শুকনা কাশি সচরাচর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। তবে অনেক সময় কয়েক মাস থেকে এক বছরও কাশি থাকতে পারে। এর কারণ ভাইরাসের প্রভাবে শ্বাসনালি ফুলে অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে যেতে পারে। এতে ভাইরাস সংক্রমণ সেরে যাওয়ার পরও কাশি রয়ে যায়।
শুকনা কাশি সচরাচর দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই সেরে যায়। তবে অনেক সময় কয়েক মাস থেকে এক বছরও কাশি থাকতে পারে। এর কারণ ভাইরাসের প্রভাবে শ্বাসনালি ফুলে অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে যেতে পারে। এতে ভাইরাস সংক্রমণ সেরে যাওয়ার পরও কাশি রয়ে যায়।
কফের সিরাপ কি সমাধান?
কাশি হলেই কফের সিরাপ খাওয়া কোনো সমাধান নয়। বাজারে চলতি কফের সিরাপগুলো অনেক সময় খিঁচুনি, ঝিমুনি, অস্বাভাবিক হূত্স্পন্দন, কিডনি ও যকৃতের সমস্যাসহ নানা ক্ষতি করতে পারে।
কাশির সিরাপে হাইড্রোকার্বন থাকে। মূলত বুক ব্যথা ও কাশি নিয়ন্ত্রণে এটি ব্যবহৃত হয়। হাইড্রোকার্বন এক ধরনের নারকোটিকস, যা ক্ষতিকর। এ ছাড়া কাশির সিরাপের অনেক উপাদান, যেমন—গুয়াইফেনেসিন, সিউডোফেড্রিন, ডেক্সট্রোমিথরফান ও ট্রাইমেথোপ্রিম ইত্যাদি কারণে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, ঝিমুনি আসে, ঘুম ঘুম ভাব হয়।
ইফিড্রিনের কারণে শ্লেষ্মা শুকিয়ে যায়। এমনকি সালবিউটামল ও মন্টিলুকাস্টজাতীয় ওষুধও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কারো সেবন করা উচিত নয়। আরাম পেতে কফের সিরাপ নয়; বরং কিছু উপদেশ মেনে চলতে পারেন।
বাড়তি কী করা যায়
গরম পানির ভাপ নেওয়া যায়।
শুকনা কাশিতে গলা খুসখুস করলে হালকা গরম পানিতে একটু লবণ দিয়ে কুলকুচি করা যায়। মুখে লজেন্স, লবঙ্গ বা আদা রাখলেও আরাম মেলে।
চিকিৎসকের পরামর্শ কখন
কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, রক্ত দেখা গেলে, কাশতে কাশতে শরীর নীল হয়ে গেলে বা প্রচণ্ড জ্বর এলে, কথা বলতে কষ্ট হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যেকোনো কাশি দুই বা তিন সপ্তাহের বেশি থাকলে অবশ্যই বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন।
লেখক : মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি., শ্যামলী, ঢাকা
সম্পর্কিত খবর
মস্তিষ্কে দেখা দিতে পারে এরাকনয়েড সিস্ট। এর আকৃতি খুব বড় হয়ে না গেলে রোগটি বড় সমস্যা তৈরি করে না। সাধারণত এই রোগ পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। সিস্ট বড় হয়ে গেলে মাথা ব্যথা হতে পারে।
লেখক : রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
দুই হাজার বছর আগেও ক্যান্সারের চিকিৎসা ছিল আক্রান্ত স্থান পুড়িয়ে দেওয়া, জোঁক দিয়ে রক্ত চোষানো বা ঝাড়ফুঁক, তাবিজ ও তন্ত্রমন্ত্র। বলা যায়, তখন ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেওয়া হতো রোগীকে। কর্কট রোগ ওরফে ক্যান্সার কী, তা বুঝতে অনেক সময় লেগেছে চিকিৎসাবিজ্ঞানের। রোগটির উৎপত্তি কিভাবে, শরীরে ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যম ও এর বহুমুখী আচরণ লুকোচুরি খেলেছে বিজ্ঞানের সঙ্গে।
ক্যান্সার রোগীদের জীবনের কাহিনি অত্যন্ত করুণ।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে যার অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব অবদান রাখার এখনই সময়। জাতীয় ঐকমত্য, সম্মিলিত উদ্যোগ, সহানুভূতির চাদরে মোড়া ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ক্যান্সার যুদ্ধে একধাপ এগিয়ে দিতে পারে। রোগীদের শুধু চিকিৎসাজনিত নিশ্চয়তা নয়, মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করাও জরুরি। আমাদের দীপ্ত শপথ, প্রত্যেক ক্যান্সার রোগী যেন সহায়তা, সহানুভূতি ও ভালোবাসার স্পর্শ থেকে বঞ্চিত না হয়। তাদের জীবনেও রং ফিরুক, হাসি ফুটে উঠুক চোখেমুখে। অর্থপূর্ণ জীবন তাদেরও অধিকার।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক
ক্লিনিক্যাল অনকোলজি ও রেডিওথেরাপি বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
প্রতিটি ওষুধের ব্যবহারবিধি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আলাদা। সেসব আমলে নিয়ে তবেই যেকোনো ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে থাকেন চিকিৎসক। স্বপ্রণোদিত হয়ে ওষুধ সেবন করতে নিষেধ করার কারণ এটাই, প্রতিটি রোগ ও রোগীর চাহিদা আলাদা। অথচ হাঁচি-কাশি হলেই মুড়ি-মুড়কির মতো মন্টিলুকাস্ট সেবন করছে অনেকেই।
ব্যবহার
ওষুধটি মূলত শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
কখন ব্যবহার করা যায় না
একই রোগে ভুগলেও সব রোগী মন্টিলুকাস্ট সেবন করতে পারে না।
♦ যাদের এ গোত্রের কোনো ওষুধে অ্যালার্জি আছে।
♦ গর্ভবতী অথবা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছে যেসব নারী তাদের এ ওষুধ সেবন করা অনুচিত। যারা শিশুকে বুকের দুধ পান করাচ্ছে তাদেরও ওষুধটি সেবনে ঝুঁকি আছে।
♦ লিভারের সমস্যা আছে যাদের বা মদপানের অভ্যাস আছে।
♦ মানসিক সমস্যা থাকলে বা বিশেষত যারা এর জন্য ওষুধ সেবন করছে।
♦ স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে।
♦ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলে।
ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
নিয়ম না মেনে এই ওষুধ সেবন করলে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। যেমন—
♦ ত্বকের গভীর স্তর ফুলে যাওয়া (এনজিওএডিমা)।
♦ হাইপার সেনসিটিভিটি রি-অ্যাকশন।
♦ ত্বকে ফুসকুড়ি ওঠা, জ্বর।
♦ অস্থিরতা, উদ্বিগ্ন বোধ, মাথা ঘোরা, খিটখিটে মেজাজ, দুঃস্বপ্ন, অনিদ্রা ও ঘুমের মধ্যে হাঁটার মতো মানসিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
♦ হজমে সমস্যা, বমি বমি ভাব, প্যানক্রিয়াটাইটিস।
মন্টিলুকাস্টের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার লক্ষণ পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। মন্টিলুকাস্ট সেবন করে গাড়ি চালানো ঠিক নয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া হাঁচি-কাশি হলেই মন্টিলুকাস্ট সেবন করা যাবে না।
লেখক : মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি.,শ্যামলী, ঢাকা