<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় এখনো দুর্নীতিকে একটি প্রধান বাধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দুর্নীতি কমাতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেগুলো থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসা শুরুর সূচকে আশপাশের অনেক দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। এর জন্যও দায়ী করা হয় দুর্নীতি এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে। ব্যবসা পরিচালনায় পদে পদে বাধার মুখে পড়তে হয় উদ্যোক্তাদের। ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না বললেই চলে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর (ইউএসটিআর) শুক্রবার বৈদেশিক বাণিজ্যের বাধাবিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতেও বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতাকে।</span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশে দুর্নীতির এই চিত্র নতুন নয়। এর আগেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক গবেষণা প্রতিবেদনে দুর্নীতির এমন বহু বেদনাদায়ক চিত্র উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাংক ২০১৯ সালে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইজ অব ডুয়িং বিজনেস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে যে সূচক বা তালিকাক্রম প্রকাশ করে তাতে দেখা যায়, ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭৬তম। দক্ষিণ এশিয়ায় সবার নিচে, এমনকি আফগানিস্তানেরও (১৬৭) নিচে ছিল বাংলাদেশ। এরপর এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছিলেন, আমরা এমন অবস্থানে থাকতে পারি না। এক বছরের মধ্যে আমাদের অবস্থান তিন সংখ্যা থেকে দুই সংখ্যায় এবং দুই বছরের মধ্যে ৫০তম অবস্থানে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। চিত্র আগের মতোই রয়ে গেছে। বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০২২</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থানের এক ধাপ অবনতি হয়, অর্থাৎ ১৩তম থেকে ১২তম হয়। অর্থাৎ দুর্নীতির উন্নতি হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ দ্বিতীয়, এক নম্বরে ছিল আফগানিস্তান। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক জরিপে উঠে এসেছে একই রকম উদ্বেগজনক চিত্র। ব্যবসায়ীদের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপে দেখা যায়, ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ীই মনে করেন, ২০২২ সালে বাংলাদেশে ব্যাবসায়িক পরিবেশের আরো অবনতি হয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসার ৪৮ শতাংশ, মাঝারি আকারের ব্যবসার ৭১ শতাংশ এবং বড় ব্যবসার ৫৯ শতাংশ উদ্যোক্তাই দুর্নীতিকে প্রধান বাধা হিসেবে বিবেচনা করেন। একইভাবে ইউএসটিআরের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে বিনিয়োগের বাধা হিসেবে দুর্নীতিকে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, সরকারি দরপত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে। ঘুষ ও দুর্নীতিকে বাংলাদেশের অনেক পুরনো সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এখানে দুর্নীতিবিরোধী আইনের প্রয়োগ যথেষ্ট নয়। বাণিজ্যিক সমঝোতাগুলোর ক্ষেত্রে ঘুষ ও চাঁদা দেওয়ার অভিযোগ প্রচুর। অর্থপাচারের অভিযোগও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের কম্পানিগুলো বাংলাদেশে লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করে আসছে।</span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">সারা দুনিয়ায়ই উদ্যোক্তারা চান, তাঁদের হাতে সঞ্চিত অর্থ কোথাও না কোথাও বিনিয়োগ করতে। বিনিয়োগের এই পরিবেশ যেখানে তাঁরা ভালো দেখতে পান, সেখানেই তাঁরা বিনিয়োগ করেন। বাংলাদেশ অনেক দিন ধরে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে, কিন্তু তা হচ্ছে না। উন্নয়নকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার জন্য দেশে বিনিয়োগের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। </span></span></span></span></p>