<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৪-এর জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে কোনো বিপ্লব ঘটেনি, বিপ্লব সহজ ব্যাপার নয়, যখন-তখন ঘটে না। আর যে বিপ্লবের আশায় আমরা আছি, তা হচ্ছে সামাজিক বিপ্লব। সেটি ঘটেনি। রাজনৈতিক বিপ্লব ঘটেছে, এই সীমিত অর্থে যে চরম ফ্যাসিবাদী একটি সরকার বিদায় নিয়েছে, কিন্তু রাষ্ট্রের অন্তর্গত চরিত্র ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছে। সাতচল্লিশে সেটি বদলায়নি, বদলায়নি এমনকি একাত্তরেও। বদলাবে তখনই, যখন দেখা যাবে সমাজে মানুষে-মানুষে অধিকার ও সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটেছে এবং সর্বস্তরে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিসম্পন্ন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তেমন সমাজ যত দিন না পাওয়া যাচ্ছে, তত দিন বুঝে নিতে হবে এবং টেরও পাওয়া যাবে যে রাষ্ট্র সেই আগের মতোই পুঁজিবাদী-আমলাতান্ত্রিক রয়ে গেছে। আগের শাসকরা ছিল বিদেশি, বাংলাদেশের যে শাসকরা শাসন করে যাচ্ছে, তারা চেহারায় স্বদেশি বটে, কিন্তু স্বভাবে তারা আগের শাসকদের মতোই। তারাও লুণ্ঠন করে এবং সম্পদ পাচার করে; আগের ঔপনিবেশিক শাসকরা যেমনটি করত। তাদের নির্ভরতাও আমলাতন্ত্রের ওপরই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="অভ্যুত্থান ঘটেছে, বিপ্লব নয়" height="299" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11. january/13-01-2025/1.jpg" style="float:left" width="399" />দেশের উন্নতি? অবশ্যই হয়েছে, কিন্তু সেটি কতিপয়ের, সব মিলিয়ে হয়তো শতকরা ২০ ভাগ তাতে উপকৃত হয়েছে, বঞ্চিত হয়েছে ৮০ জন। অথচ যে উন্নতিটা ঘটল, সেটা কিন্তু ওই ৮০ জনের শ্রমের জন্যই সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সে উন্নতির ফসল তাদের কাছে পৌঁছে সামান্য পরিমাণেই। বেশির ভাগ আত্মসাৎ করেছে সুবিধাভোগীরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফ্যাসিবাদী সরকাররা যা করে থাকে, আমাদের বিগত সরকারও তেমনটিই করেছে। কিছু মানুষকে টেনে নিয়েছে কাছে; লুণ্ঠনের সুযোগ করে দিয়ে এবং প্রলোভন দেখিয়ে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নীতি ছিল, দুই হাতে টাকা কামাও। তিনি সেটি করেছেন; তাঁর কাছের লোকেরা এবং ব্যবসায়ী ও আমলারাও ওই কাজ সমান তালে চালিয়ে গেছেন। তাঁদের ভয়ডর বলতে কিছু ছিল না। পুলিশের জন্য দেশটি ছিল উন্মুক্ত; রাজত্ব ছিল তাদেরই, তারা ঘুষ খেয়েছে, জবরদখল করেছে, বাণিজ্য করেছে গ্রেপ্তারের। পুলিশের বড় দায়িত্ব ছিল বিরোধীদের দমন করা। সে কাজ তারা কেমন দক্ষতার সঙ্গে করতে পারে তার প্রমাণ রেখে গেছে অভ্যুত্থানের আগমুহূর্তে। জনগণের টাকায় লালিত-পালিত একটি বাহিনী নির্বিচারে এভাবে দেশের মানুষের বুকে গুলি চালাতে পারে, সেটি ছিল কল্পনাতীত। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদাররা গণহত্যা চালিয়েছে। তারা ছিল বিদেশি, পূর্ববঙ্গের মানুষকে তারা শত্রু ভাবতেই অভ্যস্ত ছিল। এবার বাংলাদেশি পুলিশ যা করল, সেটিও গণহত্যাই, যদিও এর পেছনে জাতিগত বিদ্বেষ ছিল না, ছিল কর্তৃপক্ষের হুকুম এবং বাহিনীটির স্বোপার্জিত নিপীড়নকারী চরিত্র। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভানভণিতার আড়াল-আবডাল ভেদ করে বঞ্চনা ও নিরাপত্তাহীনতার সত্যগুলো এখন বের হয়ে আসছে। সেগুলো পীড়িত মানুষের আর্তনাদের মতোই চাপা পড়ে থাকত যদি না দুর্দমনীয় প্রধানমন্ত্রী টের পেতেন যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুলিশ বাহিনীর মতো নির্বিচারে অস্ত্র প্রয়োগে রাজি নন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই দৃষ্টান্তও যে ক্ষমতায় টিকে থাকার এবং রাষ্ট্রকে নিজেদের পারিবারিক সম্পত্তিতে পরিণত করার জন্য একজন প্রধানমন্ত্রী কতটা নির্মম হতে পারেন এবং তাঁর অনুসরণে দেশের সম্পদ কিভাবে লুণ্ঠিত ও বিদেশে পাচার হতে পারে, কেমন করে নিজের হাতে তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠানকে দুমড়েমুচড়ে ভেঙেচুরে ফেলতে পারেন এবং মাত্র কয়েক দিনে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে ও হাজার পঁচিশেক মানুষকে আহত করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী তো কখনো কোনো উত্তেজনা প্রকাশ করেননি, ধীরস্থির ও ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করেছেন। তবে ক্ষমতা ও সম্পদের লিপ্সা তাঁকে অমানবিক করে তুলেছিল। তিনি কি তাঁর পিতা-মাতা ও নিকট আত্মীয়দের হত্যার প্রতিশোধ নিচ্ছিলেন? কিন্তু কার ওপরে প্রতিশোধ? দেশের ওপর? দেশ তো ভূমি নয়, দেশ তো দেশের মানুষ। রক্ত ও অশ্রু তো মানুষেরই ঝরে, মাটির নয়। মাটি কেবল দেখে এবং সিক্ত হয়। একাত্তরে পাকিস্তানিরা বলত তারা মাটি চায়, মানুষ চায় না। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো হানাদার ছিলেন না। ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ। ওই যুদ্ধের সন্তান বলেই দাবি করতেন; দাবিটি যে মিথ্যা ছিল, তা-ও তো নয়। তাহলে? নাকি আমরা বলব ক্ষমতা ও অর্থের লিপ্সা এবং প্রতিহিংসাপরায়ণতা একত্র মিশেছিল তাঁর মধ্যে? এবং তিনি আশা করেছিলেন তাঁর পতন কখনো ঘটবে না। কারণ তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী, আদালত, আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী, দলীয় ক্যাডার এবং বিদেশি শক্তির সহায়তা দ্বারা সুরক্ষিত ছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তো তিনি এবং তাঁর সঙ্গীদের কেউ কেউ চলে গেছেন, কিন্তু রাষ্ট্র ও সমাজের ভেতরে যে ফ্যাসিবাদী উপাদানগুলো রয়ে গেছে, তাদের কি তিনি সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন? না, সেটি তিনি করেননি। সেগুলোকে তিনি রেখে গেছেন আমাদের দুর্ভোগ বৃদ্ধির জন্য। উপাদানগুলো পুঁজিবাদী উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। ওই উন্নয়ন যত ঘটেছে, তত বেড়েছে মানুষে-মানুষে বৈষম্য, বিচ্ছিন্নতা; নিম্নগামী হয়েছে দেশপ্রেম। এবং এসব হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে অনিবার্যভাবে ঘটেছে এবং ঘটতে থাকবে ফ্যাসিবাদের পীড়ন। পুঁজিবাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সংকট বাড়বে, ফলে পীড়নও বাড়বে এবং মানুষ বিদ্রোহ করতে চাইবে। বৃদ্ধি পাবে অরাজকতা ও প্রকৃতির বিরূপতা। সভ্যতা নয়, সংকটে পড়বে মানুষের মনুষ্যত্বই, অস্তিত্বও। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান আরো একটি সত্যকে সামনে নিয়ে এসেছে; সেটি তারুণ্যের শক্তি। এমনিতেই তারুণ্য যা করতে পারে, বার্ধক্য তা করতে অপারগ। আর আমাদের দেশের ক্ষেত্রে বয়স্করা যা দেওয়ার এরই মধ্যে দিয়ে ফেলেছেন, তরুণরাই যদি পারে তবে নতুন কিছু দেবে। কারণ তরুণদের আছে সাহস ও সংবেদনশীলতা; বয়স বাড়লে যা বাড়ে না, বরং উল্টো পথ ধরে। আর রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রধান যে ধারা, সেটি বুর্জোয়াদের। ধর্মনিরপেক্ষ এবং ধর্ম নিয়ে কারবারি, উভয় ধারাই আসলে বুর্জোয়া ধারা। তাদের লক্ষ্য সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানাকে সুরক্ষা দেওয়া এবং নিজেদের সুবিধার জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। বুর্জোয়াদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তরুণরা সমাজে পরিবর্তন চায় এবং তারা সাহস করে রুখে দাঁড়ায়। আমাদের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ছিল অনেকটা অভ্যুত্থানের মতোই, তার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন শহীদ আবুল বরকত; ওই অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায়ই উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ঘটে, যার প্রতীক ছিলেন শহীদ আসাদুজ্জামান, যিনি কর্মী ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার; তাঁরা দুজনই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এবারের অভ্যুত্থানের প্রতীক আবু সাঈদও ছাত্রই তবে ঢাকার নন, রংপুরের। পাকিস্তানি শাসকরাও পুঁজিবাদী ঘরানারই ছিল, কিন্তু বাংলাদেশের যে সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান ঘটল, সেটি পুঁজিবাদীই শুধু নয়, পরিণত হয়েছিল পুরোপুরি ফ্যাসিবাদীতে। আগের দুটি অভ্যুত্থানের সঙ্গে বর্তমান অভ্যুত্থানের চরিত্রেও একটি পার্থক্য রয়েছে। সেটি হলো এই যে এটিতে জনতার অংশগ্রহণ ছিল আগের তুলনায় অনেক বেশি। আন্দোলন শুরুতে ছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য। এতে সরকার পতনের তো নয়ই, এমনকি কোটা ব্যবস্থার বাতিলের দাবিও ছিল না। সীমিত লক্ষ্যের সেই আন্দোলন যে এমন একটি অভ্যুত্থানে পরিণত হলো, তার কারণ একাধিক। তবে প্রথম কারণ কিন্তু সরকারের নৃশংসতা। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসকরা সীমা মানে না, কেবলই সীমানা ভাঙতে থাকে। আর ওই ভাঙার মধ্য দিয়েই তাদের পতন ঘটে। হিটলার আত্মহত্যা করেন, মুসোলিনি তাঁর দেশেরই বিপ্লবী সমাজতন্ত্রীদের হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারান এবং আমাদের শেখ হাসিনা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে চলে গিয়ে প্রাণ বাঁচান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের নাতি-পুতি বলে অপমান করেছিলেন। এতে তরুণরা ভীষণ অপমানিত বোধ করল, মধ্যরাতেই তারা বেরিয়ে এলো প্রতিবাদ জানাতে। এর পরে এলো দ্বিতীয় আঘাত। প্রধানমন্ত্রীর প্রধান মুখপাত্র বললেন, ওই নাতি-পুতিদের মোকাবেলা করতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। ছাত্রলীগের সভাপতি মওকা খুঁজছিলেন; তিনি ঘোষণা করলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা প্রস্তুত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তাঁর বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল আন্দোলনকারীদের ওপর। মেয়েরাও রেহাই পেল না। এরপর এলো পুলিশ। তারপর র‌্যাব ও বিজিবি; সর্বশেষ আর্মিকেও টহল দিতে দেখা গেল। ফল দাঁড়াল উল্টো। ছেলেমেয়েরা তো পিছু হটলই না, সাধারণ মানুষও এলো এগিয়ে। তাদের ভেতর ক্ষোভ ছিল, লাঞ্ছনার ও অপমানের। সেটি প্রকাশের নিয়মতান্ত্রিক পথ পাওয়া যেত নির্বাচন হলে। ওই পথ অবরুদ্ধ হাওয়ায় ক্ষোভটি প্রকাশ পেল এই অভ্যুত্থানে। মানুষের সহানুভূতি ছিল তরুণদের প্রতি, যেমনটি মা-বাবার থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের এগিয়ে যেতে দেখে অন্য তরুণরাও চলে এলো। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর ছেলেও দেখা গেল যোগ দিচ্ছে মিছিলে। তাদের বুকের ভেতর ঝড় উঠেছে, তারা বুক পেতে দিয়েছে। অনিবার্য হয়ে পড়ল অভ্যুত্থান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন থাকে, রাজনীতিকরা যা করতে পারলেন না, তরুণরা সেটি কেমন করে ঘটিয়ে ফেলল? জবাব হচ্ছে, প্রথমত তরুণদের ছিল সাহস। পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য, যিনি তাঁর ওপরওয়ালাকে বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গুলি করি, মরে একটা বাকি ডি যায় না স্যার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, সেই অভিজ্ঞতাটা নিশ্চয়ই অন্য বন্দুকধারীদেরও। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তরুণদের নিজস্ব সাহসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তাদের প্রতি জনগণের সহানুভূতি ও আস্থা। বড় বড় রাজনৈতিক নেতাকে মানুষ দেখেছে, তাঁদের ওপর আস্থা তো নয়ই, অনাস্থাই জমে উঠেছে ভেতরে ভেতরে। বিএনপির ডাকে যে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসত, তার কারণ ওই দলের প্রতি যতটা না সমর্থন, তার চেয়ে অধিক আওয়ামী লীগের শাসনে অসন্তোষ। বিএনপি নেতারা যখন গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের আন্দোলন তখন স্তিমিত হয়ে পড়েছে। কারণ সাধারণ মানুষের আস্থার ঘাটতি এবং দলের নিজের সাংগঠনিক দুর্বলতা। রাজনীতিকরা আগেও পারেননি, এবারও যে পারলেন না। এ থেকে তাঁদের অন্তত আত্মানুসন্ধানের সুযোগটা তো আছে। তবে আমরা নিশ্চিত এ সুযোগ তাঁরা গ্রহণ করবেন না। মূল কারণ তাঁদের শ্রেণিগত অবস্থানে; তাঁরা হয় বুর্জোয়া, নয়তো বুর্জোয়া হতে অভিলাষী। রাষ্ট্র ও সামাজিক ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন তাঁরা ঘটতে দেবেন না, পরিবর্তন যাতে না ঘটে সে লক্ষ্যেই কাজ করেছেন এবং করতে থাকবেন। </span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p>