<p>পেন্টাগন জানিয়েছে, তারা দ্রুতই নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেনকে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এ জন্য প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। তবে এ প্যাকেজে প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স ব্যাটারি থাকবে না।</p> <p>প্রতিটি প্যাট্রিয়ট ব্যাটারির (পূর্ণাঙ্গ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম) দাম প্রায় এক বিলিয়ন ডলার আর প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের দাম প্রায় চল্লিশ লাখ ডলার।<br /> ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান বিমান হামলা মোকাবেলায় প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র জরুরি প্রয়োজন, ‘যা এখনই জীবন রক্ষা করতে পারে ও করা উচিত।’</p> <p>বিবিসিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার যে ৬০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছেন, তারই অংশ হিসেবে এই ছয় বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ইউক্রেনকে। শিগগিরই আরো এক বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দেওয়া হবে।</p> <p>অস্টিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে বৃহৎ নিরাপত্তা সহায়তা প্যাকেজ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে এবং খুব শিগগিরই এগুলো ইউক্রেনকে সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে আছে বিমান প্রতিরক্ষা যুদ্ধাস্ত্র, কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম এবং গোলাবারুদ (তবে প্যাট্রিয়ট নয়)।</p> <p>অস্টিন বলেছেন, ‘এটা এমন নয় যে শুধু প্যাট্রিয়ট তাদের (ইউক্রেনের) দরকার। তাদের অন্য ধরনের সিস্টেম ও ইন্টারসেপ্টর (ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা বা আকাশেই ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। আমি প্যাট্রিয়ট তৈরির বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক করব।’</p> <p>তিনি জানান, আরো ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভকে শিগগিরই দেওয়া হবে এবং এ নিয়ে ইউরোপীয় অন্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।</p> <p>ইউএস জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল চার্লস ব্রাউন বলেছেন, রণাঙ্গনে গোলার যথাযথ ব্যবহারের যে প্রয়োজনীয়তা ইউক্রেনের সেটি মেটাতে পারবে এবারের এই সহায়তা। তবে এবারের যে সহায়তা প্যাকেজ তার কিছু অংশ ব্যবহার হবে ইউক্রেনের নিজস্ব প্রতিরক্ষাশিল্প তৈরির জন্য, যাতে তারা নিজেরাই প্রয়োজনমতো গোলাবারুদ উৎপাদন করতে পারে।</p> <p>অস্টিন বলেছেন, রাশিয়া ইতিমধ্যেই তাদের গোলাবারুদ ও অন্য অস্ত্রের উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে তারা ইরান ও উত্তর কোরিয়ার সরবরাহ সহায়তাও পাচ্ছে। ইউক্রেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপর্যয়টা অনুধাবন করতে হবে। পুতিন যদি ইউক্রেনে টিকে যান, তাহলে ইউরোপ নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। রাশিয়া ইউক্রেনেই বসে থাকবে না।</p> <p>কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ইউক্রেনের বাহিনীগুলোর সুরক্ষায় ব্যবহৃত হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘অঙ্গীকারটি ছিল বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক, যদিও এখনই করতে হবে এমন কিছু নয়। সেখানে যেতে ও বিতরণ করতে কিছু সময় লাগবে। ইউক্রেন টিকে থাকতে সক্ষম তাদের সক্ষমতা দিয়েই, তারা অনেক ভালো করতে পারে।’</p> <p>ইউক্রেনের হাতে এখন পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ অল্প কিছু প্যাট্রিয়ট আর এস-৩০০-এর মতো সোভিয়েত আমলের আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র আছে। আর হাতে আছে ব্যয়বহুল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। জার্মানি এর মধ্যে অতিরিক্ত প্যাট্রিয়ট সিস্টেম সরবরাহের অঙ্গীকার করেছে।</p> <p>দেশটির প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইউরোপের অন্য দেশগুলোকে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য এ মাসের শুরুতেই আহ্বান জানিয়েছিলেন।<br /> গ্রিসের প্যাট্রিয়ট ও এস-৩০০ থাকলেও তারা সেগুলো না ছাড়ার কথা বলেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কাইরিওস মিটসোতাকিস একটি টেলিভিশনকে বলেছেন, তার দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘গ্রিসের আকাশসীমা সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সিস্টেম। তবে খবর পাওয়া যাচ্ছে, স্পেন পুরো সিস্টেম না হলেও কিছু প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে।</p> <p>সাম্প্রতিক সময়ে কিয়েভকে পশ্চিমা সহযোগিতার জন্য সোচ্চার হতে দেখা গেছে, কারণ দেশটির অস্ত্র ও গোলাবারুদ কমে আসছিল এবং রাশিয়াও কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা অনেক মানুষ মৃত্যু ও ভূখণ্ড হারানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সামরিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে হওয়া বিলম্বকেই দায়ী করেছেন।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>