<p>ওষুধ শিল্প খাতে দেশ অনেক এগিয়ে গেলেও নকল ওষুধ উৎপাদনেও পিছিয়ে নেই অসাধু ব্যবসায়ীরা। কিছুদিন পর পরই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ওষুধের দোকানে অভিযান চালায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই সব অভিযানে চোরাই, অনুমোদনহীন, ভেজাল <img alt="" src="/ckfinder/userfiles/images/print/2017/Print-2017/January/29-1-2017/First-back/kalerkantho-29-01-2017-31.jpg" style="float:left; height:278px; margin:12px; width:202px" />ওষুধের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধও উদ্ধার হয় নিয়মিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়, জেল-জরিমানাও হয়; কিন্তু নকল ওষুধ প্রস্তুত ও বাজারজাতকরণ থামে না। রোগব্যাধি সারাতে কিংবা জীবন বাঁচাতে মানুষ চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন বা পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ কিনতে যায় দোকানে। কিন্তু কেনার সময় অনেকের পক্ষেই বোঝার উপায় থাকে না ক্রয় করা ওষুধটি আসল নাকি নকল।</p> <p>নকল ওষুধ চেনার এমন কঠিন সমস্যার সহজ সমাধান বের করেছেন দেশের দুই তরুণ উদ্ভাবক। তাঁরা আবার সহোদরও। তাঁদের উদ্ভাবন করা প্রযুক্তি এখন দেশের ওষুধ খাতে একরকম বিস্ময় সৃষ্টিকারী। ওষুধ কিনতে গিয়ে যে কেউ চাইলেই ওই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে যাচাই করে নিতে পারেন কোনটি আসল আর কোনটি নকল ওষুধ। এসএমএস ছাড়াও একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেও নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আসল বা নকল ওষুধ শনাক্ত করা সম্ভব।</p> <p>এরই মধ্যে দেশের নামকরা ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেনাটা ওই দুই ভাইয়ের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁদের দুটি ওষুধের ক্ষেত্রে নকল ঠেকাতে পারছে। ওষুধ দুটি হচ্ছে ‘ম্যাক্সপ্রো’ ও ‘রোলাক’।</p> <p>দুই ভাই সৌভিক আসওয়াদ ও সৌমিক আসওয়াদ তাঁদের উদ্ভাবন করা ‘প্যানাসিয়া’ নামের একটি স্টার্টআপ-এর মাধ্যমে এখন রেনাটার ওষুধ দুটির নকল শনাক্ত করা যাচ্ছে।</p> <p>সৌমিক আসওয়াদ জানান, প্যানাসিয়ার আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট ওষুধের প্রতিটি পাতায় একটি করে আলাদা কোড থাকে। ক্রেতা কেনার আগে ওই ওষুধের গায়ে থাকা নির্দিষ্ট কোডটি ‘২৭৭৭’ নম্বরে এসএমএস করে পাঠালে প্যানাসিয়ার ডাটাবেইসে থাকা কোডের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাচাই হবে। আর তাত্ক্ষণিকভাবে একটি ফিরতি এসএমএসে (ইংরেজি ও বাংলায়) জানিয়ে  দেওয়া হবে ওষুধটি আসল না নকল। এ ছাড়া প্যানাসিয়ার ওয়েবসাইটে (www.panacea.live) গিয়েও ওষুধটি যাচাই করা যাবে।</p> <p>রেনাটা লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মনোয়ারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে প্রথমে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ট্রায়াল শুরু করি। পরে গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এটি চূড়ান্তভাবে ব্যবহার করছি। এতে আমরা নকল রোধে সাফল্যও পেয়েছি। যদিও এ ক্ষেত্রে জনসচেতনতা আরো বাড়ানোর চেষ্টা করছি। মানুষ যত সচেতন হবে ততই নকল ওষুধের কবল থেকে রক্ষা পাবে। নকল ওষুধ থেকে সুরক্ষায় এই প্রযুক্তি সত্যিই এক অনন্য উদ্ভাবন হয়ে উঠেছে দেশের জন্য। আর আমরাই প্রথম দেশীয় কম্পানি হিসেবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছি।’</p> <p>সৌভিক আসওয়াদ বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। একটু সময় লাগলেও নকল ওষুধ রোধে আশা করি সবাই নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজেকে নিরাপদ রাখবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আরো কিছু নতুন বিষয় উদ্ভাবনে কাজ করছি। শিগগিরই এর প্রয়োগ দেখা যাবে।’</p> <p>বড় ভাই সৌভিক আসওয়াদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। ছোট ভাই সৌমিক পড়ছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে।</p>