মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের একজনের কাছে ৬৫ ভরি আর অন্যজনের কাছে আছে ৪০ ভরি স্বর্ণ আছে। প্রতি ভরি স্বর্ণের মূল্য যথাক্রমে একজন দেখিয়েছেন ছয় হাজার অন্যজন ১০ হাজার টাকা। একজন চারটি আর অন্যজন তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
আয় রোজগার তেমন নেই, ঘরে ‘স্বর্ণ খনি’
- আছে ব্যাংকঋণ, মামলা
তানিয়া লাবণ্য, মেহেরপুর

স্থানীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা দুজনই দলের সমর্থন পেয়েছেন।
হলফনামা থেকে জানা যায়, গোলাম রসুল পেশায় ব্যবসায়ী। জেলা শিল্প ও বণিক সমিতি এবং জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। ২০০০ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
গোলাম রসুল তাঁর হলফনামায় আয় উল্লেখ করেছেন কৃষি খাত থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ৩০ লাখ পাঁচ হাজার ৪৯২ টাকা। স্ত্রীর বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ২০ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ৩৬ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে প্রার্থীর নিজের আছে ৭০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে চার হাজার ৩৩২ টাকা, তিনটি বাস ও ট্রাকের মূল্য দেখানো হয়েছে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ১০০ টাকা। নিজের পাঁচ ভরিসহ স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের মোট স্বর্ণ দেখানো হয়েছে ৬৫ ভরি। স্বর্ণের মূল্য ভরিপ্রতি ছয় হাজার টাকা।
গোলাম রসুল আরো উল্লেখ করেছেন, বিস্ফোরক আইনে দুটিসহ চারটি মামলায় আদালত থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন।
অন্যদিকে অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তিনি মেহেরপুর জজকোর্টে আইন পেশার সঙ্গে জড়িত। তাঁর বাবা প্রয়াত আহম্মদ আলী ও বড় ভাই মাসুদ অরুণ মেহেরপুর-১ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত মেহেরপুর জেলা জজকোর্টে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ছিলেন।
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মারুফ আহমেদ বিজন হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তাঁর বার্ষিক আয় আইন পেশা থেকে তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ৫০ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের আয় কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার, ব্যবসা থেকে দুই লাখ টাকা। নিজের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৬০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৭৪ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে নগদ ৫০ হাজার, ব্যাংকে ৩৬ হাজার টাকা আছে। ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মাইক্রোবাস আছে। প্রার্থী নিজের ২০ ভরি স্বর্ণ এবং স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণের মূল্য দেখিয়েছেন চার লাখ টাকা। গৃহসামগ্রী ও আসবাব রয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকার।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে ঢাকার পূর্বাচলে পাঁচ কাঠার প্লট, যার মূল্য ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। মেহেরপুরে রয়েছে ৮৯ শতক অকৃষিজমি, যার মূল্য ছয় লাখ ১৬ হাজার ৪০৫ টাকা। এ ছাড়া নির্ভরশীলদের নামে মেহেরপুর আছে এক একর দুই শতক অকৃষিজমি, যার মূল্য দেখানো হয়েছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার ৮৬৫ টাকা। নিজ নামে শহরে এক হাজার ৫০০ বর্গফুটের পাকা বাড়ি আছে, যার মূল্য ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৯৬৪ টাকা। দায়-দেনা দেখানো হয়েছে পূবালী ব্যাংক মেহেরপুর শাখায় ছয় লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা এবং ইসলামী ব্যাংক মেহেরপুর শাখায় আট লাখ ১৭ হাজার ৬১৮ টাকা। ফৌজদারি আদালতে দায়ের করা অতীতের তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বিজন।