<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্পের সঙ্গে দীর্ঘদিনের কিছু অন্যায়ও জুড়ে আছে। চা শ্রমিক থেকে শুরু করে উত্তরাঞ্চলের কৃষক, আদিবাসী থেকে সাধারণ বাঙালি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রত্যেকেই রাষ্ট্রকাঠামোর ত্রুটির শিকার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সিলেটের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা। এই নগণ্য আয় দিয়ে তাদের পরিবার চালানো অসম্ভব। অথচ পাশের বিলাসবহুল গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে তাদের উৎপাদন করা পণ্য দিয়ে এক কাপ চা বিক্রি হয় ৩৫০ টাকায়। এটিই প্রমাণ করে এ দেশে শ্রমের প্রকৃত মূল্যায়নের কত অভাব, আর বৈষম্য এখনো কত চরমে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলের গরিব কৃষকরা সারা বছর ফসল ফলিয়ে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে যথাযথ দাম পায় না। প্রচণ্ড কষ্টে নিজেদের এত শ্রমে ফলানো সবজি রাস্তায় ফেলে দিতে বাধ্য হয়। এ অবস্থায় কৃষকদের ঋণগ্রস্ত হওয়া বা চাষাবাদ ছেড়ে দেওয়া নতুন নয়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="বাংলাদেশের উন্নয়নে" height="283" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/1.january/11-01-2025/mk/kk-NEW-M-11-04a.jpg" style="float:right" width="350" />চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা বছরের পর বছর ধরে জমির অধিকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। সরকারি সূত্র মতে, এদের ৮০ শতাংশ পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। সেখানে ভূমি দখল ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম তাদের টিকে থাকার লড়াই আরো কঠিন করে তুলছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্নীতির চিত্র আরো হতাশাজনক। টিআইবির এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর দুর্নীতির কারণে দেশের জিডিপির ২ শতাংশ হারিয়ে যায়, যা হাজার হাজার কোটি টাকার সমান। এসব অর্থ যদি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতো, তাহলে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান অনেক উন্নত করা সম্ভব ছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষাব্যবস্থায়ও রয়েছে বহু সমস্যার জট। গ্রাম ও শহরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুযোগের বিস্তর পার্থক্য। গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ পায়, যেখানে শহরে এই হার ৬৫ শতাংশ। এ ছাড়া আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এখনো মুখস্থনির্ভর এবং দক্ষতা তৈরির চেয়ে সনদ অর্জনের দিকে বেশি মনোযোগী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও প্রশ্নবিদ্ধ। মানুষের প্রকৃত সমস্যা ও দুঃখ-দুর্দশার খবর তুলে ধরার বদলে চটকদার খবর, প্রপাগান্ডা ও ব্যক্তিগত স্বার্থের খবর প্রাধান্য পাচ্ছে। গণমাধ্যম যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারত, তাহলে জনগণের প্রকৃত সমস্যাগুলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাই বিপ্লব দেশের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এখনই সময় রাষ্ট্রকে মানুষের কল্যাণে গড়ে তোলার। শ্রমিক, কৃষক, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, শিক্ষার্থী</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রত্যেকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পপুলিস্ট নীতি বদলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। আর এই পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যাওয়ার সময় এখনই। </span></span></span></span></p>