<p>ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় রেলওয়ের যন্ত্রাংশ চুরি যেন থামছেই না। এবার রেলওয়ের যন্ত্রাংশসহ আটক হয় তিন কর্মচারী। তবে রফাদফায় তাদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উদ্ধারে নেতৃত্ব দেওয়া নিরাপত্তাবাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরা বলছেন এগুলো রেলওয়ের ‘আবর্জনা। এ নিয়ে রেলঅঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। </p> <p>এদিকে যন্ত্রাংশগুলো নিয়ে যেন লোকুচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এগুলো কোথা থেকে এসেছে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না। সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্তৃপক্ষ বলছে এসব যন্ত্রাংশ সম্পর্কে তাদের কোনো কিছুই জানা নেই। </p> <p>স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে একটি ভ্যানগাড়িতে করে রেলওয়ের থানার সামনে দিয়ে কিছু ভাঙাচুরা যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ সময় আরএনবি সদস্যরা রেলওয়ের লোকোশেড বিভাগে কর্মরত জসিম উদ্দিন, মানিক দাস ও জীবন দাস নামে তিনজনকে আটক করে মালামালগুলো কোথায় যাবে জানতে চান। এ নিয়ে আরএনবি’র সঙ্গে ওই তিন কর্মচারির কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই তিনজনকেসহ মালামাল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে ছুটে আসেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। ওই সাংবাদিকের মধ্যস্থতায় তিনজনকে ছাড়িয়ে নিতে এক লাখ টাকা দেওয়া হয় ও ওই সাংবাদিককে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। </p> <p>স্থানীয় সূত্রটি আরো জানায়, রেলওয়ের একটি চক্র এর আগেও যন্ত্রাংশ চুরি করে বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ছাড় পেয়ে যায়। মূলত রেলওয়ে কলোনীতে অবৈধভাবে বসবাসরত মো. ইয়ার হোসেন নামে ভাঙারি ব্যবসায়ি ওই মালামাল কিনে নেন। </p> <p>এ বিষয়ে কথা হলে ওই সময়ে আটক লোকোশেডের কর্মচারি জীবন দাস জানান, এসব মালামাল দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের। ডাম্পিং স্টেশনে রাখার জন্য তারা এগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় আরএনবি সদস্যরা বিষয়টি জানতে চান। পরে তারা মালামালগুলি নিয়ে যায়। কাগজপত্র দেখিয়ে মালামাল নিয়ে আসা হবে বলে জানান তিনি।</p> <p>এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আরএনবি মালামাল নিয়ে যাওয়ার খবরে স্থানীয় এক সাংবাদিক ছুটে আসেন। তবে তিনিসহ কাউকে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। </p> <p>আখাউড়ার লোকোশেড ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম জানান, এসব মালামাল বিষয়ে তিনি কোনো কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। এগুলো আমাদের মালামাল নয়। মালগুলো কোথা থেকে এসেছে এ বিষয়েও আমাদের কাছে কোনো ধরনের তথ্য নেই।’</p> <p>রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আরএনবি’র হাতে উদ্ধার হওয়া এসব মালামাল আমাদের নয়। মালামাল কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো এ বিষয়টিও আমার জানা নেই।’</p> <p>আখাউড়া আরএনবি’র পরিদর্শক মো. আবু সুফিয়ান ভূঁইয়া রফাদফা করে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘মালামালগুলো উদ্ধারের পর জানতে পারি এগুলো মূলত ‘আবর্জনা’। সবমিলিয়ে ৫০-৬০ কেজি হবে। রেলওয়ের এসব মালামাল আমাদের কাছে রেখে দেওয়া হয়েছে।’ তবে মালমাল উদ্ধারের পর এক সাংবাদিক এসেছিলেন বলে জানান তিনি।</p>