<p>পাকিস্তানের পর এবার মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়েছে ভারত। ওই হামলায় কমপক্ষে ১০টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আনন্দবাজার জানায়, পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা নিয়ে দেশ জুড়ে চলা আলোচনার মধ্যেই মিয়ানমারে বড়সড় সামরিক অভিযান চালায় ভারতীয় সেনারা। সেনা সূত্রে খবর দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, ‘অপারেশন সানরাইস’নামে এই অভিযানে ভারতীয় সেনার সঙ্গে ছিল মায়ানমারের সেনারাও। প্রথম অভিযানটি চালানো হয় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, আর দ্বিতীয়টি ২ মার্চ।</p> <p> প্রায় ১০ দিন ধরে চলা ওই অভিযানে ১০টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলে সেনা সূত্রে খবর। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরাকান আর্মিদের তৎপরতা বাড়ছিল। এই আরাকান আর্মি মায়ানমারের সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী। মিজোরাম ও মায়ানমার সীমান্তের ঘাঁটি থেকেই জঙ্গি কার্যকলাপ চালাচ্ছিল আরাকান আর্মি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসে, ওই জঙ্গিগোষ্ঠী কালাদান প্রকল্পকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারপরই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় সেনারা।</p> <p>দুই পর্যায়ে অভিযান চালানো হয়। প্রথম পর্যায়ের লক্ষ্য ছিল মায়ানমার-মিজোরাম সীমান্তে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোকে ধ্বংস করা। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযানের লক্ষ্য ছিল নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং)-এর ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া।</p> <p>সেনার স্পেশাল ফোর্স, আসাম রাইফেলসের সঙ্গে মায়ানমার সেনারাও এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। আর ভারতীয় সেনাদের ওই হামলার সময় ড্রোন, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে জঙ্গিদের গতিবিধি নজর রাখা হচ্ছিল। জঙ্গিদের খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করার পরই হামলা চালানো হয়।</p> <p>পত্রিকাটি আরো জানায়, চীন সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে গত দু’বছর ধরে আরাকান আর্মিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি। প্রায় ৩ হাজার ক্যাডারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তার পর তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় মায়ানমারের দক্ষিণ সীমান্তে। সেখান থেকেই ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালাত আরাকান আর্মির সদস্যরা। জঙ্গিদের মদত দেওয়ার পিছনে চীনের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ ভারতের।</p> <p>কালাদান প্রকল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে আরাকান জঙ্গিরা, গোয়েন্দা সূত্রে খবর আসার পরই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় সেনারা। ভারত ও মায়ানমার, দুই দেশের ক্ষেত্রেই কালাদান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মায়ানমারের সিতে বন্দরের সঙ্গে মিজোরাম হয়ে কলকাতার সঙ্গে সংযুক্ত হবে। এই প্রকল্প চালু হলে কলকাতার থেকে মিজোরামের দূরত্ব প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার কমে যাবে।</p>