<p>কথায় বলে ‘কারো পৌষ মাস, আর কারো সর্বনাশ’! এই প্রবাদটির বাস্তবতা এখন হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছেন বাগেরহাটের শরণখোলার বোরো চাষিরা। কারণ স্বস্তির বৃষ্টি চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে তাদের। দীর্ঘ তাপদাহের পর গত মঙ্গলবার (৭ মে) থেকে তিন দিনের ভারি বৃষ্টিতে মাঠে কেটে রাখা ধানের পাজা, মাড়াই করা ধান ও খড় ভিজে একাকার হয়ে গেছে কৃষকদের।</p> <p>বৃষ্টি পানিতে উঠান কর্দমাক্ত হওয়ায় ভেজা ধান, খড়-কুটা শুকাতে পারছেন না। ভেজা ধান আর খড় থেকে দুর্গন্ধ ছুটেছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে চাষিদের। সামান্য রোদ পেলেই যে যার বাড়ির সামনের পাকা সড়কে নিয়ে ভেজা ধান, খড়-কুটা শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষান-কৃষানিরা।</p> <p>শুক্রবার (১০ মে) উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া, হোগলপাতি, রাজাপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাড়াই করা ধান এবং খড়ে ছেয়ে আছে পাকা সড়ক। কিষান-কৃষানিরা মিলে শুকাচ্ছেন সেসব বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া ধান এবং খড়। আগে মাঠে কেটে রাখা ভেজা ধানের পাজা আটি বেঁধে বাড়িতে নিচ্ছেন অনেকেই। আবার পাকা ধান দ্রুত কাটতে দেখা গেছে চাষিদের।</p> <p>হোগলপাতি গ্রামের চাষি ইউসুফ শরীফ ও দুলাল হাওলাদার জানান, বৃষ্টি হওয়ায় পাকা নিয়ে তারা খুবই সমস্যায় পড়েছেন। মাড়াই করা ধান এবং খড় ভিজে গেছে। বাড়ির উঠান কাদা হয়ে গেছে। তাতে ধান শুকানোর কোনো উপায় নেই। তাই রাস্তায় এনে বাড়ির নারী-পুরুষ মিলে ধান এবং খড়-কুটা শুকানোর চেষ্টা করছেন।</p> <p>উপজেলার বিভিন্ন এলাকা খোঁজ নিয়ে বোরো চাষিদের একই সমস্যার কথা জানা গেছে।</p> <p>এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার জানান, বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। তবে এখনও ধান নষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা হয়নি। বৃষ্টি যদি লাগাতারভাবে হয় তাহলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের ভর্তুকিমূল্যে দেওয়া কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই এবং বস্তাবন্দির করার ফলে মাঠের বেশিভাগ ফসলই কাটা হয়ে গেছে। এখনো যা আছে তা দ্রুত কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।</p> <p>কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর শরণখোলা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের এক হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। সরকারি প্রণোদনার বীজ-সার দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে চাষিদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি হেক্টরে ৬ মেট্রিক টন করে ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন এবং দামও ভালো পাওয়ায় চাষিরাও খুশি।</p>