<p>ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রাহাদ নামের একজনকে আটক করেছে তিতাস থানা পুলিশ। </p> <p>ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের দড়িমাছিমপুর গ্রামে। আহতরা হলেন ওই গ্রামের আবুল কাশেম (৬০), মো.শফিক মিয়া(৪০), মিনা বেগম (৪৫), শাহ আলমসহ (৩৫) অন্তত ৫ জন। এদের মধ্যে মো. শফিক মিয়া অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন রয়েছে। শনিবার দুপুরেও পুলিশ সদস্যদের সেখানে দেখা গেছে।</p> <p>পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, একই গ্রামের টেগুড়া পাড়ার মতিন মিয়া ও মুকুল মিয়া সহোদর ভাই। তারা দীর্ঘদিন ধরে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। এতে করে পাশের ফসলি জমিগুলো ভেঙে  যাচ্ছে। ফসলি জমি রক্ষায় একই গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার জমির মালিকরা প্রশাসনকে জানালে প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিলে মতিন-মুকুল তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়।</p> <p>দক্ষিণ পাড়ার কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের পাশের জমি থেকে মতিন ও মুকুল তারা দুই ভাই দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে। এতে আমাদের ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে। আমরা স্থানীয় চেয়ারম্যানের নিকট বিচার দিলে তখন মতিন ও মুকুল কথা দেয় তারা আর বালু উত্তোলন করবে না। আর আমাদের জমির ক্ষতিপূরণ দিবে। কিন্তু তারা কথা রাখেনি। </p> <p>তিনি বলেন, ফসলি জমি রক্ষায় আমাদের বাড়ির কামাল হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে মুকুলের ভাগিনা ফয়সাল উসকানিমূলক মন্তব্য করে এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় রফিক লাল, ফয়সাল, আবদিন ও উজ্জ্বলসহ ১০/১২ জন দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমাদের পাড়ার আবুল কাশেম ও মো. শফিক মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা করে গুরুতর আহত করে। </p> <p>অভিযুক্ত মতিন মিয়ার স্ত্রী শরিফা বেগম বলেন, আমার ননদের ছেলে ফয়সালকে মারার জন্য দক্ষিণ পাড়ার জামাল, বিল্লাল ও মহসিনসহ ২০/২৫ জন দলবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বাড়িতে হামলা করে। এ সময় আমার ননদ মিনা বেগম ও শাহ আলম গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনার সময় আমার দেবর মুকুল বাড়িতে ছিলেন না। </p> <p>স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম সরকার বলেন, ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনসহ পূর্বের বিরোধ নিয়ে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলেন ধারণা করছি। আমি বাড়িতে ছিলাম না। শনিবার সকালে বাড়িতে এসে ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। আহত শফিক মিয়ার খোঁজ খবর নিচ্ছি। তার চিকিৎসার জন্য আমার সাধ্যমতো আর্থিক সহযোগিতা করবো।</p> <p>তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, দড়িমাছিমপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রাহাদ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত শফিক বড় ভাই ফরিদ মিয়া বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০/১২ জন অজ্ঞাত রেখে একটি মামলা করেছে। এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আর দড়িমাছিমপুর গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।</p>