<p>  <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-1.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> </p> <p><strong>তোফায়েল আহমেদ, এমপি </strong></p> <p><strong>মাননীয় মন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়</strong></p> <p><strong>ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তব। আমরা পোশাক রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, তা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই আমরা অর্জন করতে পারব। তবে সবাই মিলে পোশাকশিল্পকে সহায়তা করতে হবে</strong></p> <p> </p> <p>রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ২০১৩ সালে হয়েছিল, আজ ২০১৭—এই দীর্ঘ চার বছরে আমরা কিন্তু আমাদের এই ক্ষত পূরণ করেছি। পৃথিবীর কোথাও অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স নেই, শুধু বাংলাদেশে রয়েছে। অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের রিমেডিয়েশন বাবদ কারখানাপ্রতি ন্যূনতম পাঁচ কোটি টাকা খরচ হয়। বাংলাদেশে এখন বিশ্বের সেরা গ্রিন কারখানা তৈরি হচ্ছে। আমরা এরই মধ্যে ৬৭টি গ্রিন কারখানা করেছি এবং আরো প্রায় ২৮০টি গ্রিন কারখানা হওয়ার অপেক্ষায় আছে। পোশাক খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে আমাদের টেক্সটাইল খাত বিশ্বব্যাপী অনেক সুনাম অর্জন করেছে। তার পরও কারখানাগুলো পোশাকের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ও তৎকালীন সময়ে ইউরোর অবমূল্যায়নের কারণে পোশাকের দরপতন হয়েছে। এ ছাড়া টাকার মূল্যমান বেড়ে যাওয়ার কারণে বিগত বছরগুলোতে আমাদের প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ভারত পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারেরও উচিত পোশাকশিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরূপ প্রণোদনা প্রদান করা। আজকের এসব আলোচনার মধ্যে তিনটি বিষয় উঠে এসেছে—১. বিদ্যুৎ ও গ্যাস, ২. বন্দর এবং ৩. রাজস্বনীতিসংক্রান্ত। এখানে আপনারা সবাই আছেন, আমাদের মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। এনবিআরের পক্ষ থেকে আমাদের তৈরি পোশাক খাতকে যেভাবে সাহায্য করা যায়, ততটা সাহায্য করবেন। ২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভিশন নির্ধারণ করেছেন, তা হলো ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তব। আমরা পোশাক রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি, তা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই আমরা অর্জন করতে পারব। তবে সবাই মিলে পোশাকশিল্পকে সহায়তা করতে হবে। বাংলাদেশে রপ্তানি খাতে যা আয় হয়, তার ৮১ শতাংশই আসে এই পোশাকশিল্প থেকে।  যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। এই খাতকে আমরা অগ্রগতির পথে নিয়ে যাব।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>নসরুল হামিদ, এমপি</strong></p> <p><strong>মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-2.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p><strong>আগামী দিনে আমরা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের যে সংযোগগুলো দেব, সেগুলো হবে শিল্প জোনগুলোতে। অতীতে বিচ্ছিন্নভাবে শিল্প গড়ে ওঠায় সার্বিকভাবে অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়েছে</strong></p> <p> </p> <p>এ বিষয়টি ঠিক যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ট্যারিফের একটি রোডম্যাপ থাকা উচিত। কিন্তু এই রোডম্যাপটি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। কারণ মূল্য নিয়ন্ত্রণ হয় বাজারের মাধ্যমে। আগামী বছর আমাদের নতুন এলএনজি আসবে, তাই আমি আগে থেকেই বলে দিচ্ছি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ঘটবে। সে অনুযায়ী আপনাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী এপ্রিল থেকে গ্যাসের স্বল্পতা ধীরে ধীরে কমে আসবে, তাই আপনারা আগামী বছর এপ্রিল থেকে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করতে পারেন। তিন বছর লাগবে বিদ্যুতের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন হতে। তবে আগামী দিনে আমরা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের যে সংযোগগুলো দেব, সেগুলো হবে শিল্প জোনগুলোতে। অতীতে বিচ্ছিন্নভাবে শিল্প গড়ে ওঠায় সার্বিকভাবে অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা যদি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নতুন সংযোগ পেতে চান, তাহলে সরকারি অথবা বেসরকারি অর্থনৈতিক জোনগুলোতে কারখানা স্থাপন করুন। আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ২১ দিনে আবাসিক খাতে এবং ৪৫ দিনে শিল্প খাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করব। বিদ্যুতের ট্যারিফের ব্যাপারে আমরা নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছি না, কারণ সরকার এখনো বছরে ছয়-সাত হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। যেহেতু বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য স্থিতিশীল নয়, সেহেতু স্থিতিশীল মূল্য কাঠামো প্রণয়ন সম্ভব নয়। কারখানাগুলোতে আপনারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করুন, স্রেডা আপনাদের সঙ্গে থাকবে এবং অর্থায়নের ক্ষেত্রেও তারা আপনাদের সহায়তা করবে। গ্রিন কারখানার ক্ষেত্রে ইনসেনটিভ প্রদানের ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন থাকবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মো. সিদ্দিকুর রহমান</strong></p> <p><strong>সভাপতি, বিজিএমইএ</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-3.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p><strong>একদিকে চলছে পোশাকের অব্যাহত দরপতন, অন্যদিকে বিগত দুই বছরে আমাদের পোশাকের গড় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। বিগত চার বছরে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা শক্তিশালী হয়েছে ৭.৬৬ শতাংশ</strong></p> <p> </p> <p>মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ২০২১ সাল নাগাদ একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার রূপকল্প গ্রহণ করেছে। শুধু শিল্পের কাঙ্ক্ষিত বিকাশের মাধ্যমেই এই রূপকল্প অর্জন সম্ভব। আর শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজন অবকাঠামো ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ। বিশ্বব্যাংকের Doing Business ২০১৬ ইনডেক্স অনুযায়ী বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬। সরকার এই তালিকায় ৯৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে তুলে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সরকারি দপ্তরগুলোতে এখনো যে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য চলছে, তাতে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে চলছে পোশাকের অব্যাহত দরপতন, অন্যদিকে বিগত দুই বছরে আমাদের পোশাকের গড় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। বিগত চার বছরে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা শক্তিশালী হয়েছে ৭.৬৬ শতাংশ, যেখানে ভারতের  অবমূল্যায়ন হয়েছে ৪০.০১ শতাংশ, তুরস্কের ১০২ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ২৩.৫৪ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ১৫.৩৯ শতাংশ। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে স্থবিরতা, কারখানা রিমেডিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত খরচ, বৈশ্বিক পোশাক আমদানির চাহিদা হ্রাস, প্রতিযোগী দেশগুলোর সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট এবং ঘন ঘন মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে আমাদের সক্ষমতা ধরে রাখা দুরূহ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি অবকাঠামো আমাদের একটি বড় বাধা। টঙ্গী থেকে গাজীপুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশ দখল হয়ে আছে। আশুলিয়ার রাস্তাটি অনেক চেষ্টা করেও চার লেন করা সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। অথচ এ অঞ্চল থেকেই আমাদের প্রায় ২৫ শতাংশ রপ্তানি আয় অর্জিত হয়। এ ছাড়া এই শিল্পকে ঘিরে চলছে নানা অপপ্রচার। আমরা কিভাবে এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে পারি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প বাস্তবায়নে কিভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারি সেই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মো. আবুল কালাম আজাদ</strong></p> <p><strong>মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-4.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p><strong>গার্মেন্টপল্লী নির্মাণের জন্য এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুবিধাজনক স্থানে শিল্প স্থাপনের জন্য বেজা সহায়তা করতে পারে। ঢাকা বিমানবন্দরের যে উন্নয়ন হয়েছে, সেই একই বিষয়গুলো চট্টগ্রাম বন্দরেও করা সম্ভব</strong></p> <p> </p> <p>গার্মেন্টপল্লী নির্মাণের জন্য এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুবিধাজনক স্থানে শিল্প স্থাপনের জন্য বেজা সহায়তা করতে পারে। ঢাকা বিমানবন্দরের যে উন্নয়ন হয়েছে, সেই একই বিষয়গুলো চট্টগ্রাম বন্দরেও করা সম্ভব। নৌপথগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টের জন্য বাংলাদেশের অনেক টাকা বাইরে চলে যায়। আগামী দিনে আমাদের প্রচুর মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা প্রয়োজন হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তাঁর কার্যালয়ের আওতায় স্কিল ডেভেলপমেন্টের অথরিটি তৈরি হচ্ছে। জাতীয় সংসদের আগামী সেশনে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’-এর আইন পাস হবে বলে আমরা আশা করছি। শিল্প-কারখানাগুলো তাদের কারখানার ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন করতে পারে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে এগিয়ে আসতে পারে। প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য পণ্যের বহুমুখীকরণ ও গুণগত মান দিয়ে আমাদের চ্যালেঞ্জ করতে হবে। মেলা আয়োজনের বিষয়ে আমি বিডাকে বলব একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার তৈরি করতে, যেটিতে সারা পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ মেলাগুলোর উল্লেখ থাকবে এবং আমাদের ক্রেতা-বিক্রেতারা ওই ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে পারবেন। পোশাকশিল্পে প্রযুক্তির উৎকর্ষ ও রোবট ব্যবহার শুরু হয়েছে, টেকনোলজির এই চ্যালেঞ্জটি আমরা কিভাবে মোকাবেলা করব, তা আমাদের এখনই  ভাবতে হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>তপন চৌধুরী</strong></p> <p><strong>সভাপতি, বিটিএমএ</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-5.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>আমরা স্থিতিশীলতা চাই, অবকাঠামো চাই। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে পোশাকশিল্প সুরক্ষায় দুই বছরের জন্য পোশাক রপ্তানির এফওবি মূল্যের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদানের দাবি উত্থাপিত হয়েছে, সত্যিকার অর্থে প্রাইমারি টেক্সটাইল খাতের জন্যও এই প্রণোদনা প্রয়োজন। সরকারকে বিশেষ করে ধন্যবাদ দিতে চাই নব্বইয়ের দশকে এই প্রণোদনাগুলো দেওয়া হয়েছিল বলেই আজ পোশাকশিল্পের এই উন্নতি। বর্তমানে আমরা একটা আপৎকালীন ট্যাক্স ইনসেনটিভ চাচ্ছি, কিছু প্রণোদনা চাচ্ছি। কারণ আমরা যাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি, তারা যে ধরনের ইনসেনটিভ পাচ্ছে, তারা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমাদের আর অন্য বিকল্প নেই।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>ড. জামালউদ্দিন আহমেদ</strong></p> <p><strong>পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-6.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>রিজার্ভের ফান্ড থেকে কিছুটা ব্যবহার করে শিল্পের জন্য আধুনিক টেকনোলজি আনার বিষয়ে একটি নীতি হতেই পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে রিজার্ভ আছে, সেটা দিয়ে শিল্পের কারিগরি উৎকর্ষ কিভাবে ত্বরান্বিত করা যায়, এ রকম একটি প্রস্তাব আপনারা আনতে পারেন। আগামী দিনে টেকনোলজি বিষয়টি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অটোমেশনের একটি অংশ হচ্ছে দক্ষতা উন্নয়ন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনে এখন অটোমেশন হচ্ছে, অন্যান্য দেশেও হচ্ছে। তাই আমাদের টেকনোলজিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিনিয়োগ দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ব্যবহারে আপনারা যে প্রস্তাব উঠিয়েছেন, আমার মনে হয় এটা খুব বড় কোনো বিষয় নয়। এটা দেশের স্বার্থেই করতে হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>ড. আহসান এইচ মনসুর</strong></p> <p><strong>নির্বাহী পরিচালক, পিআরআই</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-7.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>বাংলাদেশের একটা সমস্যা হচ্ছে রেগুলেটরি আনপ্রেডিকটেবিলিটি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা দেখি, যেখানে নীতি আছে সেখানে নীতিটাকে প্রয়োগ করা হচ্ছে না। অর্থাৎ যার সক্ষমতা আছে, রেভিনিউ সোর্স ভালো, তার ওপর আরো বেশি করে আমরা কর আরোপ করে দিচ্ছি, চেপে ধরছি। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করতে হবে। যদিও সম্প্রতি বাজেটে অনেক নিশ্চয়তা এসেছে, তার পরও দেখা যায় যে আনপ্রেডিকটেবিলিটি কমে না, কারণ রাজস্ব বোর্ড এটি গোপনীয়তার সঙ্গে পরিবর্তন করে। এখানে গোপনীয়তার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। কোথায় কোথায় পরিবর্তন হবে, সেটা সবাইকে ছয় মাস আগেই বলে দেওয়া উচিত প্রস্তাবনা হিসেবে। এখানে সরকার দিকনির্দেশনা দিতে পারে যে আগামী পাঁচ বছর কিভাবে শুল্ক বৃদ্ধি পাবে। ভালোভাবে রেগুলেটরি রিফর্মের চিন্তাভাবনা করা উচিত, যেখানে প্রেডিকটেবিলিটিকে আমরা নিশ্চিত করতে পারি, রেগুলেটরি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্টগুলো করতে পারি। প্রতিটি আইনই এবং প্রতিটি জটিল ইকুয়েশনকে কনসালটেশনের মাধ্যমে নিয়ে আসা উচিত।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মোহাম্মদ হোসাইন</strong></p> <p><strong>মহাপরিচালক, পাওয়ার সেল, বিদ্যুৎ বিভাগ</strong></p> <p><strong>জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-8.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>বিগত আট বছরে আমাদের বিদ্যুৎ খাতের অভাবনীয় সাফল্য হয়েছে, আমাদের গ্রাহকসংখ্যা দিগুণের বেশি বেড়েছে। বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ পৌঁছেছি। আর সঞ্চালন লাইন বিতরণের যে সীমাবদ্ধতা, সেটা আমরা অস্বীকার করি না। তবে এটাও যে অগ্রসর হচ্ছে না তা নয়। বিগত আট বছরে উল্লেখযোগ্য হারে সাবস্টেশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা বিতরণ লাইন নির্মাণ করেছি। তবে বাংলাদেশ যেভাবে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে, সে অনুযায়ী আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এখন বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে ‘সংযোগ দেওয়া যাবে না’—এই কথাটি আর খুব একটা নেই, যদি না সেখানে সঞ্চালনের সক্ষমতার অভাব থাকে। ইজ অব ডুয়িং বিজনেস নিশ্চিত করতে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে ২২টি ধাপ থেকে ১২টি ধাপে নামিয়ে এনেছি। আমাদের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক সুন্দরভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। যেহেতু আমাদের দেশ অত্যন্ত জনবহুল এবং আমাদের জমির স্বল্পতা রয়েছে, সে কারণে আমাদের সব কিছু সীমিত পরিসরে ভাবতে হয়। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে আমরা মনে করি যে আমাদের শিল্প-কারখানাগুলো গ্রিন এনার্জি তৈরি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনারা কো-জেনারেশন ও ট্রাই-জেনারেশন পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন। এতে আপনাদের উৎপাদন খরচ কমবে এবং আমাদের প্রাইমারি জ্বালানি সম্পদ কম খরচ হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>আনিসুর রহমান সিন্হা</strong></p> <p><strong>সাবেক সভাপতি, বিজিএমইএ</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-9.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p><strong>বাংলাদেশের বাজারে ক্রমাগত মূল্য কমে যাওয়া, যার মূল কারণ হচ্ছে ইমেজ সংকট। বর্তমানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের মূল্য বিশ্বে সর্বনিম্ন। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকের পরিমাণ বাড়লেও মূল্য বাড়েনি, উল্টো কমেছে</strong></p> <p> </p> <p>বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক নেতৃত্বের পর্যায়ে একটি ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কাঠামোকেও পরিবর্তন করবে। বিশেষ করে সাব-সাহারান দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ডিউটি ফ্রি সুবিধা পেয়ে থাকে, কিন্তু বাংলাদেশ তা পায় না। অদূর ভবিষ্যতে এই আফ্রিকান দেশগুলো থেকে পোশাকের আমদানি বাড়তে থাকবে। যদি ন্যূনতম দুই বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা আফ্রিকায় চলে যায়, তার দেড় বিলিয়নই বাংলাদেশ থেকে যাবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের বাজারে ক্রমাগত মূল্য কমে যাওয়া, যার মূল কারণ হচ্ছে ইমেজ সংকট। বর্তমানে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের মূল্য বিশ্বে সর্বনিম্ন। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকের পরিমাণ বাড়লেও মূল্য বাড়েনি, উল্টো কমেছে। বিশ্বব্যাপী পোশাকশিল্পের মূল চ্যালেঞ্জ মূলত দুটি—একটি হলো ফাস্ট টু ফ্যাশন, অন্যটি হলো ফাস্ট টু মার্কেট। ফাস্ট টু ফ্যাশনে আমরা খুব দ্রুত মানিয়ে নিয়েছি, কিন্তু ফাস্ট টু মার্কেট বিষয়টিতে আমরা পিছিয়ে রয়েছি শুধু আমাদের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে, যা পূরণ করতে না পারলে আমরা বিশ্ববাজারে ক্রমেই প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাব। আরেকটি বিষয় হলো শিল্প-অবান্ধব ট্রেড ইউনিয়ন কালচার, যার ফলে ক্রমাগত বিভিন্ন রকম অপতৎপরতা চলছে। শ্রম মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ ও শ্রমিকনেতাদের সমন্বয়ে যদি একটি কমিটি গঠন করা যায়, তাহলে তা একই সঙ্গে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি যেমন তৈরি করবে, তেমনি অপপ্রচারও রোধ হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মোহাম্মাদ নাছির</strong></p> <p><strong>সহসভাপতি (অর্থ), বিজিএমইএ এবং অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-10.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি পোশাক শিল্প একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সদ্যঃসমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বিগত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে, যা ছিল মাত্র ০.২০ শতাংশ। রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি সরকারের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭.৩৪ শতাংশ কম অর্জিত হয়েছে। অথচ বিগত ১০ অর্থবছরে আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ । আর ২০২১ সাল নাগাদ ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা আমরা নির্ধারণ করেছিলাম, তা অর্জন করতে এখন প্রয়োজন বার্ষিক ১৫.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। বর্তমানে পোশাক খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে—টাকার শক্তিশালী অবস্থান, চট্টগ্রাম বন্দরে স্থবিরতা, চট্টগ্রাম বন্দরে হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট স্বল্পতা, ঢাকা বিমানবন্দরে কার্গোজট ও হ্যান্ডলিং সক্ষমতার অভাব, পোশাকের দরপতন ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, কারখানা রিমেডিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত খরচ, বৈশ্বিক পোশাক আমদানির চাহিদা হ্রাস, প্রতিযোগী দেশগুলোর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, ভারত সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ঘন ঘন মূল্যবৃদ্ধি, পোশাক খাতকে ঘিরে নেতিবাচক প্রচারণা এবং সর্বোপরি নীতি স্থিতিশীলতার অভাব। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রধান প্রধান করণীয় বিষয় হলো—পোশাক রপ্তানির ওপর উৎসে কর আগামী দুই বছরের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার এবং আগামী দুই বছরের জন্য পোশাক রপ্তানির এফওবি মূল্যের ওপর প্রচলিত সুবিধাগুলোর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করা। রপ্তানিসংশ্লিষ্ট স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট মওকুফ, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য অপরিবর্তিত রাখা, চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল বন্দর ও ঢাকা বিমানবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ইকুইপমেন্ট সরবরাহ ও জনবল বৃদ্ধি, ব্যাংকিংসংক্রান্ত কিছু সুনির্দিষ্ট বিধিমালার পরিবর্তন, নতুন বাজার সম্প্রসারণে পদক্ষেপ গ্রহণ, কারখানা আধুনিকায়নে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং সর্বোপরি নীতি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া পানির বিকল্প উৎস তৈরি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মিয়া মো. আবু ওবায়দা</strong></p> <p><strong>অতিরিক্ত কমিশনার, কাস্টমস বন্ড</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/kalerkantho-11.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>বর্তমানে আমাদের বন্দরগুলো যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে। আমরা অডিট, নবায়নসহ খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছি। এখন আমরা ব্যাংক থেকে ইআরসি নিয়ে খুব দ্রুততম সময়ে অডিট করছি। আমরা খুব নিবিড়ভাবে অডিট কার্যক্রম মনিটর করছি, কোনো আবেদন পেন্ডিং আছে কি না তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। অডিটের প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ হয়েছে এবং দলিলাদির প্রয়োজন অনেক কমে এসেছে। আগে বিভিন্ন স্টেশনে তথ্য চাইত, সেই তথ্যটি এখন চাচ্ছে না। শুধু ইআরসির তথ্য ও লিয়েন ব্যাংকের তথ্য নিয়েই আমরা অডিট কমপ্লিট করছি।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>শাজাহান খান, এমপি</strong></p> <p><strong>মাননীয় মন্ত্রী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-18.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p> </p> <p><strong>পদ্মা সেতুর সঙ্গে আমাদের দুটি বন্দরের সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হচ্ছে, যার একটি হচ্ছে পায়রা, অন্যটি মোংলা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আমার অনুরোধ, কাস্টমসের জনবল বৃদ্ধি করবেন, আর খুলনা থেকে কাস্টমস অফিসটি মোংলায় স্থানান্তর করবেন</strong></p> <p> </p> <p>আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং আমাদের এই চলমান প্রচেষ্টার ফলে ২০০৯ সালে যেখানে ১০ লাখ টিউজ হ্যান্ডলিং হতো, সেখানে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ২৩ লাখ পাঁচ হাজার টিউজ হ্যান্ডলিং করছি। চট্টগ্রাম বন্দরকে আমরা অটোমেশনের আওতায় এনেছি। গত ৮ তারিখে আমরা পতেঙ্গা টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি এবং পতেঙ্গা টার্মিনালের কাজটি আশা করি আমরা দেড় বছরের মধ্যে সমাপ্ত করতে পারব। একই সঙ্গে বে টার্মিনালের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ করে এনেছি। পানগাঁওয়ে আমরা একটি নতুন টার্মিনাল করেছি। মোংলা বন্দরের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছি। পদ্মা সেতুর সঙ্গে আমাদের দুটি বন্দরের সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হচ্ছে, যার একটি হচ্ছে পায়রা, অন্যটি মোংলা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আমার অনুরোধ, কাস্টমসের জনবল বৃদ্ধি করবেন, আর খুলনা থেকে কাস্টমস অফিসটি মোংলায় স্থানান্তর করবেন। আমাদের বন্দরে প্রায় ৪৮ শতাংশ খালি কনটেইনার রাখতে হচ্ছে। আপনারা যদি এগুলো ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে ভালো হয়। দেশের সার্বিক উন্নয়নে মালিক, শ্রমিক, সরকার, সাংবাদিক, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছে, সবাইকে একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মো. শাহিরয়ার আলম, এমপি</strong></p> <p><strong>মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-19.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p><strong>বাংলাদেশের মতো এত পরিষ্কার পোশাক পৃথিবীর আর কোথাও তৈরি হয় না। আমাদের পণ্যের মূল্য নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে বসা উচিত এবং কথা বলা উচিত</strong></p> <p> </p> <p>রানা প্লাজা দুর্ঘটনার মাধ্যমে আমাদের পোশাকের মূল্য কমিয়ে আনার একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। আমাদের পোশাকের মূল্যবৃদ্ধির দিকে আরো নজর দিতে হবে। কমার্শিয়াল ডিপ্লোমেসিতে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন বাজার সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু নতুন বাজারগুলোতে প্রতিষ্ঠিত কারখানাগুলো যেতে চায় না। আমাদের এ ধরনের ধ্যানধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি রাশিয়া, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, আরমেনিয়া ও আজারবাইজানের সমন্বয়ে গঠিত ইউরো এশিয়ান ইকোনমিক কমিশনের সঙ্গে এই দেশগুলোতে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা প্রাপ্তির জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠক করেছি। আগামী এক বছরের মধ্যে এর সুফল পেতে পারি। তুরস্কের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কথাবার্তা চলছে। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রিফারেনশিয়াল ট্রেডের আওতায় পোশাকপণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধার জন্য কাজ করছি। একই সঙ্গে আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপর নজর রাখতে হবে, বিশেষ করে ভারত, ভিয়েতনাম, চীন ও কম্বোডিয়া। রানা প্লাজা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৫+৩ সভার মাধ্যমে আমাদের শিল্প পুনর্গঠনের কাজটি এগিয়ে নিয়ে গেছি, সাসটেইনেবিলিটি কম্প্যাক্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা যে অর্জন সাধন করতে পেরেছি, তাতে বলা যায় যে বাংলাদেশের মতো এত পরিষ্কার পোশাক পৃথিবীর আর কোথাও তৈরি হয় না। আমাদের পণ্যের মূল্য নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে বসা উচিত এবং কথা বলা উচিত।</p> <p> </p> <hr /> <p> </p> <p><strong>সফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন)</strong></p> <p><strong>সভাপতি, এফবিসিসিআই</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-20.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>বর্তমানে বাংলাদেশে পোশাকশিল্পে আমরা অনেক ভালো কাজ করছি, যা সঠিকভাবে ব্র্যান্ডিং হচ্ছে না। আমরা যদি সব নেতিবাচক প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে একত্র হয়ে দাঁড়াই তাহলেই আমরা ইমেজ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারব</strong></p> <p> </p> <p>প্রচলিত যে বাজারগুলো রয়েছে, সেখানে আমাদের এখনো অনেক সুযোগ বাকি রয়েছে। এখনো আমরা বেসিক টি-শার্ট, পোলো শার্ট ও টপস-বটমসের মধ্যে পড়ে আছি, যা মূলত কটন বেইজড। সুতরাং পণ্য বহুমুখীকরণ এখন অনেক বেশি জরুরি। লাতিন আমেরিকায় বাজার সম্প্রসারণের জন্য বিজিএমইএ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও সিআইএস দেশগুলোতে ব্যাপক বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। যেহেতু সম্প্রতি রাশিয়া ডাব্লিউটিওর সদস্য হয়েছে, সুতরাং এলডিসি হিসেবে রাশিয়ায় আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে পারি। তুরস্কের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে পোশাকশিল্পে আমরা অনেক ভালো কাজ করছি, যা সঠিকভাবে ব্র্যান্ডিং হচ্ছে না। আমরা যদি সব নেতিবাচক প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে একত্র হয়ে দাঁড়াই তাহলেই আমরা ইমেজ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কমিউনিটির সঙ্গে ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছে, কমপ্যাক্ট নিয়ে কাজ করছে, আইএলওর সঙ্গে কাজ করছে। আমরা আমাদের ভালো উদ্যোগগুলো অব্যাহত রাখব। সরকারের নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করে বলব, দয়া করে আমাদের একটি স্থিতিশীল নীতি প্রদান করুন।</p> <p> </p> <hr /> <p> </p> <p><strong>মো. নজিবুর রহমান</strong></p> <p><strong>চেয়ারম্যান, এনবিআর</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-21.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>বিজিএমইএ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আলোচনার ভিত্তিতে আরো কী প্রয়োজন তা নির্ধারণ করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। এখন প্রয়োজন বিজিএমইএর পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডকে সহায়তা করা। কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা হতে পারে</strong></p> <p> </p> <p>বাজেট প্রণয়নে আমরা সায়েন্টিফিক মেথড ফলো করে থাকি, কোথা থেকে রাজস্ব আসবে সে অনুযায়ী আমরা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ও রাজস্বনীতি নির্ধারণ করে থাকি। তবে বাজেটের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরই গার্মেন্টশিল্পকে বিশেষ ছাড় দেওয়ার নির্দেশনা দেন। তাই অন্যরা যেখানে ৩৫ শতাংশ কর দেয়, আপনারা এই বাজেটে দিচ্ছেন ১২ শতাংশ এবং গ্রিন কারখানাগুলো দিচ্ছে ১০ শতাংশ। উেস কর সবাই দিচ্ছে ১ শতাংশ, আপনারা দিচ্ছেন ০.৭০ শতাংশ। এগুলো অব্যাহত থাকবে। বিজিএমইএ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আলোচনার ভিত্তিতে আরো কী প্রয়োজন তা নির্ধারণ করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। এখন প্রয়োজন বিজিএমইএর পক্ষ থেকে রাজস্ব বোর্ডকে সহায়তা করা। কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা হতে পারে। একটি হচ্ছে স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করা, যেন কোনো অস্বচ্ছতা না থাকে। কোনো ধরনের বন্ড অপব্যবহার যাতে না হয়। দ্বিতীয় যে বিষয় তা হলো সব সময় আমাদের পারস্পরিক তথ্য বিনিময়। বিভিন্ন শিল্পে যে বিদেশি কর্মী বা ব্যবস্থাপক নিয়োজিত আছেন, তাঁদের করের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে বিজিএমইএর সঙ্গে আমরা পার্টনারশিপ ডায়ালগে বসব। গার্মেন্টশিল্পের জন্য যা যা প্রয়োজন সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করব।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>ড. মুস্তাফিজুর রহমান</strong></p> <p><strong>সম্মানিত ফেলো, সিপিডি</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-22.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>চট্টগ্রাম পোর্ট, মোংলা পোর্ট ও পায়রা পোর্ট দিয়ে আমদানি-রপ্তানি সহজ করতে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। পদ্মা সেতু থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল যদি আমরা পেতে চাই তাহলে সেখানে শিল্পায়ন করতে হবে। লাতিন আমেরিকার বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে, ভারত ও চীনেও তৈরি পোশাক অনেক আমদানি হয়, এটি একটি বড় সম্ভাবনা</strong></p> <p> </p> <p>আমরা একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। ক্রান্তিকাল দুইভাবে মোকাবেলা করা যায়—একটি হলো চ্যালেঞ্জ হিসেবে, আরেকটি হলো অপরচুনিটি হিসেবে। আমি দ্বিতীয়টিতে বিশ্বাসী, কারণ বাংলাদেশের এই সেক্টরটির একটি অমিত সম্ভাবনা আছে। আমরা রানা প্লাজার  পরে যে উদ্যোগগুলো নিয়েছি, সেটা মার্কেটিং করতে হবে। উদ্যোক্তারা তাঁদের কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য ও শ্রম পরিস্থিতি উন্নয়ন করার জন্য অনেক কিছুই করেছেন। ভ্যালু চেইনের অন্য জায়গাগুলোতে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পোর্ট, জ্বালানি সরবরাহ—এ জায়গাগুলোতে যদি প্রস্তুতিগুলো দ্রুততর করতে পারি তাহলে বিশ্ববাজারের সুযোগটা আমাদের রয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে ওঠা পোশাকশিল্পের এবং তার বিভিন্ন ধরনের সহায়ক শিল্পগুলোকে দ্রুততরভাবে ইকোনমিক জোনগুলোতে নিয়ে যেতে হবে। চট্টগ্রাম পোর্ট, মোংলা পোর্ট ও পায়রা পোর্ট দিয়ে আমদানি-রপ্তানি সহজ করতে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। পদ্মা সেতু থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল যদি আমরা পেতে চাই তাহলে সেখানে শিল্পায়ন করতে হবে। লাতিন আমেরিকার বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে, ভারত ও চীনেও তৈরি পোশাক অনেক আমদানি হয়, এটি একটি বড় সম্ভাবনা। আজকাল ডিপ্লোমেসি হলো ইকোনমিক ডিপ্লোমেসি। এই জায়গাগুলোতে আমাদের প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আছে। ভারত গত কয়েক বছরে তাদের বস্ত্রশিল্পকে সহায়তা প্রদানের জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে তারা একটি বিরাট কম্পিটিটর হিসেবে আসবে। আমাদের যে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় ইনসেনটিভ দরকার হয়। দক্ষতা যদি আমরা বাড়াতে পারি এবং অন্যান্য জায়গায় ঠিক বিনিয়োগগুলো করি তাহলে এ ধরনের ইনসেনটিভ ততটা হয়তো দরকার হবে না। আমরা যদি ফরওয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড শিল্প মিলে পণ্য প্রস্তুত করতে পারি তাহলে ৫০ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট অর্জন করা যাবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>ড. মোহাম্মদ তামিম</strong></p> <p><strong>অধ্যাপক, পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং, বুয়েট এবং সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-23.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>প্রাইস স্টেবিলিটি অর্থাৎ বিদ্যুৎ বা জ্বালানির যে মূল্য, তার চেয়ে তার স্থিতিশীলতা আমাদের প্রবৃদ্ধির জন্য একটা বিরাট ফ্যাক্টর। কারণ এটা যদি আনপ্রেডিক্টেবল হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা অস্থির থাকেন, তাঁরা জানেন না যে কী করবেন</strong></p> <p> </p> <p>গত বছর আমাদের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে ০.২০ শতাংশ এবং কোনো ইনভেস্টমেন্ট হয়নি। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, গত পাঁচ বছরে যা ইনভেস্টমেন্ট হয়েছে এবং যা প্রবৃদ্ধি হয়েছে তা মূলত দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে হয়েছে। সরকারকে কতগুলো সিদ্ধান্ত পরিষ্কারভাবে এখনই জানানো উচিত। বিদ্যুতের ব্যাপারে সরকার কি ক্যাপটিভ রাখবে, নাকি গ্রিড থেকে দেবে, এটা একেবারে পরিষ্কার একটা পলিসি নেওয়া উচিত। আমি মনে করি ক্যাপটিভ রাখতে হবে, কারণ এর বিকল্প আসলে খুব ভালো কিছু নেই। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, প্রাইস স্টেবিলিটি। প্রাইস স্টেবিলিটি অর্থাৎ বিদ্যুৎ বা জ্বালানির যে মূল্য, তার চেয়ে তার স্থিতিশীলতা আমাদের প্রবৃদ্ধির জন্য একটা বিরাট ফ্যাক্টর। কারণ এটা যদি আনপ্রেডিক্টেবল হয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা অস্থির থাকেন, তাঁরা জানেন না যে কী করবেন। প্রয়োজনবোধে সেখানে ভর্তুকি দিয়ে হলেও স্থিতিশীলতা আনতে হবে। আর যত দ্রুত আমরা তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে বেরিয়ে আসতে পারব, তত ভালো। অবকাঠামোতে আমরা পিছিয়ে আছি। পদ্মা সেতু আমাদের এখানে অবকাঠামোতে একটি বিশাল বিনিয়োগ। তার সঙ্গে যেটা দরকার সেটা হলো খুলনা, মোংলা, পায়রা—এসব বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। সেখানে আমাদের আর কী কী অবকাঠামো লাগবে, তার বিশদ পরিকল্পনা আগে থেকেই করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে যদি আমরা লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই, তাহলে আমাদের এই বড় সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>আব্দুস সালাম মুর্শেদী</strong></p> <p><strong>সাবেক সভাপতি, বিজিএমইএ এবং সভাপতি, ইএবি</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-27.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আমার প্রশ্ন, একটি কারখানার কারণে যখন একটি  গ্রুপ অব কম্পানিজের অন্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন সেই ভালো কারখানাগুলোর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে—এটা কি যুক্তিযুক্ত?</strong></p> <p> </p> <p>বর্তমান সময়ে মূল চ্যালেঞ্জ হলো পোশাকের মূল্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং সে বিষয়ে কাজ করা। আমি কিছু প্রস্তাব রাখতে চাই : ক্ষুদ্র, মাঝারি ও নারী উদ্যোক্তা, যাঁরা চাইলেও খুব দূরে তাঁদের কারখানা সরিয়ে নিতে পারবেন না, তাঁদের জন্য ঢাকার আশপাশে কোথাও কারখানা রিলোকেশনের ব্যবস্থা করে দিলে তাঁরা উপকৃত হবেন। বন্ডের অটো নবায়ন হচ্ছে না। আমি এনবিআরের চেয়ারম্যান মহোদয়কে অনুরোধ করব, অটো নবায়নের ব্যবস্থা করবেন। এই মুহূর্তে গভীর সমুদ্রবন্দরের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো বিশেষভাবে প্রয়োজন, কারণ এটি নিরাপদ ও ব্যয়সাশ্রয়ী। শুধু সড়ক যোগাযোগের ওপর নজর দিলেই হবে না, আমাদের আইসিডি ও রেল যোগাযোগের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আমার প্রশ্ন, একটি কারখানার কারণে যখন একটি গ্রুপ অব কম্পানিজের অন্য অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন সেই ভালো কারখানাগুলোর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে—এটা কি যুক্তিযুক্ত? ব্যাংকের এই নীতির পরিবর্তন দরকার। বিভিন্ন বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে কারখানা রিমেডিয়েশন ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের জন্য ১ শতাংশ সুদে আসা অর্থ আমরা কারখানা পর্যায়ে ৯ শতাংশ সুদে পাই। আমার প্রশ্ন হলো, কেন এত উচ্চ সুদে আমাদের কাছে পৌঁছায়? বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতির কারণে আমরা তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ডেফার্ড পেমেন্টে মেশিন আমদানির সুবিধা ভোগ করতে পারছি না। এ ছাড়া ব্রেক্সিট-পরবর্তী পাউন্ডের দরপতন, ইউরোর দরপতন ইত্যাদি অভিঘাত থেকে রপ্তানিমুখী খাতগুলোর সুরক্ষার জন্য বিশেষ রপ্তানি মুদ্রানীতি প্রণয়নের অনুরোধ জানাচ্ছি।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>পবন চৌধুরী</strong></p> <p><strong>নির্বাহী চেয়ারম্যান, বেজা</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-24.jpg" /></strong></p> <p><strong>২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা কমপক্ষে তিন হাজার একর জমি শুধু গার্মেন্ট ও টেক্সটাইলে বরাদ্দ করতে পারব। এ জন্য আমরা মিরসরাইয়ের মতো বড় ধরনের একটি জোনে গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল ভিলেজ হিসেবে আলাদা জায়গা চিহ্নিত করেছি এবং সেখানে জমি বরাদ্দ শুরু করেছি</strong></p> <p> </p> <p>পোশাক খাতের জন্য এরই মধ্যে আমরা প্রায় ৫৬৭ একর জমি বরাদ্দ করেছি। আরো ৫০০ একর কনফার্ম করার পথে আছি। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল খাতে বিনিয়োগের জন্য দেড় হাজার একরের ওপরে রিকুইজিশন আছে এবং আমরা আশা করছি, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা কমপক্ষে তিন হাজার একর জমি শুধু গার্মেন্ট ও টেক্সটাইলে বরাদ্দ করতে পারব। এ জন্য আমরা মিরসরাইয়ের মতো বড় ধরনের একটি জোনে গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল ভিলেজ হিসেবে আলাদা জায়গা চিহ্নিত করেছি এবং সেখানে জমি বরাদ্দ শুরু করেছি। সেখানে ৪৬৫ কোটি টাকায় সাবস্টেশন নির্মাণ করা হবে, ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ করার কথা আছে। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি নিজস্ব অর্থায়নে ২০০ এমএমসিএম গ্যাসের জন্য ডেডিকেটেড পাইপলাইন স্থাপন করছে এবং বেজা নিজস্ব অর্থায়নে আরো ৩০০ এমএমসিএম গ্যাস পাইপলাইন বসানোর কাজ করছে। সেখানে এর মধ্যেই দুটি বিদ্যুতের লাইন পৌঁছাতে পেরেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সেখানে সার্ফেস ওয়াটারের জন্য দুই হাজার একরের মতো জমিতে ওয়াটার রিজার্ভার করছি। আমরা চট্টগ্রাম পোর্টে যেন ৪০-৪৫ মিনিটে যেতে পারি সে জন্য আরেকটি রাস্তা করছি। বিজিএমইএর জন্য বেজার ইকোনমিক জোন হবে একটি ‘কমপ্লিট সলিউশন’। বর্তমান শিল্প-কারখানা রিলোকেট করার ক্ষেত্রে অনেক প্রস্তুতি এখানে আছে। ইকোনমিক জোনে আপনাদের বিনিয়োগ অত্যন্ত লাভজনক হবে, সাশ্রয়ী হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>শ্যামল দত্ত</strong></p> <p><strong>সম্পাদক, দৈনিক ভোরের কাগজ</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-25.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>মিডিয়া হ্যান্ডলিংয়ের ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। আমাদের পোশাকশিল্প একই সঙ্গে রাজনীতিরও শিকার। আমরা যতই কমপ্লায়েন্স মেনে চলি না কেন, বিশ্ববাজারে আমরা বিশেষ কোনো সুবিধা আদায় করতে পারি না</strong></p> <p> </p> <p>আজকের আলোচনার মূল বিষয় পোশাকশিল্পের বর্তমান ও করণীয় এবং সে বিষয়ে গণমাধ্যমের কী ভূমিকা, তা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই। আমাদের গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ কিভাবে হওয়া উচিত সেটির কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং পোশাকশিল্প এর মধ্যে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের নেতিবাচক প্রচারণার শিকার বিজিএমইএ ও পোশাকশিল্প, সেগুলোকে মোকাবেলা করার জন্য বিজিএমইএর কোনো স্ট্র্যাটেজি নেই। মিডিয়া হ্যান্ডলিংয়ের ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। আমাদের পোশাকশিল্প একই সঙ্গে রাজনীতিরও শিকার। আমরা যতই কমপ্লায়েন্স মেনে চলি না কেন, বিশ্ববাজারে আমরা বিশেষ কোনো সুবিধা আদায় করতে পারি না। পোশাকের ক্রেতাগোষ্ঠী তাদের নিজেদের দেশে যে আইন মেনে চলে না, তা বাংলাদেশে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রথম সারির পোশাক কারখানা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি এবং বিস্মিত হয়েছি। আমি দেখেছি, অনেক বিদেশি কর্মকর্তা, ডিজাইনার এই কারখানাগুলোতে কাজ করছেন। আমি এমন কারখানাও দেখেছি, যেখানে একসঙ্গে সাড়ে তিন হাজার লোক লাঞ্চ করতে পারে এবং পাঁচ হাজারেরও বেশি লোক একসঙ্গে কাজ করতে পারে প্রতিটি ফ্লোরে। প্রায় ১০ হাজার লোক এটিএম কার্ড ব্যবহার করছে। মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করছে। এ বিষয়গুলো বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেও বিরল। সুতরাং এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জায়গাটাতে উদ্ভূত বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>আসিফ ইব্রাহীম</strong></p> <p><strong>সাবেক সভাপতি, ডিসিসিআই</strong></p> <p><strong><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-26.jpg" style="height:483px; width:800px" /></strong></p> <p><strong>সোর্স ট্যাক্সের বিষয়টিকে পলিসিগতভাবে দেখতে হবে। অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্পের যেসব অবদান আছে, সেটা বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদে শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে কী কী করা যায়, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এনবিআর যদি বিষয়টি দেখে এবং পলিসি নেয় তাহলে শিল্পের জন্য মঙ্গলজনক হবে</strong></p> <p> </p> <p>আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আমাদের যে প্রবৃদ্ধি ছিল তা ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে আসছে। আমাদের এগিয়ে যেতে হলে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রণোদনার ব্যাপারটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিযোগী দেশগুলোতে যে প্রবৃদ্ধিটা হয়েছে, সেটার মূল কারণ তাদের মুদ্রার অবমূল্যায়ন। পক্ষান্তরে আমাদের টাকার শক্তিশালী অবস্থানটি দেখতে পাই। আমি মনে করি টাকাকে মুক্তবাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত। সোর্স ট্যাক্সের বিষয়টিকে পলিসিগতভাবে দেখতে হবে। অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্পের যেসব অবদান আছে, সেটা বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদে শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে কী কী করা যায়, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে এনবিআর যদি বিষয়টি দেখে এবং পলিসি নেয় তাহলে শিল্পের জন্য মঙ্গলজনক হবে। রানা প্লাজার পরে আমরা যে রিমিডিয়েশন প্রক্রিয়াগুলো করেছি, সেটা আমাদের মার্কেটিং করতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ায় আমাদের যে নেতিবাচক ক্যাম্পেইনগুলো হয়, সেগুলোর বিষয়ে আমাদের আরো অনেক সক্রিয় হতে হবে। বিদেশি অঙ্গনে আমাদের ইমেজ কিভাবে বাড়ানো যায়, সেটা আমাদের করতে হবে। আমাদের যে সক্ষমতা আছে, আমরা চেষ্টা করব তা উৎপাদনশীলতার মাধ্যমে বাড়ানোর জন্য। কিন্তু অবকাঠামোগত দুর্বলতাগুলো যদি কাটিয়ে ওঠা না যায়, তাহলে তৈরি পোশাক শিল্প অত্যন্ত কঠিন সময়ের মুখোমুখি হবে।</p> <hr /> <p> </p> <p><strong>ফজলে শামীম এহসান</strong></p> <p><strong>দ্বিতীয় সহসভাপতি, বিকেএমইএ</strong></p> <p><img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/October/26-10-2017/1/kalerkantho-17-10-26-AK-28.jpg" style="height:483px; width:800px" /></p> <p>ঢাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো চট্টগ্রামে বা মিরসরাই এলাকায় রিলোকেশন করার সক্ষমতা নেই। এসব কারখানা আর্থিকভাবে তেমন বড় নয় বিধায় তাঁরা চট্টগ্রামে গিয়ে কারখানা স্থাপনের ব্যয়ভার বহন করতে পারবেন না। তাই ঢাকার আশপাশে যদি স্পেশাল ইকোনমিক জোন স্থাপন করে এই কারখানাগুলো রিলোকেশন করার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তাঁদের জন্য সহজ হতো। সরকারের যেসব ইকোনমিক জোন বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে, সেগুলোতে কারখানা সরানোর ব্যবস্থা করা যায় কি না? মাননীয় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ, উদ্যোক্তাদের বিশেষ করে গ্রিন কারখানাগুলোর ক্ষেত্রে আর্থিক সাপোর্ট, টেকনিক্যাল সাপোর্ট, দ্রুত সংযোগ প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে সহযোগিতা করা যায় কি না?</p> <p> </p> <p style="text-align:center"><strong>গোলটেবিল বৈঠকে আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ করণীয়সমূহ</strong></p> <p>♦       ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী অবস্থান থেকে রপ্তানিকারকদের সুরক্ষা প্রদানে বিশেষ রপ্তানি মুদ্রানীতি গ্রহণ।</p> <p>♦       দুই বছরের জন্য পোশাক রপ্তানির উেস কর প্রত্যাহার। শিল্পের সুরক্ষার জন্য রপ্তানির ওপর ২ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা প্রদান।</p> <p>♦       স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সব পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার।</p> <p>♦       পোশাক খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ প্রদান এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মূল্য স্থিতিশীল রাখা।</p> <p>♦       চট্টগ্রাম বন্দর, ঢাকা বিমানবন্দর ও বেনাপোল বন্দরে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ এবং এসব বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পদক্ষেপ গ্রহণ।</p> <p>♦       আইসিডি স্থাপন এবং ঢাকার আশপাশে বিশেষ শিল্পাঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শ্রেণির কারখানার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ।</p> <p>♦       একটি গ্রুপ অব কম্পানিজের অধীনে একটি প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি হলে সেই গ্রুপভুক্ত অন্য সব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকিং সুবিধা রহিত করা সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধানটি বাতিল করা।</p> <p>♦       ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেফার্ড পেমেন্টের সময়সীমা ১ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৫ বছর করা।</p> <p>♦       কাস্টমস বন্ডের অটো নবায়ন এবং বন্ডের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বন্ড ব্যবস্থার ডিজিটাইজেশন।</p> <p>♦       কারখানা আধুনিকায়ন ও অটোমেশনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের জন্য বিশেষ রিফাইন্যান্সিং স্কিম গ্রহণ করা।</p> <p>♦       বাজার বহুমুখীকরণ, বিশেষ করে রাশিয়া ও সিআইএসভুক্ত দেশগুলোতে বাজার সুবিধা প্রাপ্তি ও রপ্তানি সম্প্রসারণের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ।</p> <p>♦       রানা প্লাজা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পোশাক খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে এবং সবুজ শিল্পায়নে যে নীরব বিপ্লব ঘটছে, তা ব্র্যান্ডিং করা।</p> <p>♦       রাজস্বনীতিসহ সরকারের অন্য সব নীতিমালার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।</p> <p>♦       ডিজাইন, ইনোভেশন ও উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদনে বিশেষ কৌশল ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।</p>