম্যাচ শুরুর আগে ‘ক্রিক ক্যাফে’, ম্যাচের বিরতিতে ‘ফ্রি হিট’ এবং ম্যাচের শেষে ‘ক্যাচ দ্য ম্যাচ’। সর্বশেষ ২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শো করেছিলাম, টি-স্পোর্টসে।</p> <p> </p> <p><strong>চেনা ভুবনে ফিরে কেমন লাগছে?</strong></p> <p>অবশ্যই ভালো লাগছে। যদিও ভালো লাগা বললে খুব সাধারণ হয়ে যায়। ক্রিকেট মানেই মারিয়া, এটা তো প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এত বছর পর ফিরে আসা, মানুষের ভালোবাসা—সব মিলিয়ে একটা ইউফোরিক অনুভূতি বলা যায়। গত দুই বছরে আমার পুরো সময়টা বাচ্চাকে দিয়েছি। উপস্থাপনা দূর, খেলা দেখার সময়টুকুও সেভাবে হয়ে ওঠেনি। চিরচেনা জায়গায় ফিরে এসে হঠাৎ যেন দেজা ভ্যু হয়ে যাচ্ছে!</p> <p> </p> <p><strong>ক্রিকেটের অনুষ্ঠানই বেশি সঞ্চালনা করেছেন। নিজের ভালো লাগা থেকেই, নাকি দর্শক ও প্রতিষ্ঠানের চাহিদার কারণে?</strong></p> <p>নিজের পছন্দ বলেই বেশি করেছি। শুধু উপস্থাপনা নয়, শোবিজের যেকোনো কাজেই যখন কেউ পরিচিতি পায়, তখন তার কাছে নানা রকম কাজের প্রস্তাব আসে। তবে আমি সব সময় খুব বাছাই করে হাতে গোনা কাজ করেছি। গড়পড়তা কিছু করতে চাইনি। আগে যখন শোর প্রস্তাব আসত, আমি শিডিউলে দেখতাম ওই সময়ে বাংলাদেশের কোনো খেলা আছে কি না। যদি থাকত, তাহলে ওই সময়ে অন্য কোনো কাজ নিতাম না।</p> <p> </p> <p><strong>উপস্থাপক হিসেবে দেশে খুব কম মানুষই জনপ্রিয় হয়েছেন। এই ভূমিকায় জনপ্রিয়তা পাওয়া কঠিন কেন?</strong></p> <p>এটা একটা ভালো প্রশ্ন করেছেন। কখনো ভেবে দেখিনি, জনপ্রিয়তা পাওয়া কেন কঠিন? হানিফ সংকেত, আব্দুন নূর তুষার কিংবা প্রয়াত আনিসুল হকের কথা যদি বলি, তাঁদের প্রত্যেকের একটা নিজস্বতা আছে। নিজেদের মৌলিকভাবে উপস্থাপন করেছেন তাঁরা, এ জন্য আলাদা পরিচিতি তৈরি হয়েছে। আমার ব্যাপারে বললে, খেলার বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণ, প্রতিটি ম্যাচ ও প্লেয়ারের খুঁটিনাটি বিষয়ে কথা বলায় আমার নিজস্বতা আছে। তাই হয়তো পরিচিতি এসেছে। আর আমাদের টিভিগুলোতে যেসব প্রগ্রাম হয়, তাতে খুব একটা ভিন্নতা দেখা যায় না। প্রতিটি চ্যানেলে একই ফরম্যাটে অনুষ্ঠান চলছে! যখন ভিন্ন কোনো ফরম্যাটে অনুষ্ঠান হয়, তখনই সেটা জনপ্রিয়তা পায়। আর এই ভিন্নতার মূলে অন্যতম ভূমিকা থাকে উপস্থাপকের। অনুষ্ঠান গড়পড়তা হয়ে গেলে জনপ্রিয়তা পাওয়া কঠিন।</p> <p> </p> <p><strong>ক্যারিয়ার শুরুর আগে কিংবা প্রথম পর্যায়ে কী ভেবেছিলেন, উপস্থাপনাই করবেন?</strong></p> <p>একদমই না। কখনো ভাবিনি একজন উপস্থাপক কিংবা মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হব। রেডিওতে জয়েন করা, টিভিতে আসা, সবই পরিকল্পনার বাইরে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ভাবছিলাম, পড়াশোনার পাশাপাশি কী করা যায়। পার্ট টাইম জব করার ইচ্ছা থেকেই রেডিও জকির চাকরি নেওয়া। আবার রেডিও থেকে টেলিভিশনে আসার জার্নিও একই রকম। এরপর নিজের চেষ্টায় এত দূর আসা।</p> <p> </p> <p><strong>অভিনয়ে নতুন কিছু করছেন?</strong></p> <p>আমি তো এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকি। মে মাসে দেশে এসেছি বেড়াতে। এবারের বেড়ানো একটু লম্বা [আগস্ট পর্যন্ত] হওয়ায় উপস্থাপনার কাজটি করছি। আরো কিছু কাজের ব্যাপারে কথা হচ্ছে, দেখা যাক। দর্শকের ভালো লাগার মতো ভিন্ন কিছু পেলে করব।</p> <p> </p> <p><strong>ভিনদেশে স্থায়ী হয়ে গেলেন। নিজ দেশে অতিথি হয়ে যাওয়াটা কেমন লাগে?</strong></p> <p>ব্যাপারটা খুব বেশি ভালো লাগার, এটা বলব না। নিজের পরিবার, সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকা খারাপ লাগার বটে। তবে আমার সন্তানের শিক্ষা, চিকিৎসা, বেড়ে ওঠা—এসব দিক বিবেচনা করে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।</p> <p> </p> <p><strong>মার্কিন মুলুকে সময় কাটে কিভাবে?</strong></p> <p>এখন আমার জীবন রুটিনের মধ্যে চলে এসেছে। আগে যেদিন কাজ থাকত না, অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমাতাম। রাতে জেগে থাকা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া—এসব ছিল। এখন রুটিনে চলে আসায় নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য বেড়ে গেছে। দেশে আমি নিজের প্লেট ধুয়ে পর্যন্ত খেতাম না। এখানে সব কিছু করছি এবং করতে আমার খারাপ লাগছে না।  আমার হাজব্যান্ড বাইরে কাজ করছেন, এবার গিয়ে আমিও কাজ শুরু করব। সন্তানের বয়স দুই বছর হওয়ার পরই আমার কাজে যোগ দেওয়ার প্ল্যান ছিল। সেভাবেই এগোচ্ছি।</p> <p> </p> <p><strong>আবার কবে নাগাদ মাতৃভূমিতে ফেরার সম্ভাবনা?</strong></p> <p>আপাতত এই সময়টা উপভোগ করি, আবার আসার কথা পরে ভাবা যাবে।</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>