<p>ঢাকার সাভারে পাঁচটি খাল-বিলের মূল প্রবাহ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি জলাশয়ের মধ্যে তিনটি খাল ও দুটি বিল রয়েছে।</p> <p>এ সংক্রান্ত এক রিটে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রুলসহ এ আদেশ দেন।</p> <p>এসব খাল-বিল রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনবহির্ভূত ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। ভূমি সচিব, পরিবেশ সচিব, পানি সম্পদ সচিব, শিল্প সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ ১২ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।</p> <p>খাল তিনটি হচ্ছে- তেঁতুলঝড়া খাল, যোগী-জাঙ্গাল বা জুগী জঙ্গল খাল ও নয়নজুলী খাল। আর বিল দুটি হচ্ছে তাঁতি বিল বা শুকনা বিল ও রইপতা বা নোয়াদ্দা বিল। এই পাঁচ জলাশয় দখল-দূষণমুক্ত করে সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গত ২৮ এপ্রিল রিট করে।</p> <p>আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস. হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।</p> <p>পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বেলা জানায়, এসব খাল-বিল পুনরুদ্ধারের জন্য দখল-দূষণকারীদের তালিকা এবং সম্ভাব্য পদক্ষেপ সংবলিত সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।</p> <p>বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব খাল ও বিলের সঙ্গে ২০টি গ্রামের লক্ষাধিক গ্রামবাসীর জীবন ও জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। অবৈধ দখল ও দূষণে জনগুরুত্বপূর্ণ এসব জলাশয় অস্তিত্বসংকটে পড়েছে। এসব খাল ও বিলের অংশবিশেষ ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে বাড়িঘরসহ নানা স্থাপনা। গৃহস্থালি বর্জ্য ফেলার পাশাপাশি শিল্পমালিকেরা তাঁদের শিল্পকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এসব খাল-বিলে। এর ফলে দূষিত পানি একদিকে যেমন ফসলে পচন ধরাচ্ছে, অন্যদিকে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও পড়ছেন মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। এসব খাল-বিলের ওপর নির্ভরশীল কৃষক ও জেলে সম্প্রদায়ের বড় অংশ পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য শিল্পকারখানা সাভারে স্থানান্তরিত হওয়ায় ও নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে ওঠায় উপজেলাটির জলাশয়গুলো অস্তিত্ব হারাচ্ছে এবং এলাকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যে কারণে বেলা ওই রিট করে।</p>