<article> <p style="text-align: justify;">চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পানিসংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। পানির অভাবে চলতি মৌসুমে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে আউশ চাষ সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া চাষাবাদ করার পরও প্রয়োজনীয় পানি দিতে না পারায় বহু জমির ফসলহানি হয়েছে। ফলে কৃষকরা সবাই এখন বৃষ্টির অপেক্ষায়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পানিসংকটে জনজীবনে নানামুখী দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার বহু টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছেন সবজি ভাণ্ডারখ্যাত এই উপজেলার হাজার হাজার কৃষক। চলতি মৌসুমে শুধু পানিসংকটের কারণে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে আউশ রোপণ করা সম্ভব হচ্ছে না।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এরই মধ্যে চাষ করা টমেটো, বরবটি, ঝিঙ্গা, কাঁকরোলসহ গ্রীষ্মকালীন নানা সবজি। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কৃষকদের পানি নিয়ে হতাশার কথা জানা গেছে।</p> <p style="text-align: justify;"><img alt="আউশের চাষ হচ্ছে না ৬০০০ হেক্টর জমিতে" height="80" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/04.April/18-04-2024/RIF/30-04-2024-P12-2.jpg" width="400" />কৃষক নাছির আহমেদ জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৮০ শতক জমিতে টমেটো, কুমড়া, বরবটিসহ নানা সবজির চাষ করেছেন। কিন্তু পানিসংকটে তাঁর চাষাবাদ খুবই ব্যাহত হচ্ছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">পানির অভাবে গাছগুলো শুকিয়ে মৃতপ্রায়। অথচ পানির কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তিনি আরো জানান, মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী কৃষিপ্রধান একটি এলাকা। এখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চাষাবাদ হয়। অথচ মাঠের মাঝে নেই কোনো গভীর নলকূপ।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">ফলে ক্ষেতের গাছগুলো শুকিয়ে কাঠ। অনেক দূরে দূরে দুয়েকটি পুকুর আছে। এসব পুকুরের মালিকের কাছ থেকে মেশিন বসিয়ে পানি কেনা যায় সামান্য পরিমাণ। প্রতি ঘণ্টার জন্য এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। তা-ও বেশি পানি দেয় না। পুকুর শুকিয়ে যাচ্ছে। এভাবে সব কৃষক পানি পান না। আর এত টাকা দিয়ে পানি কিনলে সবজি বিক্রি করে লোকসান হবে।</p> <p style="text-align: justify;">অন্য কৃষক মুজিবুল হক বলেন, ‘এখানে আগে এই মৌসুমে শত শত কৃষক তরমুজ ও বাঙ্গি চাষ করতেন। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় ধীরে ধীরে এসব চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন জমিতে লাগানো চিচিঙ্গা, করলা, বরবটি, ক্ষীরা ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানিসংকট এত তীব্র হলে ধীরে ধীরে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে।’</p> <p style="text-align: justify;">কৃষকরা আরো জানান, এই মৌসুমে আউশ চাষ করার কথা থাকলেও পানিসংকটের কারণে একজন কৃষকও আউশ ধান চাষ করতে পারছেন না। উপজেলার সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, মুরাদপুর, বাড়বকুণ্ড, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, ভাটিয়ারী ও সলিমপুর এলাকার জমিগুলোতে এ মৌসুমে আউশ ধান রোপণের কথা। সেসব জমি এখন খালি পড়ে আছে পানিসংকটে।</p> <p style="text-align: justify;">সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘আসলে পানিসংকট ক্রমে বাড়ছে। এই মৌসুমে ফসলের ক্ষেতে পর্যাপ্ত পানি দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে আউশ ধান রোপণের উপযুক্ত সময় এখন। কিন্তু পানিসংকটে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপণ করা যাচ্ছে না। কৃষকরা বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছেন। বৃষ্টি শুরু হলে আউশ চাষ শুরু হবে।’</p> </article>