<p style="text-align: justify;">গরমে রংপুর নগরীর শতাধিক পয়েন্টে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে শরবত। চিনি ও লেবুর রস দিয়ে একটু রং মিশানো শবরত খাচ্ছে গরীব ও নিম্নাআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। লাইনে দাঁড়িয়ে গরীব মানুষ এক গ্লাস ৫ টাকায় কিনে খাচ্ছেন এসব শরবত। তবে এই শরবত কতটা নিরাপদ, ঝুকি মুক্ত কি না তা নিয়ে প্রশ্ন সবার। এই গরমে মানুষ নিরাপদ পানি পান করতে চায়।<br />  <br /> রংপুরে প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। রোদ আর গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও যেন স্বস্তি নেই। রোদে পথ-ঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। তাপের তপ্ততায় ঘেমে যাচ্ছে শরীর। শুকিয়ে যাচ্ছে গরমে গলা। এ অবস্থায় চরম পিপাসায় কাতর পথচারী ও গরীব খেটে খাওয়া মানুষ কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন বরফগলা ও চিনিসহ রং মিশানো শরবতে।</p> <p style="text-align: justify;">মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়ে শরবত বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকানের। সুপার মার্কেটের সামনে অন্তত অস্থায়ী শরবতের দোকান গড়ে উঠেছে ১০-১৫টি। তীব্র গরমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব অস্থায়ী দোকানগুলোতে ভিড় করছেন রিকসা চালক ও শ্রমিকরা। রংপুর শহর ছাড়াও উপজেলায় ভ্যানে লেবু, তোকমা, অ্যালোভেরা, ইসবগুল, তরমুজ, নানা ফলের শরবত ও আখের রস। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তৃষ্ণা মেটাতে এসব শরবতের দোকানে ভিড় করছে।</p> <p style="text-align: justify;">রংপুর মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শাহ মো. আশরাফুদৌল্লাহ আরজু বলেন, প্রখর রোদ আর গরমে বরফগলা পানিতে লেবুর শরবত বিক্রি করছি। গত কয়েক দিনে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে এ সব দোকানে। প্রতি গ্লাস ৫-১০ টাকা করে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩-৪শ গ্লাস শরবত বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।</p> <p style="text-align: justify;">শরবত বিক্রেতা সাগর মিয়া, ছালাম ও মনির বলেন, ভ্যানে করে মেশিন দিয়ে গরমে ঠান্ডা আখের রসের চাহিদা বেড়েছে। অনেকেই দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন আবার প্লাস্টিকের বোতলে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। দুই থেকে আড়াই গ্লাসের বেতলের দাম ৩০-৩৫ টাকা। একশ গ্লাস আখের রস বিক্রি করলে গড়ে ৬শ থেকে ৭শ টাকা লাভ হয়। প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড়শ গ্লাস রস বিক্রি হচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">শরবত বিক্রেতা জিলা স্কুলের সামনে ভ্রম্যামাণ দোকানের শাহিন বলেন, ইসবগুল, আঁখের গুড়, তকমা দানাসহ বিভিন্ন ভেষজ উপাদান দিয়ে সারা বছরই শরবত বিক্রি করি। গরমে শরবত বেশি বিক্রি হয়। তবে বেশি আখের রস বিক্রয় করা হচ্ছে। খাওয়ার উপযোগী বরফ দিয়ে সেগুলো ছোট ছোট টুকরো করে মিশিয়ে বড় কাঁচের পাত্রে ঠান্ডা করে রাখি। অতিরিক্ত গরমে বিক্রিও বেড়েছে। আর বেশি দিন বিক্রয় করা যাবে না। ঠান্ডা পড়বে আর বৃষ্টি হবে।</p> <p style="text-align: justify;">রিকশা চালক সাজু, নয়ন, দবির বলেন, গরমে গাড়ি চালিয়ে এসে এখানে একটু বিশ্রাম নিয়ে শরবত খাই। এতে শরীরটা বেশ ঠান্ডা লাগে। ভালো লাগে এজন্য এখানে এসে দিনে প্রায় দুই তিন গ্লাস শরবত পান করি। আর দাম বেশি শরবতের।</p> <p style="text-align: justify;">রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা.ইউসুছ আলী বলেন, অতিরিক্ত তাপদাহে প্রতিবছর হাসপাতালে ডায়রিয়া, পানি শূন্যতা, হিট স্টোকের রোগীর চাপ বাড়লেও এবার এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা যাচ্ছে। তবে, কিছু সংখ্যক শিশু ও বৃদ্ধ গরম-ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। প্রয়োজন মতো চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">আবহাওয়া কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এ পর্যন্ত জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির তেমন আভাস নেই। তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে।</p>