ডুব : একটি অনবদ্য কাব্যাশ্রয়ী চলচ্চিত্র

রবিউল করিম
রবিউল করিম
শেয়ার
ডুব : একটি অনবদ্য কাব্যাশ্রয়ী চলচ্চিত্র

ডুব চলচ্চিত্রটি মুক্তির আগেই যে বিতর্কটিকে উস্কে দেয় তা হলো, এটি হুমায়ূন আহমেদের বায়োপিক, নাকি বায়োপিক নয়? পরিচালক, হুমায়ূন পরিবার ও মিডিয়া এ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং ফলাফল যা দাঁড়ায় তা হলো, এটি বায়োপিক, আবার না। ছবিটি মুক্তির পরও এ নিয়ে দ্বন্দ্ব কোনোমহলেই ঘোছেনি। দর্শক ছবিটি দেখে নিজেরাই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন, হুমায়ূনের সাথে কোনো অংশ মেলাতে পারছেন, কোনো অংশ পারছেন না, কেউ আবার পুরোটাই সত্য ভেবে মেনে নিচ্ছেন। ব্যক্তি হুমায়ূন আহমেদ আমাদের কাছে এত রহস্যঘেরা ব্যক্তিত্ব ছিলেন যে, তার সম্পর্কে তিনি যেরকম নানান গল্প আমাদের সামনে উপস্থিত করেছেন, আবার আমরা নিজেরাও কিছু গল্প তৈরি করে নিয়েছি।

ফলে প্রকৃত হুমায়ূন আহমেদ আমাদের কাছে চিরকালই অধরা থেকে গেছেন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সহজেই তাই সেই অধরা ব্যক্তিটিকে নিয়ে গল্পের অবতারণা করেছেন। যেখানে কিছু জায়গায় আমরা হুমায়ূন আহমেদকে পাচ্ছি আবার কিছু জায়গায় আমাদের নিজেদের সৃষ্টি হুমায়ূন আহমেদকে পাচ্ছি।

যাই হোক, চলচ্চিত্রটির শুরু দেখেই দর্শকের বুঝতে অসুবিধে হয় না যে, এটি প্রথাগত চলচ্চিত্রের ধারা থেকে ভিন্ন।

ঠাস করে একটা গুলি পর্দার এ প্রান্ত ঘেঁষে ছুটে গেল আর নাম ভেসে উঠল সিনেমার নাম ‘বুলেট’। এইরকম কোনো দৃশ্য নয়। একটা সূর্যাস্তের দৃশ্যের মধ্যে দিয়ে পর্দা উন্মোচিত হচ্ছে, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী যেন তার দর্শকদের প্রস্তুত করে নিচ্ছেন যে, একটা বিষণ্ণ করুণ গল্প এরপর থেকে তারা প্রত্যক্ষ করতে থাকবেন। এই গল্পের বিস্তার চক্রাকার এবং পূর্ব নির্ধারিত।
আমরা তা পুন:পুন: প্রত্যক্ষ করি। তবে এখানেও তিনি কৌশলের আশ্রয় নেন। তিনি ভালো করেই জানেন যে, এই মনোবিষণ্ণ করা গল্প বেশিক্ষণ কারো পক্ষেই সহ্য করা সম্ভব নয়, তাই কিছু পরপরই হালকা রসের জোগান দিয়ে গেছেন। যেমন জাভেদ-মায়ার বিয়ের গল্প, নিতুর অভিসার পর্ব, শুটিং বাড়ির কর্মচারীদের নানান কর্মকাণ্ড ইত্যাদি ইত্যাদি।
জাভেদ চরিত্রটিকে দেখে  জীবনানন্দ দাশের “বোধ” কবিতা বারবার মনে পড়েছে, ‘সকল লোকের মাঝে বসে/আমার নিজের মুদ্রাদোষে/আমি একা হতেছি আলাদা?...’ জাভেদ যখন তার প্রথম স্ত্রী মায়া, কন্যা সাবেরী ও ছেলেকে নিয়ে পাহাড়ঘেরা রিসোর্টে বেড়াতে যায় এবং কন্যা সাবেরীর অনুরোধে জাভেদ ও মায়া কিছু একান্ত সময় অতিবাহিত করে ; তখন তাদের মাঝে যে কথপোকথন হয়; তাতে দর্শকের বুঝতে অসুবিধে হয় না যে, তাদের দাম্পত্যজীবনের মাঝে একটা শিথিলতা, স্থবিরতা এসেছে।
এবং এটি সবচেয়ে আগে উপলব্ধি করতে পারে তার মেয়ে সাবেরী। ফলে সাবেরীই ঠেলে পাঠায় তাদের দুজনকে কিছু সময় অতিবাহিত করার জন্য। সেখানে মায়া, জাভেদের কাছে এইরকম প্রশ্ন রাখে যে, কেন জাভেদ বারবার অতীতস্মৃতি রোমন্থন করছে, তবে কি বর্তমান শূন্য হয়ে গেছে? তারপর নিরবতা, মাছির ভন ভন, হাওয়া শনশন। আবহসঙ্গীত যে কত অর্থবহ হতে পারে ‘ডুব’ না দেখলে তা বোঝানো কষ্টকর। সারা চলচ্চিত্র জুড়ে এরকম অসংখ্য নিরবতা। এক একটা যতি এবং শূন্যস্থান।
বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী লেখক জগদীশ গুপ্ত’র বিখ্যাত ছোটগল্প ‘দিবসের শেষে’ গল্পটির শুরুতে একটা ভয়াবহ সংবাদ আমরা জানতে পারি যে, রতির পাঁচ বছরের ছেলে পাঁচু যখন বলে যে, মা, আজ আমায় কুমিরে নেবে। এই টেনশন কিছুপর নানান চরিত্রের কর্মব্যস্ততায় পাঠক যখন ভুলতে বসে ঠিক তখনই ছেলেটিকে কুমিরে নিয়ে যায়। আমরা এই চলচ্চিত্রটির প্রথমেই তেমন ইঙ্গিত প্রত্যক্ষ করি, যখন জাভেদ সাহেব তার প্রাণপ্রিয় কন্যা সাবেরীকে বলে যে, মানুষের যখন প্রয়োজন ফুরায় তখন মানুষ মারা যায়। তারপর ঘটনা প্রবাহ নানান দিকে মোড় নেয়। কন্যার বান্ধবী নিতুকে নিয়ে সংসারে অশান্তির বিষ ছড়ায়। আমরা স্থির অচঞ্চল জাভেদকে এই একবারইমাত্র উত্তেজিত হতে দেখি। স্ত্রীর অভিমান করে মায়ের কাছে চলে গেলে তাকে আবার ফিরিয়ে আনতে দেখি। কিন্তু যে সন্দেহের বিষবৃক্ষের বীজ রোপিত হয়ে গেছে তা ডালপালা মেলে অন্ধকার আরো গাঢ় করলে জাভেদ একসময় সব দায়ভার তার কাঁধে নিয়ে দূরে সরে আসে এবং বিয়ে করে নিতুকে। জাভেদ কেন নিতুকে বিয়ে করল? কারণ ঐ যে মাছি ভন ভন! জাভেদের নিস্তরঙ্গ জীবনে নিতু একটা ঘূর্ণিঝড়। এই ঝড়কে যে আঁটকাতে চেয়েছে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এই ঝড়ে সে হারিয়ে ফেলে তার পূর্বের স্ত্রী-পুত্র-কন্যার সঙ্গে সম্পর্ক। নিতু চরিত্রটিকে বড়ই খেয়ালি, আবেগতাড়িত, অকপট, সাহসী আমরা প্রত্যক্ষ করি। তার যা ভালো লাগা মন্দ লাগা তা প্রকাশে তার কোনো কুণ্ঠা নেই। ফলে সহজেই সে পূর্বের সমস্ত কিছু বদলে ফেলতে চায় ঘরের পর্দা থেকে শুরু করে জাভেদকে পর্যন্ত। এটিকে অনেকেই নেগেটিভ হিসাবে দেখতে পারেন কিন্তু নির্মোহভাবে যদি দেখা যায় তবে এই চরিত্রটি যা করেছে তা খুবই স্বাভাবিক। সে শুধুমাত্র তার ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়ার জন্য যেরকম ত্যাগ ও নিষ্ঠা নিয়ে তাকে অর্জন করেছে; তাতে করে তার এরকম অধিকার চাওয়া অন্যায় হতে পারে না। সে চেয়েছে সম্পূর্ণ জাভেদকে, কোনো খণ্ডিত অংশকে নয়। এবং জাভেদের হৃদয়ে নিতুর অবস্থানটুকু ছোট্ট একটা ঘটনার মাঝে উন্মোচিত হয় যখন তাঁর একজন চলচ্চিত্র শিক্ষার্থী ফেসবুকে প্রফাইল পিকচার হিসাবে নিতুকে বাদ দিয়ে শুধু জাভেদ ও তাঁর ছবি পোস্ট দেয় তখন জাভেদ বলে ওঠে, তুমি কিভাবে আমাকে সম্মান করলে ওকে বাদ দিয়ে? আমরা ভাবতে শুরু করি এইবার জাভেদ সাহেবের নিস্তরঙ্গ জীবনে আনন্দের কিছু ঘটতে শুরু করবে, ভালোবাসা লুটোপুটি করবে। কিন্তু নিতু ঝড় থেমে গেলে মানুষ যেরকম ঝড়ে হারানো জিনিসগুলো খুঁজতে শুরু করে, জাভেদকে আমরা সেরকম হারিয়ে যাওয়া প্রাক্তন স্ত্রী-কন্যা-পুত্রকে খুঁজতে দেখি। কিন্তু সাবেরী এখানে আড়াল হয়ে দাঁড়ায়। সে অভিশাপ দেয় যে জাভেদ কখনো আর তার পুত্র-কন্যার খোঁজ জানতে পারবে না। জাভেদ নানাভাবে চেষ্টা করে যখন আর কোনোই সংযোগ রক্ষা করতে পারে না বা জাভেদ যখন ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হতে থাকে তার চেনাজগত থেকে তখন নিতুর কাঁধে তাঁর আত্মসমর্পন দেখি। আর ঠিক তখনই ক্যামেরা প্যান করে। আমরা দেখি কোরআন তেলওয়াত এবং জানি জাভেদ এর মৃত্যু। এটি আবারো আমাদের মনে করিয়ে দেয় জাভেদের সেই উক্তি, মানুষের যখন প্রয়োজন ফুরায় তখন মানুষ মারা যায়।
জাভেদের মৃত্যুর সংবাদ যখন মায়া, সাবেরী এবং তার পুত্র জানতে পারে তখন তাদের প্রতিক্রিয়ায় ভিন্নতা দেখি। সাবেরী অপ্রয়োজনেই হাঁটাহাঁটি করে, সাবেরী পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ দিয়ে ডিম খাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। একধরণের পলায়ন আমরা প্রত্যক্ষ করি। ঘটনার ঘাত থেকে নিজেকে দূরে সরে নেওয়ার কৌশল হিসাবে। কিছু পরেই দেখি স্থিরতা, ছেলেটা দেয়ালের দিকে মুখ করে শূন্য দৃষ্টিতে, মায়ার আয়নায় মুখ দেখা আর সাবেরী বাথটবে পানি ছেড়ে বসে থাকা। নিরবতা। যে ঘাত থেকে তারা দূরে সরে যেতে চেয়েছিল তা যেন আরো প্রগাঢ় হয়ে তাদের বুকে চেপে বসে।
চলচ্চিত্রটিতে একটিই মাত্র গান। সেটির প্রয়োগমুহূর্তটি অসাধারণ। সম্পর্ক ছিন্নের পর তৃষ্ণার্ত জাভেদ পানি খেতে গিয়ে পানিশূন্য জগ পায়। প্রতীকীভাবে আমাদের জানিয়ে দেয়া যে, ভালোবাসার সব আধারই বর্তমান ছিল কিন্তু তা আজ শূন্য। চলে আসার সময় কন্যা সাবেরী একগ্লাস পানি হাতে ছুটে আসে জাভেদের কাছে। পানি এগিয়ে দেয়, জাভেদ পানি খায়। অনেকক্ষণ ধরে গ্লাসটা ধরে রাখে। সাবেরীর কান্নাচাপা মুখ। এই সময় ‘ আহারে জীবন...’ গানটি আমাদের তন্ত্রীর সবকটা তার ছিঁড়ে ফেলতে চায়। বাবা হিসাবে, প্রাণপ্রিয় সন্তান হিসাবে সাবেরীকে আদর করার যে অধিকার, তা হারিয়ে জাভেদকে যেন দেখি গ্লাসে লেগে থাকা কন্যার স্পর্শটিকেই সে অনুভব করছে, আদর করছে। আসলে এই চলচ্চিত্রটিতে জাভেদ ও সাবেরী এই দুটি চরিত্রকেই মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার সমস্ত হৃদয় দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন। পিতা ও কন্যা। ফ্রয়েড সাহেব কি উপস্থিত হবেন না এখানে? হয়েছেনও তিনি। তাইতো সাবেরীকে দেখি স্কুলবন্ধু নিতুর এই বাবা অপহরণকে সে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। সে অবান্তর যুক্তির অবতারণা করে নিজের সান্ত্বনা খোঁজে যে, সবকিছুতেই জয়ী তাকে হারাতে না পেরে নিতু তার বাবাকে ছিনিয়ে নিয়ে জয়ী হতে চেয়েছে। আসলে নিতু তার সমবয়সী একজন নারীর কাছে নিজের হেরে যাওয়াটাকে মেনে নিতে পারে না। এটাই ফ্রয়েডিও কমপ্লেক্স। ফলে পরবর্তীতে চলচ্চিত্র জুড়েই পিতা কন্যার এই দ্বৈরথ আমরা প্রত্যক্ষ করি। তাদের মনোকষ্ট, পীড়ন, হাহাকারে আমাদের হৃদয়ে বেদনার বৃষ্টি ঝরে।

এরকম অসম্ভব অনুভব, নিরবতা আর অপ্রকাশের ভাষা চলচ্চিত্রটির পাতায় পাতায়। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী যেন এই ‘ডুব’ চলচ্চিত্রটিতে এসে পূর্বতন তার গল্প বলার সমস্ত কৌশলকে ভেঙে ফেলে নতুন এক কাব্যিক দ্যোতনা আমাদের সামনে উপস্থিত করতে চান। পিঁপড়াবিদ্যা দিয়ে তিনি যে মনোজাগতিক চলচ্চিত্রের হাত মসকো করেছিলেন তার সার্থকতা আমরা দেখি ‘ডুব’ চলচ্চিত্রটিতে এসে। শিল্পের যে ভাষাটি তিনি এই চলচ্চিত্রের মাঝে উপস্থিত করেছেন তার প্রয়োগ কিছুপূর্বে বাংলা চলচ্চিত্রে খুব একটা দেখা যায় না। ‘ডুব’ চলচ্চিত্রটিকে কাব্যাশ্রয়ী বলছি এ কারণে যে, একটি ভালো কবিতার যেসব সদগুণ বর্তমান থাকতে হয় যেমন উপমার, অলংকার এর সার্থক প্রয়োগ, নিরবতা ও অপ্রকাশের ক্ষণ নির্ধারন, দর্শন, মেদহীনতা, সর্বোপরি পাঠকের মনোজগতে জারণ। তার পুরোটাই বর্তমান এই চলচ্চিত্রটিতে। স্বল্প সংলাপ, হৃদয়গ্রাহী দৃশ্য, অনাড়ম্বর উপস্থাপনা, নিরবতা, দর্শন, দর্শকের মাঝে পূর্ণতার অতৃপ্তি।
এতসব ভালোর মাঝখানে যেটুকু চোখ চুলকিয়েছে তা হলো, এক. জাভেদ চরিত্রটির বাংলা উচ্চারণ। পরিচালক এই দুর্বল দিকটি জানতেন বলেই হয়ত কিছুটা ইংরেজি সংলাপ জাভেদকে দিয়ে বলিয়েছেন। আর দুই. মৃত্যুর পর জাভেদের ফিরে আসা তার প্রাক্তন স্ত্রীর বাড়িতে। সেখানে জাভেদের মুখে এক চিলতে হাসিও দেখি। তিনি এটি কেন করেছেন, তা বোধগম্য হয় নি। যেখানে পুরো চলচ্চিত্রটিই বাস্তবানুগ, সেখানে হঠাৎ করেই এই ফ্যান্টাসি ভালো লাগে নি। যদি তিনি এর মধ্যে দিয়ে বোঝাতে চান যে, জাভেদের অতৃপ্ত আত্মা খুঁজে ফিরেছে মায়াকে, তার সন্তানদের কিংবা নিতুর সাথে তাঁর সংসারটা শেষ পর্যন্ত খুব সুখকর ছিল না। তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, এই একটি বারই তিনি বাহুল্য দৃশ্যের অবতারণা করেছেন।
এইটুকু বাদ দিলে একটা ধন্যবাদ তো জানানোই যেতে পারে। ধন্যবাদ মোস্তফা সরয়ার ফারুকী । ‘ডুব’ দেখানোর জন্য এবং অন্তর্গত নিমজ্জনে পতিত হওয়ার জন্য।

 রবিউল করিম, কথাসাহিত্যিক ও মিডিয়াকর্মী

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মুক্তির আগেই ৬০০ ওয়েবসাইটে ‘সিকান্দার’, দুশ্চিন্তায় নির্মাতারা

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
মুক্তির আগেই ৬০০ ওয়েবসাইটে ‘সিকান্দার’, দুশ্চিন্তায় নির্মাতারা
সালমান খান

অপেক্ষার পালা শেষ প্রায়। ঈদে ধামাকা নিয়ে আসছেন বলিউড মেগাস্টার সালমান খান। আজ ঈদ উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে মুক্তি পেতে চলেছে তার ‘সিকান্দার’। সিনেমাটি নিয়ে ভীষণ প্রত্যাশায় রয়েছেন পরিচালক থেকে প্রযোজক সবাই।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রবিবার বড় পর্দায় মুক্তি পাওয়ার আগেই অনলাইনে ফাঁস হয়ে যায় গোটা সিনেমা।

আরো পড়ুন
হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কী হয়েছে অভিনেতার?

হুইলচেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কী হয়েছে অভিনেতার?

 

টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার গভীর রাতে সিনেমাটি অনলাইনে ফাঁস হয়ে যায়। তবে একটি বা দুটি নয়, মোট ৬০০টি ওয়েবসাইটে সিনেমাটি ফাঁস হয়ে গেছে। যার মধ্যে রয়েছে তামিল রকার্স, মুভিরুলস, ফিল্মিজিলার মতো সাইট।

এ খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পরেই উদ্বেগ দেখা গেছে ভক্তদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে চলচ্চিত্র বাণিজ্যিক বিশ্লেষক কোমল নাহতাকেও।

রবিবার (৩০ মার্চ) সকালে একটি টুইট প্রকাশ করে কোমল বলেন, ‘এই ঘটনা যেকোনো প্রযোজকের কাছে একটি দুঃস্বপ্নের মতো। সিনেমা মুক্তির আগেই অনলাইনে ফাঁস হয়ে যায়।

এর আগেও এমন অনেক ঘটনা আমরা শুনেছি। দুর্ভাগ্যবশত এবার সিকান্দারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটল।’

আরো পড়ুন
৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

 

কোমল আরো বলেন, ‘সিনেমার নির্মাতা, নাদিয়াদওয়ালা গ্র্যান্ডসন অ্যান্টারটেইনমেন্ট গোটা বিষয়টি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, ইতিমধ্যেই ৬০০টি ওয়েবসাইট থেকে সিনেমাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু যা ক্ষতি হওয়ার কিছুটা হয়েছে।

ওয়েবসাইটের সংখ্যা আরো বাড়ছে এবং ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে। এটি সত্যি ভীষণ নিন্দনীয় একটি কাজ। বক্স অফিসে এর প্রভাব পড়তে পারে।’

সিনেমাটি কিভাবে ফাঁস হয়েছে বা কোন সংস্থা থেকে এটি ফাঁস করা হয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে নির্মাতারা পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত করা হয়।

আরো পড়ুন
‘পুরোটাই মনগড়া গল্প’, জামিন চাইলেন সাইফের ওপর হামলাকারী

‘পুরোটাই মনগড়া গল্প’, জামিন চাইলেন সাইফের ওপর হামলাকারী

 

গত দুই বছরে ঈদে সালমানের কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। দুই বছর পর ঈদে ফিরলেন সালমান। তবে সিনেমাটির অগ্রিম বুকিং অনেক আগে শুরু হয়ে গেলেও এটি এখন পর্যন্ত কোনো রেকর্ড ভাঙতে পারেনি। তবে মুক্তির পর বেশ ভালোই ব্যবসা করবে বক্স অফিসে, এমনটা ধারণা করাই যাচ্ছে। যেহেতু ঈদ আর সালমানের এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে যুগ যুগ ধরেই। তাই সালমানভক্তরা রয়েছেন প্রত্যাশায়।

মন্তব্য

প্রবাসীদের ঈদ শুভেচ্ছা জানালেন শাকিব খান

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রবাসীদের ঈদ শুভেচ্ছা জানালেন শাকিব খান
শাকিব খান

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই উৎসব। আর বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমীদের জন্য ঈদ মানেই শাকিব খান। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ হবে শাকিবময়। নানা জল্পনা-কল্পনার পরে অবশেষে ঈদে মুক্তি পাচ্ছে শাকিব খানের ‘বরবাদ’।

সিনেমাটি ঘিরে দর্শক উন্মাদনা তুঙ্গে। রাত পোহালেই ঈদের সম্ভাবনা। আর পর্দায় হাজির হবেন শাকিব খান। তবে দেশের মানুষকে ঈদে বরবাদ উপহার দিলেও প্রবাসীদের ভোলেননি শাকিব।
ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রবাসী নাগরিকদের।

আরো পড়ুন
হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কী হয়েছে অভিনেতার?

হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কী হয়েছে অভিনেতার?

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেগাস্টার শাকিব খানের প্রযোজনা সংস্থা এসকে ফিল্মস-এর পেজ থকে এক পোস্ট দিয়ে প্রবাসীদের পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। পোস্টে লেখা হয়, ‘অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের জন্য অবদান রাখা সকল প্রবাসী ভাই ও বোনদের জানাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক। পবিত্র এই উৎসব আপনার ও আপনার পরিবারদেরকে আনন্দ, শান্তি ও সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে তুলুক, আমিন।

শাকিবের এই শুভেচ্ছাবার্তায় দারুণ উচ্ছ্বসিত অনুরাগীরা। একের পর এক মন্তব্য করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন তারাও। 

আরো পড়ুন
৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

 

এবারের ঈদে বরবাদ মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হাসেন শাকিব। ২৬ মার্চ বিকেলে বরবাদের মুক্তির বাধা কেটে গেলে সন্ধ্যা থেকেই অফিসে হাজির হতে থাকেন একের পর এক বুকিং এজেন্ট। রেন্টালও উঠতে থাকে আকাশচুম্বী।

শাকিব খানের আগের সব ছবির রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ‘বরবাদ’ সর্বোচ্চ রেন্টাল পেয়েছে ১৩ লাখ টাকা। ‘বরবাদ’ ছবির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছেন শহীদুল্লাহ মিয়া [মাস্টার]। প্রবীণ এই ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ্য ১২০টির বেশি হলে ছবিটি মুক্তি দেওয়া। এরই মধ্যে শতাধিক হল চূড়ান্ত হয়েছে। 

‘বরবাদ’-এ শাকিব খান ছাড়াও আছেন ইধিকা পাল, শহীদুজ্জামান সেলিম, ইন্তেখাব দিনার, মিশা সওদাগর, যীশু সেনগুপ্ত। নুসরাতের উপস্থিতি কেবল এই আইটেম গানেই।

মন্তব্য

লুঙ্গি পরে হাজির হওয়ার কারণ জানালেন বুবলী

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
লুঙ্গি পরে হাজির হওয়ার কারণ জানালেন বুবলী
শবনম বুবলী

ঈদে প্রেক্ষাগৃহে আসছে চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ ও নায়িকা শবনম বুবলীর ‘জংলি’। এবারের ঈদে এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমা নিয়ে হাজির হচ্ছেন এই জুটি। সিনেমাটির প্রচারণাতেও দেখা গেছে দুজনকে। তবে বুবলী ভিন্নধর্মী প্রচারণায় নজর কেড়েছিলেন সবার।

লুঙ্গি পড়ে নিজের ছবি প্রকাশ করেছিলেন অভিনেত্রী। ছবিগুলো বেশ সাড়া ফেলেছিল।

এবার এক সাক্ষাৎকারে লুঙ্গি পরে সিনেমার প্রচারণার কারণ জানালেন এই অভিনেত্রী। বুবলী বলেন, ‘লুঙ্গির ব্যাপারটা ছিল আমাদের পরবর্তী সিনেমা জংলির সঙ্গে কানেকটেড।

এটা প্রোমোশনাল একটা ব্যাপার ছিল। আমার কাছে মনে হয় যে, সবকিছুই তো একটা ক্লোদিং, সেদিক থেকে লুঙ্গির ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার হয়েছে।’

আরো পড়ুন
হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কী হয়েছে অভিনেতার?

হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কী হয়েছে অভিনেতার?

 

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘ছেলেরা আমাদের অনেক কিছু যেমন— কানের অর্নামেন্ট, গলার অর্নামেন্ট, পাঞ্জাবির সাথে ওড়না; এগুলো নেয় তাহলে আমরাও পরে ট্রাই করতে পারি। জাস্ট মজা করছি।

এটা আমাদের প্রোমোশনাল।’

আরো পড়ুন
৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

 

পর্দায় অভিষেকের পর থেকেই ঈদ উৎসবে ডাবল সিনেমা নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে হাজির হয়েছেন তিনি। মাঝে ছন্দঃপতন হলেও আবারও ফিরেছেন স্বমহিমায়। এবার ঈদ উৎসবেও দুই সিনেমা নিয়ে আসছেন তিনি। এই ঈদে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বুবলীর ‘জংলি’ সিনেমা।

এদিকে ‘পিনিক’ নামে আরেকটি ছবি মুক্তির কথা থাকলেও অবশেষে তা পিছিয়েছে।

মন্তব্য

‘পুরোটাই মনগড়া গল্প’, জামিন চাইলেন সাইফের ওপর হামলাকারী

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
‘পুরোটাই মনগড়া গল্প’, জামিন চাইলেন সাইফের ওপর হামলাকারী
শরিফুল ইসলাম ও সাইফ আলি খান

বলিউড অভিনেতা ও ছোট নবাব সাইফ আলি খানের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। তদন্তে মুম্বাই পুলিশ জানতে পারে, শরিফুল আসলে বাংলাদেশের বাসিন্দা। বেআইনি ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন তিনি। শুক্রবার সেই শরিফুল জামিনের আবেদন করেছেন।

জামিনের আবেদনে তিনি বলেনছেন, সাইফের ঘটনা পুরোটাই মনগড়া গল্প। তিনি দোষী নন। আগামী ১ এপ্রিল সেই আবেদনের শুনানি হবে।

আবেদনে শরিফুলের আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেল কোনও অপরাধ করেনি।

তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট একটি মামলা করা হয়েছে। সাইফকে নিয়ে তাকে জড়িয়ে সেই ঘটনা পুরোটাই মনগড়া গল্প। একই সঙ্গে শরিফুলের আইনজীবী আদালতে জানান, শরিফুল সম্পূর্ণ ভাবে তদন্তে সহযোগিতা করছেন। সিসিটিভি ফুটেজ, কল রেকর্ড-সহ গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত তথ্যপ্রমাণই পুলিশের হাতে রয়েছে।
ফলে শরিফুল তা বিকৃত বা নষ্ট করবেন, সে সম্ভাবনাও নেই।

আরো পড়ুন
হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কি হয়েছে অভিনেতার?

হুইল চেয়ারে প্রিমিয়ারে এলেন মোশাররফ করিম, কি হয়েছে অভিনেতার?

 


 
প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল, বাংলাদেশের নাগরিক শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সাইফ আলি খানের হামলাকারী? বিশেষ করে তথাকথিত একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার পর থেকে রীতিমতো প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে হয়েছিল পুলিশকে। এবার মুম্বাইয়ে নিম্ন আদালতের কাছে জামিনের আবেদনে লেখা হয়েছে, ‘এফআইআরটি স্পষ্টতই মিথ্যা এবং শরিফুলের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আবেদনকারী তদন্তে পূর্ণসহযোগিতা করেছেন। অতএব, তাকে জেলবন্দি রেখে কোনওরকম কার্যসিদ্ধি হবে না।

সাক্ষী ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও যদি অভিযুক্ত নিজের দোষ স্বীকার না করেন, তাহলেও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়- বলেছেন শরিফুলের আইনজীবী অজয় গাওয়ালি। এই ঘটনার তদন্তও প্রায় শেষ বলে জানান তিনি। শুধু তদন্তের চার্জশিট তৈরি করা বাকি রয়ে গেছে।

আরো পড়ুন
৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

৬ সিনেমায় মাতবে ঈদ, হলসংখ্যায় এগিয়ে কে?

 

গত জানুয়ারি মাসেই সাইফের বাড়ি থেকে পাওয়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট শরিফুলের সঙ্গে মেলেনি। মুম্বাই পুলিশ নবাবের বাড়ি থেকে সম্ভাব্য হামলাকারীর ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্টের নমুনা সংগ্রহ করে। সেখানে শরিফুলের আঙুলের ছাপ ছিল না। যদিও সেই ফিঙ্গারপ্রিন্টের গড়মিলের ত্বত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছিলেন মুম্বাই পুলিশের এসিপি। এবার শরিফুলের জামিনের আবেদনের খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে, শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সাইফ আলি খানের হামলাকারী? না কি পুরো ঘটনাই ছিল বানোয়াট গল্প?

গত ১৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে সাইফের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন শরিফুল। চুরির উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি প্রবেশ করেছিলেন। প্রথমেই নাকি তিনি প্রবেশ করেছিলেন সাইফপুত্র জেহ’র ঘরে। তখন কোনও মতে পালিয়েছিল জেহ। ছেলের কান্নার আওয়াজ শুনে ছুটে এসেছিলেন সাইফও। সাইফ বাধা দিতে যাওয়াতেই ঘটে যায় অঘটন। ছয়বার ছুরিকাঘাত করা হয় অভিনেতাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় লীলাবতী হাসপাতালে। সাইফের পিঠে গেঁথে ছিল ছুরির একটি টুকরো। অস্ত্রোপচার করে বার করা হয় সেই ছুরির টুকরো। পাঁচ দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান সাইফ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ