<article> <p style="text-align: justify;">‘৭০ কেজি শসা বেচে এক কেজি চাল কিনিবার হয়, এক কেজি গরুর গোস্ত কিনিবার হইলে শসা বেচাবা হবে ২০ মণ।’ কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বিষমণি এলাকার শসাচাষি মালেকুল ইসলাম। তাঁর মতো একই দশা জেলার হাজারো শসাচাষির। বাজারদর কেজিপ্রতি মাত্র ৭৫ পয়সায় নেমে আসায় শসাচাষিরা ধারদেনা শোধ করতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার পঞ্চগড়ে শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ফলন অনুযায়ী, প্রতি বিঘা জমি থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ মণ শসা উৎপাদন হওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় বড় হোঁচট খেয়েছেন চাষিরা। এক সপ্তাহ ধরে শসা বিক্রি হচ্ছে যেন পানির দরে। অনেক চাষিই ধারদেনা করে শসা চাষ করেছিলেন। বাকি রেখেছেন সার-কীটনাশকের দোকানে। কেউ কেউ এনজিও থেকে ঋণ করে আবাদ করেছেন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">তবে ১৫ থেকে ২০ মণ শসা বিক্রি করে পরিবহন খরচই তুলতে পারছেন না তাঁরা। তাই সাধের শসাই এখন তাঁদের শাখের করাত পরিণত হয়েছে। দিশাহারা চাষিরা সর্বনিম্ন দর বেঁধে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তবে কৃষকের শসার দাম প্রায় শূন্যে পৌঁছালেও পঞ্চগড়ের খুচরা বাজারে কয়েক হাত ঘুরে সাত থেকে ১০ টাকা কেজি দরে শসা বিক্রি হচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">পঞ্চগড় শেকেরহাট এলাকার শসাচাষি আবুল কাশেম বলেন, ‘সাত বস্তা শসা পঞ্চগড় নিয়ে গেলে বেচে পাই ২০০ টাকা। ভ্যানভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। পকেট থেকে ভর্তুকি দিতে হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা। তাই শসা তুলে ফেলে দিচ্ছি।’</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">তিনি বলেন, ‘সার-কীটনাশকের দোকানে অনেক বাকি পড়েছে। এই ঋণ কিভাবে শোধ করব ভেবে পাচ্ছি না। টাকা দিতে না পারলে দোকানদাররা গলায় পা দেবে।’</p> <p style="text-align: justify;">শসা ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর এই সময়ে শসার কেজি ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা। এবার এক টাকার নিচে নেমে আসছে। বাজারে আমদানি বেশি থাকায় দাম একেবারে কমে গেছে। আমরা ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় শসা পাঠাই। কিন্তু সেখানেও চাহিদা নেই।’</p> <p style="text-align: justify;">আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শসার ফলন ভালো হয়েছে জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, ‘একসঙ্গে বাজারে ওঠায় দাম অনেক কমে গেছে। আশা করি, শিগগিরই শসার দাম বাড়বে।’</p> </article>