আলো ছড়াচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার

এস এম জামাল
এস এম জামাল
শেয়ার
আলো ছড়াচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার প্রাঙ্গণে কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে বইপ্রেমীরা

পড়ন্ত বিকেলে বই পাঠে মগ্ন কিছু সাহিত্যপ্রেমী মানুষ। কাঠের তাকে সাজানো অনেক বই। যার যে বই খুশি নিয়ে পড়ছেন। পড়া শেষে আবার জায়গামতো রেখে চলে যাচ্ছেন।

কিছুদিন আগেও এই দৃশ্য চোখে পড়ত না। এখন এটি প্রতিদিনকার দৃশ্য। অনেক শিক্ষার্থী এবং বয়স্ক মানুষ এখানে বই পড়তে আসেন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কল্যাণপুর এলাকার প্রামাণিক মোড়ে এখন বইপ্রেমীদের ভিড় লেগেই থাকে।
সম্প্রতি এই এলাকায় বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পাঠাগারটি উদ্বোধন করেছেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠর প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। কুষ্টিয়া শহরের ছয় রাস্তার মোড়সংলগ্ন বসুন্ধরা শুভসংঘের আঞ্চলিক কার্যালয়ে আরো একটি পাঠাগার উদ্বোধন করেছেন তিনি। এখানেও বইপ্রেমী মানুষের বেশ আনাগোনা।
বিকেল হলেই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে বই পড়তে আসে। দৌলতপুরের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং কুষ্টিয়া শহরের পাঠাগার বেশ সাড়া ফেলেছে। যে https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2023/09.September/30-09-2023/2/kalerkantho-ss-1a.jpgছেলেমেয়েরা একসময় মোবাইলে গেমস খেলে সময় কাটাত, তারা এখন বই পড়ার দিকে ঝুঁকছে। বিষয়টিকে খুব আশাব্যঞ্জক মনে করছে সচেতন মহল। অনেকেই জানায়, কুষ্টিয়ার দুটি বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার আশার আলো ছড়াচ্ছে।
বই পড়তে কার না ভালো লাগে? আর সেটি যদি হয় বই পড়ার উপযুক্ত পরিবেশ কিংবা  উন্মুক্ত কোনো পাঠাগার, তবে এর থেকে খুশির খবর আর কী হতে পারে! বই পড়ুয়া মানুষ অনায়াসে পারবে সেখানে গিয়ে বই পড়তে। সর্বসাধারণের জন্য ঠিক তেমন পাঠাগার তৈরি করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। জ্ঞান অর্জনের জন্য বই পড়া বা পাঠাগারে যাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

পাঠাগার দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ার-টেবিলে বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণী বই পড়ায় মগ্ন। শেলফে সাজানো রয়েছে অনেক বই। কেউ কেউ আবার বই হাতে নিয়ে বাইরে আমগাছের নিচে চেয়ারে বসে পড়ছে। পড়ন্ত বিকেলে গাছের ছায়ায় বসে বই পড়তে বেশ ভালো লাগে বলে জানাল কয়েকজন। তাদেরই একজন রাসেল আহমেদ বলেন, বই পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। যখনই সময় পাই এখানে চলে আসি। এখানে বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। সুন্দর পরিবেশে ইচ্ছামতো বই পড়তে পারি। আরেক বইপ্রেমী সুমাইয়া খাতুন বলেন, কয়েকজন বান্ধবী মিলে আমরা প্রায়ই এখানে বই পড়তে আসি। এখানকার পরিবেশটা খুবই চমৎকার। স্থানীয় লোকজন জানায়, আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে বেশি বেশি বই পড়তে হবে। বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার মেধাবী মানুষ গড়ার কাজটিই করছে।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ রফিকুল আলম টুকু বলেন, তরুণ প্রজন্মকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে অনেক বেশি ভূমিকা রাখবে বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার। জ্ঞানচর্চার আলো যদি একবার জ্বালানো যায়, তবে সেটি কোনো দিনই নিভে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বই পড়ার অভ্যাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে হবে। সোনার মানুষ গড়তে বই পড়ার অভ্যাস অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শিক্ষার্থীদের অভিব্যক্তি

শেয়ার
শিক্ষার্থীদের অভিব্যক্তি

সুমাইয়া ইসলাম, দশম শ্রেণি, মনোহরদী সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

সব সময় শুনে আসছি, বই পড়লে জ্ঞান বাড়ে। কিন্তু পাঠ্যবইয়ের বাইরে আমাদের বই পড়ার কোনো সুযোগ ছিল না। পাঠ্যবইয়ের বাইরেও বই পড়তে চাইতাম। আমার কবিতা ভালো লাগে।

আমি আবৃত্তিও করি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা পড়তে চাইতাম, কিন্তু পাঠাগারের অভাবে সেই সুযোগ হয়নি। যখনই শুনেছি এখানে একটি পাঠাগার স্থাপন করা হবে, সেই থেকে আমার বিদ্যালয়ের স্যারদের কাছে প্রতিদিন জানতে চাইতাম, কবে তা চালু হবে। যখন এই পাঠাগারটি সত্যি স্থাপন করা হলো, তখন মনে হলো আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
পাঠাগার থেকে আমি অনেক বই পড়ব।

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/01-03-2025/2/kalerkantho-ss-6a.jpg

লামিয়া হোসাইন, অষ্টম শ্রেণি, মনোহরদী সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

আমার বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায়। বাড়ি থেকে এই পাঠাগারটি অনেক কাছে। প্রথমে আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাধ্যমে এখানে একটি পাঠাগার হবে বলে জেনেছিলাম।

এরপর বারবার খোঁজ নিচ্ছিলাম। পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকেই পাঠাগারটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতিদিন দুপুরে বিরতির সময় সহপাঠীদের নিয়ে পাঠাগারের ভেতর বইগুলো দেখেছি। আমার গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে। এখানে অনেক গল্পের বই আছে।
আমার পছন্দের সব বই পড়ব। বই পড়ার এমন সুযোগ পাব কখনো ভাবতেই পারিনি। এই পাঠাগারটি যাঁরা স্থাপন করেছেন, তাঁদের অনেক ধন্যবাদ।

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/01-03-2025/2/kalerkantho-ss-6a.jpg

মুগ্ধ রায় নীরব, অষ্টম শ্রেণি, ড. এম এ হাসান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

আমার বই পড়ার খুব আগ্রহ। পাঠ্যবইগুলো খুবই ভালো করে পড়ি। এর বাইরেও আমার জানার অনেক ইচ্ছা। আমি ইতিহাস, সাহিত্য বইগুলো পড়তে চাই, কিন্তু বই পড়ার সুযোগ ছিল না। বান্ধবীরা বই উপহার দিলে তা ওই দিনই পড়ে ফেলতাম। বাড়ির কাছে পাঠাগার পাব ভাবতেই পারিনি। যেদিন শুনেছি এখানে একটি পাঠাগার হবে, সেদিন থেকে প্রতিদিন খোঁজ নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে আমি পাঠাগারের ভেতর ঘুরে ঘুরে অনেক বই দেখে রেখেছি, সব বই পড়ব। এমন একটি পাঠাগার পেয়ে আমি অনেক খুশি।

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/01-03-2025/2/kalerkantho-ss-6a.jpg

তাসরিয়ান আফরীন, দশম শ্রেণি, মনোহরদী সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়

যে যত বেশি পড়ে, সে তত বেশি জানেএটাই শুনেছি এবং প্রমাণ পেয়েছি। পাঠ্যবইয়ের বাইরেও পাঠের সুযোগ পেলে মনের জগৎ প্রসারিত হবে। কিন্তু দু-চারটি বই ছাড়া আমার পাঠ্যবইয়ের বাইরে পড়ার সুযোগ হয়নি। তবে আমি পড়তে চাইতাম। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে এখানে পাঠাগার হওয়ার কারণে সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন সুযোগ পেলেই বই পড়ব। শুধু আমিই নই, সহপাঠীদেরও বলব বই পড়তে। আমার ভাই-বোনদেরও বই পড়তে বলব। এত কাছে একটি পাঠাগার হয়েছে, এই সুযোগটি কাজে লাগাব।

মন্তব্য

পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত মনকে আনন্দ দেয়

    গাজী শরীফ, শিক্ষক, ড. আবদুর রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খিরাটি, কাপাসিয়া, গাজীপুর
শেয়ার
পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত মনকে আনন্দ দেয়

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/01-03-2025/2/kalerkantho-ss-2a.jpgপাঠ্যপুস্তকের বিদ্যায় কখনোই জ্ঞানার্জন পূর্ণ হয় না। এ জন্য পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও বিভিন্ন বই পড়তে হয়। শরীরের জন্য যেমন খাদ্যের দরকার, তেমনি মনের জন্যও খাদ্য প্রয়োজন। এটি মেটাতে পারে পাঠাগার।

পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত মনকে আনন্দ দেয়। পাঠাগারের মাধ্যমেই মানুষ উন্নত, শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান জাতি হিসেবে গড়ে ওঠে। পাঠাগারকে শিক্ষার বাতিঘর বলা হয়। জীবনে পরিপূর্ণতার জন্য জ্ঞানের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না।
একটি সমাজের রূপরেখা বদলে দিতে পারে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার। গবেষকরা মনে করেন, মনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পাঠাগারের অবদান অনস্বীকার্য। অনেকেরই বই পড়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও টাকার অভাবে বই কিনতে পারে না। পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা তাই প্রতিটি সমাজে অনিবার্য।

হাতের নাগালে বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি ইংরেজি পড়াই। এখানে আমি কোথাও কাউকে একটি ইংরেজি পত্রিকা রাখতে দেখিনি। দেখলাম, বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগারে পাঁচটি দৈনিক পত্রিকা রাখা হয়, যার মধ্যে একটি ইংরেজি পত্রিকা। আমার মনটা আনন্দে নেচে উঠল।

আমরা যেখানটায় আছি, আশপাশের মানুষগুলোর বেশির ভাগই নিম্নমধ্যবিত্ত। তবে এই এলাকায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছে, তাদের মধ্যে বই পড়ার প্রবল আগ্রহও আছে, কিন্তু বই কিনে পড়ার সামর্থ্য নেই। ফলে তারা বই পড়তে পারছিল না।

বসুন্ধরা শুভসংঘ এগিয়ে এসেছে, এখানে একটি পাঠাগার স্থাপন করেছে। এতে শিক্ষার্থী ছাড়াও সব বয়সী মানুষ বই পড়ার সুযোগ পাবে। শুধু আমিই নই, পুরো এলাকার মানুষ খুবই আনন্দিত। এখন এখানে সকাল-বিকালে পাঠকদের ভিড় লেগেই থাকবে। কেউ পত্রিকা পড়বে, কেউ বা ধর্মীয় বই কিংবা গল্প-উপন্যাস, কেউ বা আবার ক্যারিয়ার গঠনমূলক নানা বই পড়বে। এমন সুযোগ এই এলাকার শিক্ষার্থী ও সব বয়সী মানুষকে করে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। তাদের অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

মন্তব্য

বই একটি সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে

    মো. জাকির হোসেন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
শেয়ার
বই একটি সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/01-03-2025/2/kalerkantho-ss-2a.jpgগ্রন্থাগার বা পাঠাগারের সূচনা অনেক আগে থেকেই। যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও পাঁচ হাজার বছর আগে পাঠাগার ছিল। যখন ছাপা বই ছিল না, তখনো পাঠাগার ছিল। আগে মানুষ তার সঞ্চিত জ্ঞান বিভিন্ন গাছের ডালে, পাতায়, চামড়ায় লিখে রাখত।

এগুলো কোনো বিশেষ স্থানে সংগ্রহ করে রাখা হতো। আজকের দিনে এগুলোকে বলতে পারেন পাঠাগার। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে। কারণ আপনি তো জানেন না বইগুলোতে কী বলেছে, বইয়ের মেসেজটা (বার্তা) কী।
এখানে হাজার হাজার বছরের এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম কিভাবে পরিচালিত হয়েছে, কী রকম রাষ্ট্রব্যবস্থা ছিল, কিভাবে বিজ্ঞান উন্নত হয়েছে। আপনি একটি চাকা আবিষ্কারের কথাই ধরেন, আমরা অনেকে গাড়ি দিয়ে চলি, চাকা না থাকলে গাড়ি চলা সম্ভব ছিল? চাকা আবিষ্কৃত না হলে বিমানও চলত না। বিমানকে রানওয়েতে দৌড়াতে হয়, নামতে হলেও চাকা লাগে। ঠেলাগাড়ি, রিকশা, ট্রেন, বাসতার মানে সভ্যতার বিবর্তনে বিজ্ঞানের অবদান, শিল্পসাহিত্য, সংস্কৃতির অবদানএগুলো বইয়ে লেখা আছে।
আপনাকে বই পড়তে হবে। আমরা বই কম পড়ি। দেখবেন, ভেকু (এক্সকাভেটর) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে, তা দেখার জন্য ২০ জন মানুষ দাঁড়িয়ে আছে, আনন্দ পাচ্ছে। অথচ পাঠাগারে কেউ যায় না। আমি এক বছর মাস্টার্স করার জন্য ইংল্যান্ডে ছিলাম।
কোনো এক সময় পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু লাইব্রেরি কখনো ঘুমায় না, সারা রাত জেগে থাকে। সারা রাত লাইব্রেরি খোলা থাকে। অনেকে যারা রাতে পড়াশোনা করবে, তারা লাইব্রেরিতে যায়, কেউ খাবার নিয়ে যাচ্ছে, পানি নিয়ে যাচ্ছে। কারণ দীর্ঘ সময় পড়াশোনা করলে ক্ষুধা লাগতে পারে। পড়াশোনার অভ্যাসটা আমাদের গড়তে হবে। মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, একটি সমাজকে যদি পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে চারটি জিনিস যথেষ্ট। একটি শিশু, একজন শিক্ষক, একটি কলম আর একটি বই। এই যদি আপনার থাকে, আপনি সমাজকে পরিবর্তন করতে পারবেন, রাষ্ট্র পরিবর্তন করতে পারবেন, বিশ্বব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে পারবেন। কিন্তু এটি আপনার থাকতে হবে। আপনি যদি বই না পড়েন, বইয়ের ভেতর না যান, তাহলে তো আপনি জানবেন না। আশা করি, সব শ্রেণির মানুষ পাঠাগারে আসবে। শিক্ষার্থীরাও আসবে। পাঠাগারটি আরো বর্ধিত করা যায় কি না কিংবা কম্পিউটার সার্ভিস দেওয়া যায় কি না ভেবে দেখার জন্য অনুরোধটুকু রাখব। বসুন্ধরা শুভসংঘের যে আয়োজন, তা বিস্তৃত পরিসরে সারা দেশে বেগবান হোক। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে শুভ পাঠক শ্রেণি গড়ে উঠুক।

মন্তব্য

প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাতিঘর হয়ে উঠবে পাঠাগারটি

    জুনায়েদ হোসেন লিয়ন, সদস্যসচিব, কাপাসিয়া উপজেলা যুবদল
শেয়ার
প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাতিঘর হয়ে উঠবে পাঠাগারটি

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/03.March/01-03-2025/2/kalerkantho-ss-2a.jpgবই পড়ার মাধ্যমে আনন্দ, বুদ্ধি ও সক্ষমতা অর্জিত হয়। অবসর ভরে ওঠে নির্মল আনন্দে। বইয়ের কথামালা থেকে বুদ্ধিপ্রাপ্তি হয় আর বিদ্যার সঙ্গে বিষয়বুদ্ধির সংশ্লেষে সক্ষমতা আসে। আমার বাবা আবদুল গণি বিএসসি ছিলেন কাপাসিয়া হরিমঞ্জুরী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

শিশু বয়স থেকে বাবাকে বই পড়তে দেখেছি। বাবা বাসায় নিয়মিত চারটি দৈনিক পত্রিকা রাখতেন। তাই শিশু বয়স থেকে আমিও বই আর নিয়মিত পত্রিকা পড়তাম। কোনো প্রতিবন্ধকতায় সে অভ্যাসে ছেদ পড়েনি আজও।
২০১৩ সালে রাজনৈতিক মামলায় দীর্ঘ সাড়ে চার মাস গাজীপুর জেলে ছিলাম। ওই সময় জেলখানায় নামমাত্র পাঠাগার ছিল, কয়েকটি মাত্র বই ছিল পাঠাগারে। আমি জেলখানার পাঠাগারে অনেক বই কিনে দিয়েছি, বন্ধু-সহপাঠীদের কাছ থেকেও অনেক বই সংগ্রহ করে দিয়েছিলাম। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে কাপাসিয়ার নিভৃত পল্লীতে যে পাঠাগারটি উদ্বোধন করা হলো, এটি দেখে আমি দারুণ উচ্ছ্বসিত।
শিক্ষার বাতিঘর বলা হয় পাঠাগারকে। প্রত্যন্ত এই অঞ্চলটিতে এটি একটি বাতিঘর হয়ে উঠবে। ঘরে ঘরে আলো ছড়াবে। প্রমথ চৌধুরীর মতে, লাইব্রেরি হচ্ছে এক ধরনের মনের হাসপাতাল। পাঠাগার শুধু ভালো ছাত্রই নয়, ভালো মানুষও হতে শেখায়।
পৃথিবীর বহু দেশ পাঠকের চাহিদা পূরণের জন্য গড়ে তুলেছে অগণিত গ্রন্থাগার। শিক্ষার আলোবঞ্চিত কোনো জাতি পৃথিবীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। পাঠকের আলোয় আলোকিত হোক বসুন্ধরা শুভসংঘ পাঠাগার আর সেই আলো ছড়িয়ে পড়ুক চারপাশে। অনেক অনেক শুভ কামনা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ