<p style="text-align: justify;">নবী-রাসুল (আ.)-এর স্মৃতিধন্য ভূমি জর্দান। পূর্ববর্তী বহু নবী ও রাসুলের বিচরণ ছিল এই ভূমিতে। তাঁদের একজন ইলিয়াস (আ.)। যাঁর আলোচনা পবিত্র কোরআন, ইনজিল ও জাবুরে রয়েছে। ফলে মুসলিম, খ্রিস্টান ও ইহুদি তিন জাতির কাছেই ইলিয়াস (আ.) অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং জাকারিয়া, ইয়াহইয়া, ঈসা ও ইলিয়াসকেও সৎপথে পরিচালিত করেছিলাম। তারা সবাই ছিলেন সজ্জনদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৮৫)</p> <p style="text-align: justify;">অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘ইলিয়াস ছিল রাসুলদের একজন। স্মরণ কোরো, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমরা কি সাবধান হবে না? তোমরা কি বাআলকে ডাকবে এবং পরিত্যাগ করবে শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা—আল্লাহকে, যিনি প্রতিপালক তোমাদের—প্রতিপালক তোমাদের প্রাক্তন পূর্বপুরুষদের। কিন্তু তারা তাকে মিথ্যাবাদী বলেছিল, কাজেই তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির জন্য উপস্থিত করা হবে। কিন্তু আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাদের কথা ভিন্ন।’ (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১২৩-১২৮)</p> <p style="text-align: justify;">উত্তর জর্দানের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন তিল মার ইলিয়াস। ধারণা করা হয়, নবী ইলিয়াস (আ.) এখানে জন্মগ্রহণ করেন এবং এটাই ছিল তাঁর আবাসস্থল। পরিবার-পরিজনসহ এখানেই তিনি বসবাস করতেন। ঘন সবুজ পাহাড়ের ওপর অবস্থিত প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চলে দাঁড়ালে পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়।</p> <p style="text-align: justify;">এ ছাড়া এটি পবিত্র ফিলিস্তিন ভূমিরও খুব কাছে অবস্থিত। এখান থেকে জর্দান নদীর পশ্চিম তীর তথা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চল দেখা যায়।</p> <p style="text-align: justify;">খ্রিস্টধর্মের অনুসারী বাইজেন্টাইন শাসকরা এখানে দুটি দৃষ্টিনন্দন গির্জা তৈরি করেছিলেন। যার ধ্বংসাবশেষ এখনো টিকে আছে। গির্জার মেঝেতে ফুল ও জ্যামিতিক নকশার মোজাইক রয়েছে। এর পাশেই আছে একটি প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র।</p> <p style="text-align: justify;">তিল মার ইলিয়াসকে দীর্ঘদিন ‘তিসবে’ মনে করা হতো। তিসবে হলো সেই শহর, যেখানে ইলিয়াস (আ.) রাজত্ব করতেন। বাইবেলে তিসবে শহরের বর্ণনা রয়েছে। জর্দান সরকার প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনটি সংরক্ষণ এবং একে পর্যটন উপযোগী করে গড়ে তুলেছে।</p> <p style="text-align: justify;">খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে সমগ্র শাম তথা ফিলিস্তিন, জর্দান ও সিরিয়া ইসলামী খিলাফতের অধীন হয় এবং এই অঞ্চলের মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেয়। শরিয়ত নবী-রাসুল ও পুণ্যাত্মা পূর্বসূরিদের স্মৃতি ও সমাধি সংরক্ষণের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে। কেননা তা শিরক, বিদআতসহ নানা ধরনের ধর্মীয় অনাচার সৃষ্টির উপলক্ষ হয়। সম্ভবত এ কারণেই মুসলিম আমলে তিল মার ইলিয়াসে কোনো স্থাপনা গড়ে ওঠেনি। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটে ইলিয়াস (আ.) সম্পর্কে কোরআন-হাদিসের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;"><em>তথ্যসূত্র : মাই জর্দান জার্নি ডটকম ও উইকিপিডিয়া</em></p>