<p>বৃষ্টিহীন বর্ষায় প্রচণ্ড রোদ আর তীব্র গরমে কুমিল্লায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। বছরের উষ্ণতম এ দিনগুলো তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় নাভিশ্বাস উঠছে কুমিল্লাবাসীর। শহর ছাড়িয়ে গ্রাম-স্বস্তি মিলছে না কোথাও। সবখানেই কাহিল অবস্থা। গরমে-লোডশেডিংয়ে যেন ‘প্রাণ যায়-যায়।’</p> <p>কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই গরমের মধ্যে প্রতিদিনই লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। রাত-দিন অনবরত লোডশেডিংয়ের ফলে জীবনযাপন হয়ে উঠেছে অসহনীয় কষ্টের। প্রচণ্ড রোদের কারণে মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বের হলেও শান্তি মিলছে না ঘরেও। কারণ একটাই-বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়া। আর বিষয়টি এখন নিত্যনৈমত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে কুমিল্লায়। মধ্যরাত কিংবা ভোরেও বিদ্যুৎহীনতার যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ঘটছে ছন্দপতন।</p> <p>শহর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অবস্থা আরো ভয়াবহ। দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গড়ে ৬/৭ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পায় না কুমিল্লার ১৬ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজন। ফলে প্রাকৃতিক বাসাতের ওপরই নির্ভর করছে তাদের শান্তি ও স্বস্তি। কিন্তু এবার প্রকৃতিও শুরু করেছে বিরূপ আচরণ। মাঝ বর্ষায় এসেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না। আর বৃষ্টিহীন দিনে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় গরমও অনুভূত হয়েছে তাপমাত্রার চেয়েও বেশি। দিন-রাত অতিবাহিত হচ্ছে দুর্বিসহতার মধ্যে।</p> <p>এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার প্রধান প্রকৌশলী বলছেন- ‘মাঝে মাঝে লোডশেডিং হলেও তা অতিরিক্ত মাত্রার নয়। বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার বিষয়টি সিরিয়াস কিছু না।’ তার দাবি, ‘মাঝেমধ্যে কারিগরি ত্রুটির কারণে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ থাকে। এটি স্থানীয়ভাবে কোনো সিস্টেমের ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে। এসব সমস্যা সমাধানেও কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) আওতায় কুমিল্লায় সোয়া লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহক ঘিরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী কয়েক লাখ মানুষ প্রতিদিনই লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে পড়ছেন। কুমিল্লা শহর ও শহরতলী নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোডের্র বিক্রয় ও বিতরণের তিনটি বিভাগ কাজ করে থাকে। তার মধ্যে ১ নম্বর বিভাগে আওতায় রয়েছে কুমিল্লা শহরের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চল। শহরের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা বিক্রয় ও বিতরণের ২ নম্বর বিভাগের আওতাধীন। আর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ৩ নম্বরের আওতায় রয়েছে শহরের দক্ষিণাঞ্চলের টমসমব্রীজ থেকে জাঙ্গালিয়া, পদুয়ারবাজার, চৌয়ারা বাজার, সোয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি এলাকা। বিউবো কুমিল্লার ওই তিনটি বিভাগে গ্রাহকের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এ ছাড়াও লাকসাম, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রামেও রয়েছে বিউবোর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কার্যক্রম। </p> <p>এদিকে কুমিল্লার অন্যান্য উপজেলার গ্রামীণ জনপদে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) কাজ করছে। গ্রামের যেসব এলাকা পল্লী বিদ্যুতের আওতায় সেখানে অত্যধিক লোডশেডিংয়ের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। </p>