<p>একসময় ঈদ মানেই ছিল বাপ্পী চৌধুরীর ছবি। তবে গত দুই ঈদে কোনো ছবি মুক্তি পায়নি এই অভিনেতার। আসছে কোরবানির ঈদেও নেই সেই সম্ভাবনা। কী করছেন? কেমন আছেন বাপ্পী? কথা বলেছেন সুদীপ কুমার দীপ।</p> <p><strong>কেমন আছেন? অনেক দিন হলো নতুন কাজের খবর নেই।</strong><br /> গত মাসে মাকে হারানোর পর এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারিনি। আমার সব ভালো লাগা-মন্দ লাগা, জয়-পরাজয় মায়ের সঙ্গেই ভাগ করে নিতাম। এখন বাবাই মায়ের জায়গাটা দখল করে নিয়েছেন। আগে মায়ের সঙ্গে ঘুমাতাম, এখন বাবার সঙ্গে ঘুমাই। মা যেমন রাত ১১টা বাজলেই বাসায় ফেরার তাগিদ দিতেন, সেটা এখন বাবা করছেন। আমাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য পরিবারের সবাই চেষ্টা করছেন। কেন যেন আমি স্বাভাবিক হতে পারছি না। আমার ১০ বছরের ক্যারিয়ারে কখনো এমন হয়নি যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ক্যামেরার বাইরে থেকেছি। জানি, আমার দ্রুত ফেরা উচিত, কিন্তু মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারছি না।</p> <p><strong>তাহলে কি আরো অপেক্ষা করতে চান?</strong><br /> বুঝতে পারছি না। এই ঈদে আমার কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। আগামী ঈদেও সম্ভাবনা নেই। আমাকে দ্রুত ফেরানোর একটা তাড়া আছে ভক্তদের মাঝেও। মাঝখানে মধুমিতা সিনেমা হল ও মণিহার সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ ভাই ও মিঠু ভাই জিজ্ঞেস করেছেন, কেন নতুন ছবি করছি না? তাঁদেরও বলেছি, আরেকটু সময় চাই। আসলে এই মুহূর্তে যা-তা ছবি নিয়ে ফিরতে চাই না।</p> <p><strong>কেমন ছবিতে ফিরতে চান?</strong><br /> রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর রেজাল্ট দেখে বুঝতে পারছি, দর্শকের রুচি আরো বদলেছে। এটা অস্বীকার করা যাবে না, প্রতিদিনই সব কিছু পাল্টে যাচ্ছে। আমি ডিজিটাল ছবি দিয়ে শুরু করেছিলাম, এখন থ্রিডির যুগ। সামনে হয়তো আরো পরিবর্তন হবে। আগে একটা সময় ছলচাতুরী করে দর্শককে বুঝ দেওয়া যেত। এখন সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই নতুন যে ছবি দিয়ে কামব্যাক করব সেটা নিয়ে অবশ্যই প্রযোজক-পরিচালকের সঙ্গে জোর আলোচনা করতে হবে। সে জন্যও একটু সময় প্রযোজন। যে নির্মাতা নতুন করে আমাকে পর্দায় প্রেজেন্ট করতে পারবেন, যে প্রডাকশন ও গল্প নতুন বাপ্পীকে জন্ম দিতে পারবে, সেটা দিয়েই ফিরতে চাই।</p> <p><strong>এখন তাহলে সময় কাটছে কী করে?</strong><br /> আমাদের পারিবারিক ব্যবসা আছে, অফিস মতিঝিলে ও নারায়ণগঞ্জে। বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে আমি ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। মনে করেন, এখন পর্যন্ত দর্শকের হৃদয়ে বাপ্পীর যে স্থান রয়েছে সেটা বেশ ওপরে। খারাপ কোনো ছবি করে সেই অবস্থান নষ্ট করার চেয়ে দুই লাখ টাকা বেতনে একটা চাকরি করা ভালো। যে পারিশ্রমিকে আমি ‘অপারেশন জ্যাকপট’ করতে রাজি হয়েছিলাম, পরে ‘না’ করে দিলে তারা দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিতে চেয়েছিল। তবু করিনি, নিজের অবস্থানের কথা ভেবে।</p> <p><strong>ঈদের কোনো ছবি দেখেননি?</strong><br /> গরমের কারণে এবার হলে যেতে পারিনি। তবে প্রতিটি ছবিরই রিপোর্ট নিয়েছি। আমার সঙ্গে অর্ধশতাধিক হল মালিকের যোগাযোগ আছে, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়। তাঁরা প্রতিটি ছবির হল রিপোর্ট যেমন জানিয়েছেন, পর্দায় কী দেখা গেছে সেটার খুঁটিনাটিও জানিয়েছেন। বলতে পারেন, প্রতিটি ছবিই আমার নখদর্পণে।</p> <p><strong>প্রথমবার শিল্পী সমিতির নির্বাচন করলেন। বিজয়ীদের শপথ নেওয়ার দিন শিল্পী ও গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাটিকে কিভাবে দেখছেন?</strong><br /> আমি সাংবাদিকতায় পড়েছি। এই বিষয়ে আমার বিস্তারিত জানাশোনা আছে। সাংবাদিকদের কাজই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব জিজ্ঞেস করা। আপনার ভালো না লাগলে এড়িয়ে যাবেন, তাই বলে এভাবে মারধর করা তো অপেশাদার আচরণ। একজন শিল্পী সমাজের প্রতিনিধি, তিনি কিভাবে এমন কাজ করেন, সেটা আমারও প্রশ্ন।</p> <p><strong>আপাতত সিনেমা না করলেও ওটিটি প্ল্যাটফরমে কিছু করবেন?</strong><br /> একটি ওয়েব সিরিজ লক করেছিলাম। শুটিং ডেটও চূড়ান্ত হয়েছিল। হঠাৎ নিজেকে আবার গুটিয়ে নিয়েছি। মনে হলো, আমি যে গল্পটা বা যে প্রডাকশনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম সেটা এটা নয়। ছয় মাসের বেশি কাজ করিনি, আমাকে ব্র্যান্ড নিউ হয়ে ফিরে আসতে হবে। দর্শক ভালোবেসে আমাকে ‘সুলতান’ উপাধি দিয়েছে, সেই উপাধির সম্মান আমাকেই রাখতে হবে।</p>