<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিনা মূল্যে চার মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরা গ্রুপের উপহার হিসেবে সেলাই মেশিন পেয়েছেন হবিগঞ্জের তিনটি উপজেলার দরিদ্র পরিবারের ৬০ নারী। অসচ্ছল পরিবারে একটুখানি সচ্ছলতা ফেরাতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তারা। এবার বাকি ছিল সংসারে সচ্ছলতা ফেরানোর হাতিয়ার সেলাই মেশিন। তাদের হাতে উপহার হিসেবে সম্প্রতি সেলাই মেশিন তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সংসারের চাকা সচ্ছলভাবে ঘোরানোর হাতিয়ার পেয়ে আনন্দ আর আবেগে আপ্লুত হয়েছেন দরিদ্র পরিবারের এই নারীরা। তাদের বেশির ভাগই শত বিপত্তি পেছনে ঠেলে পড়াশোনা করছে। কেউ বা নতুন সংসার পেতেছেন। তাদের ২০ জন আবার চা শ্রমিক। গত ১৪ নভেম্বর শুরু করে তিন দিনে তিনটি উপজেলার ৬০ নারীর হাতে সেলাই মেশিন তুলে দিয়েছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:center"><img alt="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/30-11-2024/2/kalerkantho-ss-1a.jpg" height="821" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/30-11-2024/2/kalerkantho-ss-1a.jpg" width="1000" /></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার চর হামুয়া সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা হোসনে আরা স্বর্ণা। স্বামী-সন্তান নিয়ে অনেক সংগ্রামের পরও লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়েন তিনি। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে তিন মাসের সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে তার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। প্রশিক্ষণ শেষে যখন তার হাতে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়, তখন আবেগে আপ্লুত স্বর্ণা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার স্বামী অটো চালান। খুব কষ্ট করে পড়ালেখা করছি। অল্প আয়ে সংসারই ঠিকমতো চলে না। এখন আমি সেলাইয়ের কাজ করে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে অনেক ভালো থাকব। একই সঙ্গে লেখাপড়াও চালিয়ে যাব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্বপ্না আক্তার নামে আরেক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন স্বামীর পাশাপাশি সংসারে অবদান রাখতে পারব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সাবিনা আক্তার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পড়াশোনা করলেও সেলাইয়ের কাজ শেখার পর মনে হয়েছে আমি অন্যদের চেয়ে আলাদা। কারণ আমি একটি ভালো কাজ শিখেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্বর্ণা, স্বপ্না আর সাবিনাদের মতো শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ২০ নারীকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘের তিন মাসব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণ ও বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে পাওয়া বিনা মূল্যের সেলাই মেশিন। জহুর চান বিবি মহিলা কলেজে এই নারীদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন শাজহালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি শাহ ফখরুজ্জামান, কলেজের প্রভাষক মো. শাহীন মিয়া, আরিফুর রহমান, গভর্নিং বডির সদস্য সার্জেন্ট শাহজাহান মিয়া (অব.), বসুন্ধরা শুভসংঘ হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি জনি আহমেদ রাজু, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসাইন রনি, নাছির হোসাইন, সৌরভ মিয়া, শুভসংঘ জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ শাখার সভাপতি সোহানা সাবরিন জারা, সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস জেমি প্রমুখ। অধ্যাপক সৈয়দ মিজবাহ উদ্দিন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের শীর্ষস্থানীয় করপোরেট হাউসই নয় শুধু, তাদের দারিদ্র্য বিমোচনের কর্মসূচিগুলো ব্যতিক্রম এবং সমাজ পরিবর্তনে অনেক কার্যকর। সেলাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দরিদ্র নারীরা শুধু স্বাবলম্বীই হবে না, তারা দেশের জিডিপিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া হবিগঞ্জ প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সদর উপজেলায় প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী ২০ নারীর হাতে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন তুলে দেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মনোহরদী সরকারি কলেজের প্রভাষক কামরুল ইসলাম, নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি শ্রীকান্ত গোপ, প্রশিক্ষক জহুরা নাজরীন খান রিনা প্রমুখ। সদর উপজেলার শহরতলির বহুলা গ্রামের শাহরীন তাসনীম ঐশি। লেখাপড়া করে বড় কিছু করার স্বপ্ন তার। ছয় ভাই-বোনের পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী তার বাবা। অনেক কষ্ট হলেও সন্তানদের বুঝতে দেন না। বাবার এই কষ্ট লাঘবে এবার অবদান রাখতে পারবে বিনা মূল্যে পাওয়া প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন। একই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের তাহমিনা আক্তার হ্যাপিও বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন পেয়ে আনন্দিত। তারা বলেন, এখন আমরা স্বপ্ন দেখতে পারব। ঘরে বসে থাকতে হবে না। সেলাইয়ের কাজ করে উপার্জন করব।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশিক্ষণের সঙ্গে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন দেওয়ায় পিছিয়ে পড়া নারীরা এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারে। শুধু প্রশিক্ষণ দিলে তার ফল ভালো হতো না। এই প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন দরিদ্র নারীদের জীবন পরিবর্তন করলে তা হবে বসুন্ধরা শুভসংঘের সার্থকতা। বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় নিপীড়িত, নির্যাতিত ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। তারা দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার। করোনাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে এই গ্রুপ যেভাবে কাজ করেছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এই প্রশিক্ষণ যারা নিয়েছে, তারা নিজেরাও স্বাবলম্বী হবে এবং পরে অন্যদেরও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাবে। তাহলেই প্রশিক্ষণটির উদ্দেশ্য সার্থক হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>