<p>কুসংস্কার বা ভুল ধারণার সঙ্গে আমরা সব সময় জড়িয়ে রয়েছি। জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোনো না-কোনোভাবে কিছু ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো সত্য ভেবেই মেনে চলি আমরা। কিন্তু কোনটা আসলে কতটুকু সত্য তা জানতে প্রচেষ্টা চালায় বিজ্ঞান। এখানে খাবার-দাবার সম্পর্কে বহুল প্রচলিত এমনই কিছু তথ্যের সত্যতা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছে বিজ্ঞান। আমাদের অনেক ধারণাই ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এগুলো জেনে নিন। মন থেকে অহেতুক ভয় দূর করুন। </p> <p><strong>কাঠের চপিং বোর্ডে ব্যাকটেরিয়া থাকে</strong><br /> বিজ্ঞান গবেষণায় দেখেছে, এটা ভুল ধারণা। আপনি যদি নিয়তিম চপিং বোর্ডটি পরিষ্কার না করেন, তবে উন্নতমানের প্লাস্টিক চপিং বোর্ডেও জীবাণু জন্মাবে। কাজেই কাঠের বোর্ডটি ঠিকঠাকমতো পরিষ্কার করলে আর চিন্তা নেই। অন্যান্য বোর্ডের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানের ওপরও ভরসা রাখবেন না।</p> <p><strong>পানিতে লবণ মেশালে দ্রুত ফুটতে শুরু করে</strong><br /> রসায়নবিদ্যা উল্টো কথা বলে। পানিতে যত লবণই দেন না কেন, তাপে তা দ্রুত ফুটবে না। পানি যে তাপে ফুটতে শুরু করে সেই তাপ ছাড়া কোনোভাবেই আগে ফুটবে না। আসলে চুলোয় পানি দিয়ে কখন ফুটবে সে অপেক্ষায় বসে থাকতে মন চায় না। তাই যেকোনোভাবে এ ধারণা প্রচলিত হয়েছে যে, লবণ দিলে দ্রুত ফুটতে শুরু করে। এ ধারণা পুরোপুরি ভুল। </p> <p><strong>ডিমে রক্তের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় </strong><br /> দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় সম্পৃক্ত ট্রান্স ফ্যাটের কারণে। এক ডিমে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। বরং ডিমে আর যেসব পুষ্টি উপাদান থাকে তা স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই উপকারী। ডিমে ট্রান্স ফ্যাট থাকে না। থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা চোখের জ্যোতি বাড়ায়। </p> <p><strong>অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র রান্না করলে আলঝেইমার্স হয় </strong><br /> বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেহের সব অ্যালুমিনিয়াম সামলে নেয় কিডনি। এটি বরং আলঝেইমার্সের মতো রোগ প্রতিরোধ করে। স্মৃতিশক্তি চলে যাওয়ার মতো রোগ বয়সের সঙ্গে আসতে পারে। যদি অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্নার কারণে ক্ষতিকর পদার্থ উৎপন্ন হয়ও, তবুও তা কিডনি দূর করে দেয়। </p> <p><strong>এনার্জি ড্রিংক শক্তি দেয় </strong><br /> এসব পানীয়তে থাকে প্রচুর চিনি। আরো থাকে ক্যাফেইন। এই খাবারগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মস্তিষ্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এতে মনে হয় যে, দেহে শক্তি ফিরে এসেছে। এটা আসলে সাময়িক উত্তেজনা। চিনি এবং ক্যাফেইন রক্তচলাচল দ্রুত করে। ফলে এমনটা হয়। </p> <p><strong>ভাজা খাবারে হার্ট অ্যাটাক হয় </strong><br /> এর স্বপক্ষে বিজ্ঞানীরা কোনো ধরনের প্রমাণ খুঁজে পাননি। </p> <p><strong>প্রতিদিন অল্প করে ৫ বার খাওয়া উচিত </strong><br /> এতে যে ওজন কমবে বা স্বাস্থ্য বেশি ভালো থাকবে এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। দিনে যে পরিমাণেই হোক, বেশি বার খাওয়ার কারণে যে ওজন কমবে তেমন কোনো কথা নেই। </p> <p><strong>ফ্লু এবং সর্দি থেকে রক্ষা করে ভিটামিন 'সি'</strong><br /> শুনলে অবাক হবেন, তবুও বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা তাই বলছে। এ বিষয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণপত্র নেই। </p> <p><strong>কফি স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো না </strong><br /> এ নিয়ে বহু তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। তবে ক্যাফেইন আসলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে চনমনে করে দেয় দেহ-মন। কিন্তু তা স্বাস্থ্যের জন্যে মোটেও ক্ষতিকর নয়। বড় পরিসরের গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা নিয়মিত কফি খায় তাদের মধ্যে হৃদরোগের সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে ২৫ শতাংশ কম থাকে। </p> <p><strong>রান্নার পর গাঁজরের পুষ্টিমান থাকে না</strong><br /> কোনো সবজি রান্নার পর তার পুষ্টিমান হারায় না। বরং গাঁজরের আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রান্না করা হলে গাঁজর থেকে বেটা-ক্যারোটিন বেরিয়ে আসে যা চোখের জন্যে খুবই ভালো। </p> <p><strong>ত্বক ফেলে দিলে মুরগির মাংসের ক্যালরি কমে</strong><br /> মুরগির ত্বকে সব ক্যালরি থাকে তা ভুল ধারণা। আসলে মুরগির মাংসকে শুকনো রাখার জন্যে চামড়া ফেলে দেওয়া হয়। ক্যালরি কমানোর জন্যে নয়। </p> <p><strong>কার্বোনেটেড পানীয় স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো নয় </strong><br /> এটা ঠিক, তবে তা কেবল বিভিন্ন ফ্লেভারের কার্বোনেটেড পানীয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ এই পানীয়তে ফ্লেভার জুড়ে দিতে চিনি আর রাসায়নিক পদার্থ দেওয়া হয়। আর তা স্বাস্থ্যের জন্যে হুমকি। </p> <p><strong>মসলাদার খাবারে আলসার হতে পারে </strong><br /> অনেকের দেহে মসলা সংবেদনশীলতা তৈরি করে যা অস্বস্তিকর মনে হতে পারে। অনেক সময়ই একে আলসার বলে ভুল করা হয়। অনেকের দেহে বিশেষ একটা মসলা অ্যালার্জির মতো আচরণ করতে পারে। কিন্তু সব মসলাই স্বাস্থ্যকর। <br /> সূত্র : ওয়েল সেইড </p>