<p>মঙ্গলবার দুপুরে দু’পক্ষকে নতুন করে জমি নিয়ে বিরোধে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়ে ফিরে আসে পুলিশ। তবে পুলিশ যেতে না যেতেই একপক্ষ আরেকপক্ষের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হয় মো. সবুজ মিয়া (৫৫) নামে এক কৃষক। গুরুতর আহত হয় তার আপন ছোট ভাই হারিছ উদ্দিন (৪৫)।</p> <p>কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের বাঘাইছড়া গ্রামে মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হতাহতরা উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বাঘাইছড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। ঈদের ঠিক আগে স্বজনদের হাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকাবাসী হতবাক হয়ে পড়েছে।</p> <p>পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সবুজ মিয়াদের সঙ্গে তার চাচা আব্দুল গফুরের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধে গফুরের পক্ষ নেন অন্য চাচাতো ভাইয়েরা। ৮১ শতাংশ জমির বিরোধ নিয়ে আদালতে মামলা ছিল, এ নিয়ে বিভিন্ন সময় দরবার সালিসও হয়। কিন্তু তাদের বিরোধ কমেনি। এর জের ধরেই এ হামলার ঘটনা ঘটে।</p> <p>পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, দু’পক্ষ একই বংশের লোকজন। জমি নিয়ে তাদের বিরোধ চরমে ছিল। কিছুদিন পর পর তাদের মধ্যে ঝামেলা হতো। পুলিশও বিষয়টি অবগত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে হোসেনপুর থানা পুলিশ এলাকায় গিয়ে দু’পক্ষকে নতুন করে বিরোধে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়ে আসে। তবে পুলিশ ফিরে যাওয়ার পরেই প্রতিপক্ষের লোকজন সবুজ মিয়াকে তার বাড়ির সামনে ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ভাইকে বাঁচাতে হারিছ মিয়া এগিয়ে গেলে তার ওপরও হামলা হয়। গুরুতর আহত হারিছ মিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরই হামলায় জড়িতরা বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে যায়। </p> <p>পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সবুজ মিয়া দীর্ঘদিন সৌদি আরব ছিলেন। বেশ কয়েকবছর হলে তিনি দেশে ফিরে কৃষি কাজে জড়িত হন। তার স্ত্রী ও দুটি মেয়ে রয়েছে। তারা তিন ভাই। সবার ছোট সাবিল মিয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী।</p> <p>নিহতের স্ত্রী শান্তি আক্তার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করে বলেন, বাড়ির সামনে গিয়ে ১০-১২ জন মিলে তার স্বামীকে একা পেয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। </p> <p>প্রতিবেশী আল-আমিন বলেন, ঈদের আগে এমন ঘটনায় পুরো এলাকাবাসী স্তম্ভিত ও হতবাক হয়ে পড়েছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।</p> <p>খবর পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার ব্যাপারে হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।  </p>