<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৪ খ্রিস্টাব্দকে পেছনে ফেলে আমরা ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ধরে অগ্রসর হচ্ছি। এর মধ্যে পুরনো বছরের অভিজ্ঞতা ও নতুন বছরের সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তা করা খুব স্বাভাবিক। গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে স্বাধীন বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর মধ্যে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারতে পালিয়ে যাওয়া একটি। এই ঘটনা দ্বারা বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে বলে মনে হয়। বাংলাদেশের রাজনীতি দেশীয় রাজনীতিবিদদের আয়ত্তের বাইরে যেতে যেতে এবার যেন অনন্তকালের জন্য তা রাজনীতিকদের আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমি সব সময় লেখা ও কথা বলার মধ্য দিয়ে বলে এসেছি যে রাষ্ট্রের রাজনীতি রাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের নেতাকর্মীদের আয়ত্তের মধ্যে রাখা উচিত। কিন্তু আমি আমার চিন্তার সমার্থক কিংবা সহযোগী একজন চিন্তাশীল সক্রিয় ব্যক্তিকেও এই বাংলাদেশে খুঁজে পাইনি। আমি শুভবুদ্ধির স্থায়ী জাগরণ ও অশুভবুদ্ধির স্থায়ী পরাজয় কামনা করছি। আমি অত্যন্ত নগণ্য সামর্থ্য নিয়ে ক্রমাগত যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি উন্নতিশীল নতুন রাজনীতি ও উন্নতিশীল রাজনৈতিক দল এবং উন্নত চরিত্রের নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্ব। এতে অখ্যাত অনেক তরুণ আমার বক্তব্যে আকৃষ্ট হয়ে আমার কাছে এসে আমাকে অনুরোধ জানিয়েছেন, আন্তরিকতার সঙ্গে বারবার অনুরোধ করেছেন, আমি যেন উদ্যোগী হয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করি। আমি তাঁদের কথায় সায় দিতে পারিনি। কারণ আমার মনে হয়েছে তেমন কাজে অগ্রসর হওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। কেউ উদ্যোগী হয়ে দল গঠনে অগ্রসর হলে আমি তাতে সহায়তা করতে পারি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="সালতামামি এবং নতুন বছরের সম্ভাবনা" height="300" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11. january/08-01-2025/0.jpg" style="float:left" width="388" />প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, অরাজনৈতিক নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দাবি ডানপন্থী, বামপন্থী, ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ বিভিন্ন মহল থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ও বিরুদ্ধশক্তির দিক থেকে ক্রমাগত উচ্চারিত হয়েছে, এখন তো মনে হয় বাংলাদেশ ঠিক সেই ধারাতেই চলছে। নতুন বছরে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ কোন পথে চলবে? কোন পথে চলা উচিত? নতুন বছর সামনে নিয়ে আমার মনে হচ্ছে, পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে যে একটি বিষয়ে দেশপ্রেমিক সবার সজাগ ও সচেতন থাকা উচিত, তা হলো ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক। মায়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশ-পঁচিশ মাইল সীমানা ছাড়া বাংলাদেশের বেশির ভাগ সীমানাজুড়েই রয়েছে ভারত। ভারতের শক্তি ও সম্পদ আর বাংলাদেশের শক্তি ও সম্পদে যে পার্থক্য বিরাজ করছে, তুলনামূলকভাবে তা-ও বিবেচনা করে দেখতে হবে। তারপর সম্পর্কের বিবেচনা। অন্যদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আত্মপ্রকাশ করে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্ররূপে। তখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠে পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের ওপর তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদী এই নীতি ও কার্যক্রম অভিহিত হয়েছে নয়া উপনিবেশবাদ বলে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিপন্থী শক্তিরূপে গড়ে ওঠে সোভিয়েত ইউনিয়ন। মস্কো প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে ওয়াশিংটনের। যুক্তরাষ্ট্র প্রচার করে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও উদার গণতন্ত্র আর সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রচার করে সমাজতন্ত্র ও কমিউনিজম। মানবজাতির কল্যাণের আদর্শরূপে মস্কো ও পিকিং থেকে প্রচারিত হয় মার্কসবাদ, লেনিনবাদ, মাও জেদং চিন্তাধারা। মস্কো থেকে এবং পিকিং থেকেও প্রচারিত হয় পশ্চিমা উদারবাদ, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও গণতন্ত্রের তুলনায় মার্কস, এঙ্গেলস, লেনিন, স্টালিন, মাও জেদংয়ের চিন্তাধারা মানবজাতির জন্য এত বেশি উত্কৃষ্ট যে গোটা পৃথিবীতে ক্রমে সব জাতি, সব মানুষ সমাজতন্ত্র ও কমিউনিজমের আদর্শকেই আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে নেবে। দুই পক্ষের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হতে থাকে গোটা মানবজাতি। ১৯৬০-এর দশকে দেখা দেয় মস্কো ও পিকিংয়ের মধ্যে তীব্র বিরোধ। ওয়াশিংটন এই বিরোধের সুযোগ নেয়। রাশিয়ার নেতৃত্বে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে দিতে এবং আদর্শকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের জনগণের মধ্যে ওই ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার কোনো দাবি, কোনো আগ্রহ, কোনো আন্দোলন ছিল না। কিছুদিন আগে গর্বাচেভের ভূমিকাকে পুতিন অভিহিত করেছেন জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতা বলে। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার জনগণ গর্বাচেভকে মনে করে জাতীয় বিশ্বাসঘাতক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গর্বাচেভকে উসকানি দিয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙে দিতে এবং রাশিয়ার উদার গণতন্ত্র প্রবর্তন করতে, গর্বাচেভ তাই করেছেন এবং এর জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ও তার সহযোগীদের দ্বারা বিরাটভা ে ব প্রশংসিত হয়েছেন। রাশিয়ার জনগণ গর্বাচেভের এই কাজকে তাদের জন্য ক্ষতিকর মনে করেছে এবং করছে। পৃথিবীর সব জাতিকে এসব বিষয় বিচার করে দেখা দরকার। আমার মূল কথাটা হলো, যুক্তরাষ্ট্র তো আধিপত্যবাদী ও যুদ্ধবাজ। সমরাস্ত্র তৈরি করা এবং বিক্রি করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্যবসা। এই ব্যবসার প্রয়োজনে এবং আধিপত্য বিস্তারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন ভূ-ভাগে যুদ্ধ বাধায় এবং যুদ্ধকে দীর্ঘস্থায়ী করে। বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের কোলে টেনে নেওয়ার জন্য এবং রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালিয়ে আসছে। বছর দশেক ধরে বাংলাদেশের ওপর সীমাহীন চাপ সৃষ্টি করে আসছে বাংলাদেশকে একান্তভাবে নিজেদের ধারায় নিয়ে নেওয়ার জন্য। আমার তো মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অভিপ্রায় অনুযায়ী কাজ করলে সমূহ ক্ষতির মধ্যে পড়বে এবং রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা হারাবে। বাংলাদেশ কি গত তিপ্পান্ন বছরের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্ররূপে গড়ে উঠেছে?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভ্যন্তরীণ দিক দিয়ে বাংলাদেশ তো গণতন্ত্রের দিকে চলছে না। রাজনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে যে বিতর্ক চলছে, তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশ ক্রমেই ধর্মের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি বিরূপতা প্রকাশ করছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীরা গণতন্ত্রকে পর্যবসিত করেছে শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনে ও রাষ্ট্র পরিচালনায়। বাংলাদেশে দরকার পশ্চিমা উদারবাদী ও নয়া উদারবাদী গণতন্ত্রের জায়গায় সর্বজনীন গণতন্ত্রের ধারা উদ্ভাবন করা ও তা অবলম্বন করে জনসাধারণকে জাগ্রত করে সর্বাঙ্গীণ আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে জনসম্পৃক্ত থেকে সামনে চলা ও উন্নতিশীল নতুন সভ্যতা সৃষ্টি করা। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষারূপে এবং বাংলাদেশকে রাষ্ট্ররূপে উন্নতিশীল রাখতে হবে। জনসাধারণকে রাষ্ট্র গঠন ও রাজনীতি বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা। স্বাধীন বাংলাদেশে বছর দশেক যেতে না যেতেই জনসাধারণকে শুধু রাজনীতিবিমুখই নয়, রাজনীতিবিরোধী করে ফেলা হয়েছে। সমস্যাটিকে বুঝতে হবে এবং এর সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। জাতীয় পর্যায়ে চলমান ভোগবাদী ও সুবিধাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির জায়গায় সর্বজনীন কল্যাণের দৃষ্টিভঙ্গি এবং উৎপাদনমুখী ও সৃষ্টিশীলতামুখী রূপে গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য সত্যাগ্রহী, অহিংস, সর্বজনীন কল্যাণের সম্প্রীতিময় দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে। বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করার জন্য সংগ্রাম চালাতে হবে। বাংলাদেশ এখন পরিচালিত হচ্ছে নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ দ্বারা। এই সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেরামত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। এটা শুভ উদ্যোগ। আমি সব সময় এটা কামনা করেছি এবং রাজনৈতিক মহল থেকে এই লক্ষ্যে উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা আশা করেছি। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনৈতিক মহল থেকে তেমন বাস্তবসম্মত উদ্যোগ দেখা দেয়নি। অনুশীল, যুগান্তর প্রভৃতি বিপ্লববাদী সংগঠনগুলো দলীয় নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারেনি, ক্রমাগত শুধু ভেঙেছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভক্ত হয়েছে। মার্কসবাদীদের মধ্যেও এই ভূ-ভাগে তাই দেখা গেছে। নেতা, দল, নেতৃত্ব ইত্যাদি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ব্যাপারে দেশের ভাবুক ও কর্মীদের মধ্যে চিন্তা ও অনুশীলন দরকার। রাজনীতিবিদরা দেশবাসী সবাইকে ক্রমাগত হতাশ করেছেন। দেশের বিচারব্যবস্থা, আইন-কানুন, বিশেষ করে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টকে গত প্রায় বিশ বছরের মধ্যে মর্যাদাহীন করে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে সারা দেশের বিবেকবান শিক্ষিত লোকদের সচেতন, সন্ধিত্সু ও প্রগতিপ্রয়াসী হওয়া একান্ত দরকার। আইন-কানুন ও বিচারব্যবস্থার আমূল সংস্কার দরকার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের গোটা শিক্ষাব্যবস্থার আমূল সংস্কার দরকার। এ নিয়ে অনেকে লিখেছেন, লিখছেন। এ নিয়ে আমিও লিখেছি। আমি চিন্তা করেছি, অনুসন্ধান করেছি সমস্যার প্রকৃতি ও মূল কারণগুলো বুঝতে। সর্বজনীন কল্যাণে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার-সাধনকে আমি অসম্ভব না হলেও দুঃসাধ্যরূপে উপলব্ধি করেছি। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিসাধন জনসম্পৃক্ত দীর্ঘ সাধনা ও সংগ্রামের ব্যাপার। বাংলাদেশেও সেই সাধনা ও সংগ্রাম দরকার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশাসন ব্যবস্থায়ও মৌলিক সংস্কার অপরিহার্য। অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সংস্কার-প্রচেষ্টার যে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, তার রূপ ও প্রকৃতি সম্পর্কে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। কাজটা তো কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের নয়; কাজটা পূর্ণমেয়াদি নির্বাচিত সরকারের। দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। বাংলাদেশের বাস্তবতায় নির্বাচন অনুষ্ঠান সহজসাধ্য ব্যাপার নয়। নির্বাচন দুঃসাধ্য হওয়ার দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সব কারণ তলিয়ে দেখা দরকার। মনস্তাত্ত্বিক ও কূটনৈতিক কারণগুলোর দিকেও পর্যাপ্ত দৃষ্টি দেওয়া দরকার। জাতীয় নেতৃত্বের পরিবর্তন ও উন্নত রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠা দরকার। জ্ঞানেই শক্তি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই কথাটা সবারই বোঝা দরকার। আধিপত্যবাদীরা, কায়েমি স্বার্থবাদীরা ও হীন স্বার্থান্বেষীরা এই শক্তিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চায় না, নিজেদের হাতে রাখতে চায়। হীরক রাজার একটি উক্তি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যে যত জানে সে তত কম মানে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এই ধারণা বিভিন্নভাবে পৃথিবীর সব জাতির শাসকদের মধ্যেই আজও আছে। বাংলাদেশের শাসকরাও এই ভাবধারার বাইরে নয়। এই রকম আরো নানা কারণ আছে, যেগুলো নিয়ে বাংলাদেশে কোনো অনুসন্ধিৎসা ও চিন্তা-ভাবনাই দেখা যায় না। আমাদের বুঝতে হবে যে কায়েমি স্বার্থবাদিতাহীন-স্বার্থান্বেষীরা, শাসকরাও তাদের মতোও অবস্থান পরিবর্তন করে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">করতে বাধ্য হয় শুধু জনমতের ও আন্দোলনের চাপে। সে জন্য পর্যায়ক্রমে সমস্যার সমাধান করে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়। নতুন বছরকে, ২০২৫ সালকে সামনে নিয়ে এই রকম এমনি অনেক চিন্তা আমাদের সবার, দেশবাসী সবার মনে নানাভাবে জাগছে। আমাদের সবারই কর্তব্য আমাদের জাতি, রাষ্ট্র ও জনজীবনকে সমৃদ্ধিমান, ন্যায়ানুগ ও উন্নতিশীল করে তোলা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনীতির গুণগত উন্নতি, মহান নেতৃত্ব সৃষ্টি, উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক দল গড়ে তোলা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। শ্রমিক-কৃষক-নিম্নমধ্যবিত্তরা সংখ্যায় অনেক বড়। তাদের শ্রমের ফলেই সবার খাওয়া-পরা, বিলাস-ব্যসন সম্ভব হয়। এই জনসাধারণের, গতরখাটা মানুষদের অধিকার ও মর্যাদাকে যথোচিত গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা ও দুর্দশার মধ্যে রেখে যে রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত রাখা হচ্ছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তা পরিবর্তন করতে হবে। পর্যায়ক্রমে ন্যায় বাড়াতে ও অন্যায় দমাতে হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় সমস্যাবলির সমাধান ও উন্নয়নের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমস্যাবলির সমাধান ও উন্নতি সাধনের জন্যও যথোচিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। হতাশা ও নিষ্ক্রিয়তা থেকে মুক্ত হয়ে সাধনা ও সংগ্রামের মনোবল অর্জন করতে হবে। নতুন বছর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বাংলাদেশের এবং গোটা পৃথিবীর জন্য কল্যাণকর হোক। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সভাপতি, বাংলা একাডেমি</span></span></span></span></p>