<p>স্থূলকায় মানুষদের নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বিজ্ঞানীদের ধারণে, এর বিরূপ প্রভাব তাদের জিহ্বাতেও পড়ে। আর সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে তারা ইঁদুরের ওপর চালিয়েছেন গবেষণা। তাদে দেখা গেছে, জিহ্বার স্বাদগ্রন্থির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয় স্থূলতার সমস্যায়। </p> <p>কর্নেল ইউনিভার্সিটির খাদ্য বিশারদ রবিন ডান্ডো এ গবেষণা পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, স্থূলতার ক্ষেত্রে এটা নতুন ধরনের তথ্য হতে পারে। মোটা হওয়ার পর জিহ্বার স্বাদগ্রন্থি নিয়ে কেউ চিন্তা করেন না। অথচ তা মৌলিক সমস্যার একটি। </p> <p>খাবার, ব্যায়াম এবং জেনেটিক সমস্যা স্থূলতার নেপথ্যে থাকা অনেকগুলো সমস্যার একটি। তবে স্বাদ মানুষের খাদ্য তালিকা ঠিক করে দিতে ভূমিকা রাখে। তবে এর আগের এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, পাতলা মানুষ অপেক্ষা মোটা মানুষের স্বাদের প্রবলতা অনেক কম থাকে। কিন্তু সে তত্ত্ব আজও পুরোপুরি প্রমাণ হয়নি।   </p> <p>ডান্ডো এবং তার দল জিহ্বার স্বাদগ্রন্থিতে মনোযোগ দেন। জিহ্বার কোষগুচ্ছ বিভিন্ন ধরনের স্বাদ গ্রহণ করে। মিষ্টি, টক, লবণাক্ত, তিতা এবং উমামি স্বাদ গ্রহণ করে। </p> <p>গবেষণাগারে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়। তাদের প্রথমে উচ্চমাত্রার ফ্যাটজাতীয় খাবার খাওয়ানো হয়। এতে খুব দ্রুত তাদের ওজন বৃদ্ধি পায়। পরে তারা ইঁদুরের জিহ্বার কোষ পরীক্ষা করেন। দেখা গেছে, স্থূলকায় ইঁদুরগুলোর স্বাদগ্রন্থি অন্যদের চেয়ে ২৫ শতাংশ কমে যায়। এ গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল প্লাস বায়োলজি'তে। </p> <p>স্বাদগ্রন্থির কোষগুলো ক্রমাগত নিজেদের বদলাতে থাকে। ক্ষয়ে গেলে নতুনভাবে গজায়। গুচ্ছের মধ্যে মোট ৫০টি থেকে ১০০টি কোষ থাকে। গড়ে এই কোষগুলো ১০ দিন পর্যন্ত আপনাকে স্বাদ দিয়ে যায়। জিহ্বা সবগুলো স্বাদগ্রন্থি নিজেদের বদলাতে ৪ সপ্তাহের মতো সময় নেয়। কর্নেল সেন্সরি এভুলেশন ফ্যাসিলিটিতে এ পরীক্ষা চালানো হয় ইঁদুরের ওপর। </p> <p>এর জন্যে কি ফ্যাটপূর্ণ খাবার দায়ী? ডান্ডোর দল জানায়, ক্রনিক ইনফ্লামেশন দেখা দেয় স্থূলতার কারণে। তারা একটি সাধারণ ইনফ্লামাটরি মলিকিউল খুঁজে পান যার নাম টিএনএফ-আলফা। এটার কারণে অবশ্য ইঁদুর মোটা হলেও তাদের স্বাদগ্রন্থি বদলায় না। </p> <p>স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ব্যারিয়াট্রিক সার্জন ড. জন মর্টন বলেন, স্বাদের সংবেদনশীলতা এবং ওজনের মধ্যে একটা যোগাযোগ রয়েছে। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেও একটি গবেষণা চালান। সেখানে দেখা গেছে, পাকস্থলীতে সার্জারির পর রোগীদের স্বাদগ্রন্থি বদলে যায়। তবে স্বাদ যেমনই হোক না কেন, স্বাস্থ্যকর খাবার মনোযোগের সঙ্গে খেতে বলেছেন মর্টন। <br /> সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস </p>