ঢাকা, শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
১৭ মাঘ ১৪৩১

রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রোজা শুরুর সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
সংগৃহীত ছবি

মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজান শুরুর সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির গবেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে আগামী ৩১ জানুয়ারি শাবান মাস শুরু হতে পারে। এ ছাড়া আগামী ১ মার্চ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে রমজান মাস শুরু হতে পারে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে প্রকাশিত এক বার্তায় আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।

আরো পড়ুন
ট্রেন বন্ধের পেছনে দুই মন্ত্রণালয়ের ‘ঠেলাঠেলি’

ট্রেন বন্ধের পেছনে দুই মন্ত্রণালয়ের ‘ঠেলাঠেলি’

 

আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা হিসাব অনুযায়ী, ২৯ জানুয়ারি হিজরি সনের রজব মাসের শেষ দিন হবে। তবে ওই দিন চাঁদ অস্ত যাওয়ার সময় সূর্যাস্তের আগেই চাঁদ ডুবে যাবে। ফলে ওই দিন শাবানের চাঁদ দেখা অসম্ভব হবে। এর ফলে রজব মাস ৩০ দিনে পূর্ণ হবে এবং ৩১ জানুয়ারি থেকে শাবান মাস শুরু হবে।

 

সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, ৩০ জানুয়ারি দক্ষিণ ইউরোপ, আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে খালি চোখে চাঁদ দেখা যাবে। এর অর্থ হলো, যেসব দেশে ৩০ জানুয়ারি রজব মাসের ২৯তম দিন হবে, সেসব দেশেও ৩১ জানুয়ারি শাবান শুরু হবে। এই তালিকায় রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরান, বাংলাদেশ, মরক্কো, ক্যামেরুন এবং আলবেনিয়া।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কোরআনের বর্ণনায় সন্তানের মাতৃদুগ্ধ পান

মাইমুনা আক্তার
মাইমুনা আক্তার
শেয়ার
কোরআনের বর্ণনায় সন্তানের মাতৃদুগ্ধ পান

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানো প্রত্যেক মায়ের কর্তব্য। কারণ মহান আল্লাহ মায়ের দুধে শিশুর বেড়ে ওঠার সব উপাদান দিয়েছেন। যেমন—আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পানি, সহজ পাচ্যকারী উপাদান ইত্যাদি সুষমভাবে থাকে মাতৃদুগ্ধে। ফলে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া শিশু সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে বেড়ে ওঠে।

পাশাপাশি তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও অনেক বেশি থাকে। এর ফলে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অপুষ্টিজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পায়।

শারীরির সুস্থতার পাশাপাশি শিশুর মানসিক বিকাশেও মায়ের দুধের ভূমিকা অনবদ্য। এ ছাড়া মায়ের সুস্থতা যেমন—স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধে সন্তানকে সঠিকভাবে মায়ের দুধ পান করানোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তাই প্রত্যেক মায়ের উচিত সন্তান জন্মলাভের পর থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাকে নিয়মমাফিক দুধ পান করানো।

অনেকে আবার না জেনে কোরআনের নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে যাওয়ার পরও সন্তানকে বুকের দুধ পান করান। অথচ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করানোর নির্দিষ্ট একটি সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মাতাগণ নিজেদের বাচ্চাদেরকে পূর্ণ দুই বছর স্তন্যদান করবে, যদি দুধ খাওয়ার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়।


(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৩৩)

তাফসিরবিদরা বলেন, এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে সন্তানকে দুধ পান করানো ওয়াজিব এবং আরো বোঝা গেল যে বিশেষ ওজর ছাড়া স্তন্যদান থেকে বিরত থাকার অবকাশ নেই। (মাআরেফুল কুরআন, তাফসিরে মাযহারি, কুরতুবি, জামিউ আহকামিসসিগার : ১/১২৩)

অনেক মা সন্তানকে তিন-চার বছরও দুধ খাওয়ান। আবার অনেকে আড়াই বছর খাওয়ানো যায় মনে করে এই মেয়াদ পূর্ণ করেন। এটা ভুল। সন্তান অনূর্ধ্ব দুই বছর মায়ের বুকের দুধ খেতে পারবে।

দুই বছরের বেশি বয়সী সন্তানকে দুধ পান করানো নাজায়েজ। দুই বছর দুধ পান করানোর বিষয়টি উল্লিখিত আয়াতে রয়েছে। এ ছাড়া আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘মায়ের দুধ পানের সময় দুই বছরই।’ (সুনানে দারাকুতনি : ৪/১৭৪)

তাই প্রত্যেক মায়ের দায়িত্ব সন্তানের দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তাকে অন্যান্য খাবারে অভ্যস্ত করা, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে মায়ের দুধ দেওয়া বন্ধ করা যায়।
 

মন্তব্য

আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন যেভাবে

মুফতি আইয়ুব নাদীম
মুফতি আইয়ুব নাদীম
শেয়ার
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন যেভাবে

কোরআন ও হাদিসের অতি পরিচিত একটি শব্দ শুকরিয়া। যাকে বাংলায় কৃতজ্ঞতা বলে আখ্যায়িত করা হয়। ইসলামের পরিভাষায় শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা হলো অনুগ্রহ স্বীকার করা এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা ও প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সর্বাবস্থায় তার আনুগত্য করা এবং অবাধ্যতা ও নাফারমানি থেকে বেঁচে থাকা। কৃতজ্ঞতা মুমিনের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য।

পরকালীন সমৃদ্ধির পাশাপাশি দুনিয়ার জীবনেও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আরো অধিক পরিমাণ নিয়ামত লাভের মাধ্যম এ কৃতজ্ঞতা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘খেয়ে যে আল্লাহর শোকর আদায় করে সে ধৈর্যশীল রোজাদার ব্যক্তির সমান পুরস্কার লাভ করবে।’ (ইবনে মাজা, হাদিস : ১৭৬৫)

কৃতজ্ঞতা আদায় সফলতা বৃদ্ধি করে

মানুষ তার সাধ্যের ভেতরে চেষ্টা করে, আল্লাহ তা পূর্ণতা দান করেন, সফলতা দান করেন। প্রত্যাশিত বিষয় অর্জনের পর বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা আদায় করে, আল্লাহ তাআলা তখন সফলতাকে আরো অধিক পরিমাণে বাড়িয়ে দেন।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং সেই সময়টাও স্মরণ করো, যখন তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেছিলেন, তোমরা সত্যিকারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আমি তোমাদের আরো বেশি দেব, আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে জেনে রেখ, আমার শাস্তি অতি কঠিন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৭)

অন্য এক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর যারা কৃতজ্ঞ বান্দা, আল্লাহ তাদেরকে পুরস্কার দেবেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৪)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, ‘মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজই কল্যাণকর।

এটা মুমিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়। মুমিনের সুখ এলে, আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা আদায় করে; ফলে এটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর দুঃখ এলে ধৈর্য ধারণ করে, ফলে এটাও তার জন্য কল্যাণকর হয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৯৯)
 
কৃতজ্ঞতা আদায়ের পদ্ধতি

আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের কোরআন-সুন্নাহ সম্মত কয়েকটি পদ্ধতি আছে, নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো—

জবানের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় : অর্থাৎ ভাষার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। প্রাপ্ত নিয়ামতের জন্য আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা আদায় করা।

আর জায়গায় জায়গায় যত মাসনুন দোয়া, তসবি-তাহলিল আছে, সেগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে পড়া। যেমন—ঘুম থেকে উঠে বলা সব প্রশংসা মহান আল্লাহর, যিনি আমাদের মৃত্যু দেওয়ার পর আবার জীবন দান করেছেন। আর তাঁর কাছেই তো আমাদের একত্র করা হবে। (বুখারি, হাদিস : ৩১১২)

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় : অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে শুকরিয়া হলো নামাজ আদায় করা এবং বেশি বেশি নেক আমল করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনের প্রতিটি মূহূর্তে কার্যকারণ পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন নতুন পরিস্থিতিতে আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে শুকরিয়া আদায়ের আরেকটি দিক হলো, শরীরের দান করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন যখন সূর্য উঠে মানুষের (শরীরের) প্রত্যেক গ্রন্থির সদকাহ দেওয়া অবশ্য কর্তব্য। দুজন মানুষের মধ্যে ইনসাফ করা হচ্ছে সদকা, কোনো আরোহীকে তার বাহনের ওপর আরোহণ করতে বা তার ওপর বোঝা ওঠাতে সাহায্য করা হচ্ছে সদকা, ভালো কথা হচ্ছে সদকা, নামাজের জন্য প্রত্যেক পদক্ষেপ হচ্ছে সদকা এবং কষ্টদায়ক জিনিস রাস্তা থেকে সরানো হচ্ছে সদকা।’ (বুখারি, হাদিস : ২৯৮৯)

শারীরিক শুকরিয়া আদায় : অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার সব নিয়ামত ভোগ করে, শরীরের শক্তি সঞ্চার করে, আল্লাহ তাআলার বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালনে সচেষ্ট হওয়া। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! আমি তোমাদের জীবিকারূপে যে উত্কৃষ্ট বস্তুসমূহ দিয়েছি, তা থেকে (যা ইচ্ছা) খাও এবং আল্লাহর শোকর আদায় করো, যদি তোমরা কেবল তাঁরই ইবাদত করে থাকো।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৭২)

অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘হে রাসুলরা! তোমরা পবিত্র বস্তুসমূহ থেকে (যা ইচ্ছা) খাও এবং সত্কর্ম করো। তোমরা যা করো নিশ্চয়ই আমি সে সম্পর্কে পূর্ণ অবগত।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ৫১)

মন্তব্য

দাবানল ও আগ্নেয়গিরি আল্লাহর সতর্কবার্তা

মুফতি মানযুর সিদ্দিক
মুফতি মানযুর সিদ্দিক
শেয়ার
দাবানল ও আগ্নেয়গিরি আল্লাহর সতর্কবার্তা

সাম্প্রতিক সময়ে বহুল আলোচিত বিষয় হলো আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে ঘটে যাওয়া বিভীষিকাময় দাবানল। মূলত এই দাবানল বা আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ আল্লাহর একটি নিদর্শন, যা তিনি তাঁর বান্দাদের সতর্ক করার জন্য পাঠিয়ে থাকেন। আল্লাহ কখনো কখনো নিদর্শন দেন শুধু ভয় দেখানোর জন্য; কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ তার তাৎপর্য বোঝে না।

আকাশ ও পৃথিবীর কত নিদর্শন তাদের সামনে থেকে চলে যায়, অথচ তারা তা উপেক্ষা করে।

এসব নিদর্শন বা শাস্তি মানুষদের পাপাচারের দরুন আরো বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যখন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়বে, ফলে তা পর্যবসিত হবে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায়।’ (সুরা : আল ওয়াকিয়া, আয়াত : ৪-৬)

সুরা ওয়াকিয়ার এই নিদর্শন আমাদের এক বিস্ময়কর বর্ণনার দিকে ইঙ্গিত করে, যা কিয়ামতের মহাপ্রলয়ের এক আভাস দেয়। কিয়ামতে বড় ভূমিকম্প হবে, যখন এক নিঃশব্দ ফুৎকারে পৃথিবী আর পর্বতগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।

সেদিন পৃথিবী হবে ততটাই সমতল, যেন তার ওপর একটিও পাহাড় আর থাকবে না। আকাশ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে, এবং পর্বতগুলো এমনভাবে উড়ে যাবে, যেন সেগুলো মেঘের মতো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ সেগুলোকে এমনভাবে উড়িয়ে দেবেন যে তারা পরিণত হবে অদৃশ্য মরীচিকায় এবং পৃথিবী হবে এক সমতল ভূমি, যেখানে কোনো পাহাড় বা গাছ থাকবে না, একেবারে মসৃণ।

ওই দিন আকাশ ফেটে যাবে, তার শক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে, আর ক্রমে তা ভেঙে গুঁড়িয়ে ধোঁয়া ও গ্যাসে রূপান্তরিত হবে—আবার ফিরে যাবে তার প্রাথমিক অবস্থায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে মেঘমালাসহ, আর ফেরেশতাদের অবতীর্ণ করা হবে সারিবদ্ধভাবে। সেদিন প্রকৃত রাজত্ব হবে পরম দয়াময় আল্লাহর, আর সেই দিন হবে কাফিরদের জন্য ভয়াবহ দুঃসহ।’ (সুরা : আল-ফুরকান, আয়াত : ২৫-২৬)

তখন আকাশের ধোঁয়া মিশে যাবে পৃথিবীর ধূলিকণার সঙ্গে, আর সৃষ্টি হবে এমন এক পরিবেশ, যা ঘন কৃষ্ণ মেঘের অন্ধকারে ঢাকা পড়বে। পুরো পৃথিবী যেন গভীর অন্ধকারের চাদরে আবৃত হয়ে যাবে, অন্ধকারের স্তরে স্তরে মানুষ বেষ্টিত থাকবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অপেক্ষা করো সেদিনের, যেদিন আকাশ থেকে সুস্পষ্ট ধোঁয়া আসবে, যা মানুষকে আচ্ছন্ন করবে।

এটি হবে এক কঠোর শাস্তি।’ (সুরা : আদ-দুখান, আয়াত : ১০-১১)

তাহলে ক্যালিফোর্নিয়ার এই দাবানল ও আগ্নেয়গিরি, এমনকি যদি তার ধোঁয়া পুরো পৃথিবী আচ্ছন্ন করে ফেলে, তা-ও কি তুলনীয় হবে কিয়ামতের সেই ভয়াবহ দিনের সঙ্গে? যখন পৃথিবী এক তীব্র কম্পনে কেঁপে উঠবে, তারপর আসবে আরো ভয়াবহ এক কম্পন। মানুষের হৃদয় ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে গলা পর্যন্ত উঠে আসবে। তারা ভেবে নেবে, কোনো ভয়াবহ বিপর্যয় এসে তাদের সর্বনাশ করবে। সেই দিন তাদের শাস্তি এমন হবে, যা তাদের সহ্যশক্তিকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবে। যেন তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে গুঁড়া হয়ে গেছে, আর তারা নড়াচড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। সেই দিন, পাপিষ্ঠদের মুখ হবে অন্ধকারে ভরা—তারা হবে ভীত, নিঃশেষ এবং কোনো মুক্তির আশা তাদের থাকবে না।

তবে কী পৃথিবীর ধূলিকণা আর আকাশের ধোঁয়ায় মানুষের সাময়িক কষ্টের তুলনা করা যায় সেই ভয়াবহ শাস্তির সঙ্গে, যা অপরাধী ও পাপীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে? যেদিন তাদের জন্য থাকবে ঝাঁজালো গরম বাতাস, ফুটন্ত পানি, আর এমন এক ছায়া, যা শুধু ঘন অন্ধকারের প্রতীক, কোনো শান্তি বা স্বস্তি নিয়ে আসবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা ছুটে চলো সেই ছায়ার দিকে, যা তিনটি শাখায় বিভক্ত। কিন্তু তা কোনো ছায়া দেবে না, আর তা আগুনের তাপ থেকে রক্ষা করবে না, বরং তা নিক্ষেপ করবে অগ্নিকণা, যা প্রাসাদের মতো বড়, আর যা দেখে মনে হবে তা হলুদ উটের মতো।’ (সুরা : আল-মুরসালাত, আয়াত : ৩০-৩৩)

সেই শাস্তি অপরাধীদের চারপাশ থেকে আসবে ডান দিক থেকে, বাঁ দিক থেকে, এমনকি ওপর থেকেও। আর সেই দিন কাফির ও পাপীদের মুখ হবে ধুলায় আবৃত, পঙ্কিলতায় ঢাকা, যা ভীষণ কুৎসিত ও ভয়ংকর। হাশরের ময়দানে তা দেখে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হবে, যেন তাদের মুখে রাতের গভীর অন্ধকার ঢেকে গেছে।

অন্যদিকে যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং সৎকাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী জান্নাত। জান্নাতের তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে স্রোতস্বিনী, যেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। সেখানে তাদের জন্য আছে পবিত্র সঙ্গিনী এবং মহান প্রভুর পক্ষ থেকে ছায়ার নিয়ামত। জান্নাতের ছায়া এবং ফল কখনো শেষ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুত্তাকিরা থাকবে ছায়ায় ও প্রবহমান ঝরনাবিশিষ্ট স্থানে এবং তাদের জন্য থাকবে পছন্দনীয় ফলমূল।’ (সুরা : আল-মুরসালাত, আয়াত : ৪১-৪২)

সেই জান্নাতে তাদের জন্য আছে সুশোভিত সিদর বৃক্ষ, স্তরে স্তরে সাজানো কলাগাছ, আর এমন ছায়া, যা চিরকাল বিস্তৃত। এই ছায়াগুলো একক নয়, বরং অসংখ্য বৃক্ষ ও উদ্যানের সমন্বয়ে দৃষ্টিসীমাজুড়ে বিস্তৃত। সেখানকার একটি বৃক্ষের ছায়ায় ঘোড়ার আরোহী শত বছর ধরে চললেও তার শেষ প্রান্তে পৌঁছাতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি যদি সেখানে তাকাও, তাহলে দেখবে সীমাহীন আনন্দ ও এক বিশাল রাজ্য।’ (সুরা : আল-ইনসান/দাহর, আয়াত : ২০)

এখন আমাদের প্রশ্ন—আল্লাহর নির্দেশে আমরা কি সেই পাপীকে সমান করে ফেলব, যাকে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামে, সেই মানুষের সঙ্গে, যে কিয়ামতের দিন নিরাপদে প্রবেশ করবে? আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আচ্ছা বলো তো, যে ব্যক্তিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে সে উত্তম, না সেই ব্যক্তি যে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে নির্ভয়ে-নিরাপদে?’ (সুরা : হা-মীম আস-সিজদাহ, আয়াত : ৪০)

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে আমি কি তাদের জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের সমতুল্য গণ্য করব? নাকি আমি মুত্তাকিদের পাপাচারীদের সমতুল্য গণ্য করব?’ (সুরা : ছদ, আয়াত : ২৮)

তাহলে কিভাবে একজন রবের অনুগত অপরাধীর সমান হতে পারে? আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাহলে আমি কি অনুগতদের (মুসলিমদের) পাপীদের সমান গণ্য করব? তোমাদের কী হয়েছে, কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ!’ (সুরা : আল-কলম, আয়াত : ৩৫-৩৬)

ভয়াবহ দাবানাল, আগ্নেয়গিরি, ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প এবং সব দুর্যোগ আল্লাহ তাআলার নিদর্শনগুলোর অন্যতম। এসবের মাধ্যমে তিনি পাপিষ্ঠ ও নাফরমানদের কৃতকর্মের শাস্তি দেন, যাতে তারা সচেতন হয় কিংবা স্মরণ রাখে। তবে দুঃখের বিষয়, তাদের বেশির ভাগ শোনে না বা বোঝে না। তারা তো পশুর মতোই; বরং পথভ্রষ্টতায় আরো এগিয়ে।

সুতরাং এসব আলামত ও নিদর্শন দেখেও কি সেই সব ব্যক্তি সচেতন হবে না, যারা দিবানিশি পাপের সাগরে নিমজ্জিত। তবে এটা নিশ্চিত যে এ ধরনের মানুষেরা আল্লাহর এসব নিদর্শন দেখেও ফিরে আসবে না। তারা কোনোভাবেই বিরত হবে না, যতক্ষণ না তারা নিজের চোখে শাস্তির ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে, আর তাদের জন্য প্রস্তুত সেই মর্মন্তুদ আজাব এসে তাদের গ্রাস করে; কিন্তু আল্লাহ তাআলা যখন তাদের ওপর প্রমাণ স্থাপন করেন, আর তারা তা-ও প্রত্যাখ্যান করে, তখন তিনি তাদের কঠোর শক্তিশালী শাস্তি দিয়ে পাকড়াও করেন।

আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব ভয়াবহ নিদর্শন থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

মন্তব্য

আজকের নামাজের সময়সূচি, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

আজ বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬।

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ-

জোহরের সময় শুরু - ১২টা ১৬ মিনিট।
আসরের সময় শুরু - ৪টা ০৭ মিনিট।
মাগরিব- ৫টা ৪৭ মিনিট।


এশার সময় শুরু - ৭টা ০২ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৫টা ২৭ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ৪৩ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪১ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।


 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ