আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
সংগৃহীত ছবি

আজ মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—

জোহর সময় শুরু- ১২টা ২ মিনিট। 

আসরের সময় শুরু - ৪টা ৩০ মিনিট।

মাগরিব- ৬টা ২৪ মিনিট।

এশার সময় শুরু - ৭টা ৪০ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ২১ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ২০ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৫টা ৩৬ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা। 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হজে যাওয়ার আগে যা করণীয়

মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ
মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ
শেয়ার
হজে যাওয়ার আগে যা করণীয়

মহান রবের প্রতি বান্দার প্রেমের সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ ঘটে হজের মাধ্যমে। হজভ্রমণের প্রতিক্ষণে আছে আল্লাহর অপূর্ব নিদর্শন। প্রতিদানে আল্লাহর পক্ষ থেকে আছে ক্ষমার ঘোষণা। তাই প্রতিবছর লাখ লাখ মুসলমানের ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় মক্কা ও মদিনা।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা দিন, তারা তোমার কাছে আসবে পদব্রজে ও সব ধরনের দুর্বল উটে করে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ২৭)

হজের মানসিক প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন

হজযাত্রার আগেই অন্তরে এই সৌভাগ্য লাভের উপলব্ধি থাকা উচিত। আর এ কথা মনে রাখতে হবে, এটি সাধারণ কোনো ভ্রমণ নয়; বরং তা মহান রবের প্রেমে ভরপুর অন্তরের মিলনমেলা। তাই এই ভ্রমণের সব দুঃখ ও কষ্টকে সৌভাগ্যের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের বারবার কাবাঘরের অতিথি করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো তাহলে আমি আরো বাড়িয়ে দেব।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭)

পাপমুক্তির ঘোষণা : কেউ রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ করে হজ পালন করলে মহান আল্লাহ তার অতীত জীবনের সব গুনাহ মাফ করবেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ করেছে, অতঃপর অশ্লীল কাজ ও পাপকাজ থেকে বিরত থেকেছে, সে এমন শিশুর মতো ফিরে আসবে, যেন তার মা এই মুহূর্তে প্রসব করেছে।

’ (বুখারি, হাদিস : ১৫২১)

পরকালে জান্নাত লাভ : কোরআন ও হাদিসে হজের বর্ণনায় সব ধরনের পাপাচার ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আর পরকালে এর প্রতিদান শুধু জান্নাত। নবীজি (সা.) বলেন, ‘এক ওমরাহ পরবর্তী ওমরাহ পর্যন্ত সব পাপ মুছে দেয়। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছু নয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩)

সদাচারের নির্দেশনা : হজযাত্রায় নানা দেশের মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়।

মুখের ভাষা, সামাজিক অবস্থান ও গায়ের রং ভিন্ন হলেও সবার পরনে শুভ্র সেলাইহীন কাপড়। অনেক মতপার্থক্য থাকলেও সবাই এখন আল্লাহর ঘরের অতিথি। তাই সবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করা হজযাত্রীদের প্রধান কর্তব্য। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হজ নির্দিষ্ট কয়েক মাসে, কেউ তাতে হজের ইচ্ছা করলে সে স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ-বিবাদ করতে পারবে না, তোমরা যেসব ভালো কাজ করো আল্লাহ তা জানেন...।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৭)

কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রত্যাশা : আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ করে সব আমল করা কর্তব্য। হজ পার্থিব খ্যাতি, সামাজিক মর্যাদা লাভের জন্য করা অনুচিত। আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী করিম (সা.) (উটের) পুরনো জিনে বসে হজ করেছেন। আর এর ওপরে ছিল চার দিরহাম বা তারও কম দামের একটি কাপড়। অতঃপর রাসুল (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি এই হজ কবুল করুন। এতে লৌকিকতা ও প্রচারণার কিছু নেই।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৯০)

হজবিষয়ক জ্ঞানচর্চা : হজের অনেক বিধি-নিষেধ আছে। সাধারণত এসব বিষয় আলোচিত হয় না। তাই সফরের আগেই হজবিষয়ক সব বিষয় জানা থাকা উচিত। হজের ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। বিদায় হজের সময় মহানবী (সা.) সাহাবিদের হজ বিষয়ে সব কিছু জানতে বলেছেন। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুল (সা.)-কে কোরবানির দিন তার বাহনে চড়ে প্রস্তর নিক্ষেপ করতে দেখেছি। তখন রাসুল (সা.) বলছিলেন, ‘তোমরা হজের বিধান সম্পর্কে জেনে নাও। কেননা আমি জানি না, এই হজের পর আমি আর হজ করতে পারব কি না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১২৯৭)

তাই হজের বিষয়গুলো অভিজ্ঞ আলেমদের থেকে জানা প্রয়োজন। বিশেষত যেসব কারণে হজের বিধান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জরিমানা দিতে হয় সেসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা উচিত। পাশাপাশি নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হজের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে। যেন সুস্থভাবে হজের পুরো কার্যক্রম পালন করা যায়। তা ছাড়া হজভ্রমণের আগে অসিয়ত লিখে যাওয়া ও সঙ্গী নির্বাচনে সচেতন হওয়া উচিত।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

হজের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি

মাওলানা মুহাম্মদ আনসারুল্লাহ হাসান
মাওলানা মুহাম্মদ আনসারুল্লাহ হাসান
শেয়ার
হজের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি

অল্প কিছুদিন পরই শুরু হচ্ছে হাজিদের হজযাত্রা। যাঁরা হজে যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন, তাঁদের এখন থেকেই হজের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। কারণ হজের সফর হচ্ছে একটি ঈমানি সফর, একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সফর। অন্য যেকোনো সফরের চেয়ে এই সফর ভিন্ন ও স্বতন্ত্র বলে এর প্রস্তুতির ধরনও ভিন্ন হয়।

তাই এখানে হাজিদের শারীরিক প্রস্তুতির পাশাপাশি রুহানি ও ইলমি তথা আত্মিক ও জ্ঞানের প্রস্তুতিও গ্রহণ করতে হবে। হজ যেন সঠিক ও সুন্দর হয়, শরিয়তের বিধানমতো সহিহ ও বিশুদ্ধ হয়, তার জন্য এখন থেকে অবশ্যই সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

বায়তুল্লাহ অভিমুখে হজের এই সফর হলো ইবাদত ও আমলের সফর। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের সফর।

এই সফরে বিভিন্ন করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় যেমন আছে, তেমনি বিশেষ স্থানে বিশেষ আমলের অপরিহার্যতাও রয়েছে। উপরন্তু আছে গভীর রুহানিয়ত ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের বিষয়। তাই আল্লাহ তাআলা তাঁর যে বান্দাকে তাঁর ঘরে যাওয়ার তাওফিক দান করেছেন, তার অবশ্যকর্তব্য হলো এই ইবাদতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে জাগতিক ও দুনিয়াবি প্রস্তুতির চেয়ে বেশি প্রয়োজন রুহানি ও ইলমি প্রস্তুতি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুনাম-সুখ্যাতিমুক্ত ইখলাস ও তাকওয়ার সঙ্গে এবং সুন্নাহসম্মত পন্থায় হজ আদায়ের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া। কারণ এটাই হজ কবুল হওয়ার অধিক নিকটবর্তী বিষয়। সব ইবাদতের মতো এই ইবাদতেরও প্রাণ হচ্ছে ইখলাস হচ্ছে। অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে হজ করা। লৌকিকতা, সুনাম-সুখ্যাতি, মানুষ আলহাজ বা হাজি বলবে ইত্যাদি যেকোনো দুনিয়াবি স্বার্থ ও উদ্দেশ্য থেকে এই আমলকে মুক্ত রাখা জরুরি।

ইখলাস ছাড়া কোনো আমলই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর ইবাদত করতে তার আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে।’ (সুরা বায়্যিনাহ, আয়াত : ৫)

হজ ও ওমরাহ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ ও উমরা পরিপূর্ণরূপে পালন করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৬)

জুনদুব আল-আলাকি (রা.) থেকে বর্ণিত, এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রচারের উদ্দেশ্যে নেক আমল করে, আল্লাহ তাআলা তার কর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো সৎকাজ করে, আল্লাহ তাআলা তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মধ্যে প্রকাশ করে দেবেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৯৯)

একটি সহিহ হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমলের ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে অন্যকে অংশীদার সাব্যস্ত করে, আমি তাকে ও তার অংশীদারকে পরিত্যাগ করি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৮৫)

এ জন্য হজের সৌভাগ্য লাভকারীদের উচিত, আল্লাহ তাআলার কাছে রিয়ামুক্ত হজের জন্য দোয়া করতে থাকা। এটা তো স্বয়ং আল্লাহর প্রিয় হাবিব (সা.)-এর আদর্শ ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি পুরনো বাহন ও চার দিরহাম বা তার চেয়ে কম মূল্যের একটি পশমি বস্ত্রে হজ করলেন, তখন তিনি এই দোয়া করলেন—হে আল্লাহ, আমার হজকে রিয়া ও খ্যাতির আকাঙ্ক্ষামুক্ত হজরূপে কবুল করেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৯০)

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, হজ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করা। যে ব্যক্তির ওপর হজ হয়েছে, তার জন্য হজ করা যেমন জরুরি, অনুরূপভাবে তার জন্য হজের আহকাম ও মাসআলা-মাসায়েল শিক্ষা করাও ফরজ ও জরুরি। হজের বিভিন্ন প্রকার যেমন আছে, তেমনি বিভিন্ন হুকুম-আহকামও আছে। হজের কিছু বিধান ফরজ, কিছু বিধান ওয়াজিব ও সুন্নত। হজ যেন কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক হয়, তার জন্য এসব বিষয় জানা ও যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করাও অপরিহার্য। অন্যথায় হজ কবুল হওয়ার আশা করা কঠিন। তাই যারা হজে যাবেন, তাদের উচিত, হজ বিষয়ক নির্ভরযোগ্য বই পড়ে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ আলেমদের থেকে এ বিষয়ে বিধি-বিধান জানা ও এ সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করা।

তৃতীয় বিষয় হলো, হজের বিভিন্ন স্থানে পঠিতব্য দোয়া ও জিকির শেখা ও মুখস্থ করার চেষ্টা করা। হজের সিংহভাগেই বিভিন্ন দোয়া ও জিকির আছে। তাওয়াফের সময়, সাফা-মারওয়া সাঈ করার সময়, আরাফা ইত্যাদিসহ কোন স্থানে কোন দোয়া পড়তে হবে, তা জেনে শেখার চেষ্টা করা। হজে রওনা হওয়ার আগে তা মুখস্থ করা। সময় নিয়ে সচেতনতার সঙ্গে প্রস্তুতি গ্রহণ করলে এ জাতীয় ভুল-ভ্রান্তি হতে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।

চতুর্থ বিষয় হলো,  হজের আগে ও হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করার পর সর্বপ্রকার গুনাহ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করা। কারণ হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজ করল এবং অশ্লীল কথাবার্তা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকল, সে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে ফিরে আসবে, যেদিন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫২১)

সাধারণত হজের সফরে অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক বিষয়ের সম্মুখীন হতে হয়। সফরের সঙ্গী-সাথিদের পক্ষ থেকে কিংবা এজেন্সি বা কাফেলার লোকদের পক্ষ থেকে তাদের প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম কিছু দেখলে সফরের সময় মানুষের মধ্যে ক্রোধের সৃষ্টি হয়। তখনই ঝগড়া-বিবাদ, গালাগাল-অশ্লীল কথাবার্তা ও অন্যায় আচার-আচরণগুলো পরিলক্ষিত হয়। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সহনশীলতার সঙ্গে এগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা তো ভালোভাবে জানেন, হজের সফরে এ রকম কিছু সংঘটিত হবে। তাই তিনি পবিত্র কোরআনে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে (ইহরাম বেঁধে) নিজের ওপর হজ অবধারিত করে নেয়, সে হজের সময় কোনো অশ্লীল কথা বলবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়াও নয়। তোমরা যা কিছু সৎকর্ম করবে আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৭)

হজ মানুষের জীবনকে গুনাহমুক্ত করে একটি পবিত্র জীবন দান করে। তাই হজের পরে আগের সব মন্দ অভ্যাস, পাপকর্ম ও অন্যায়-অনাচার বর্জন করে নতুন জীবন গড়তে ও আলোকিত সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। যদি এই মানসিকতা সৃষ্টি হয়, তবে বুঝতে হবে হজের এই সফর আল্লাহর কাছে গৃহীত হয়েছে।

মহান আল্লাহ আমাদের মকবুল হজ নসিব করুন।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রশ্ন-উত্তর

ঈদগাহের জায়গাকে কবরস্থান বানানো যাবে?

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদগাহের জায়গাকে কবরস্থান বানানো যাবে?
প্রতীকী ছবি

প্রশ্ন : জনৈক ব্যক্তি ঈদগাহের জন্য এক খণ্ড জমি ওয়াক্ফ করেন। সেখানে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। এখন ওয়াক্ফকারী জীবিত নেই, তাঁর ওয়ারিশরা প্রয়োজনের কারণে ওই ঈদগাহকে কবরস্থান বানাতে চায়। জানার বিষয় হলো, ওই ঈদগাহকে কবরস্থান বানানো বৈধ হবে কি?

-জুবায়ের আহমদ, ময়মনসিংহ

উত্তর : ইসলামের দৃষ্টিতে জমি যে উদ্দেশ্যে ওয়াক্ফ করা হয় তার বিপরীত অন্য কাজে ব্যবহার বৈধ নয়।

যেহেতু উল্লিখিত জমিটি ঈদগাহের জন্য ওয়াক্ফ করা হয়েছে, তাই ওয়াক্ফকারীর ওয়ারিশদের জন্য সেখানে কবরস্থান বানানো জায়েজ হবে না। (কাওয়াইদুল ফিকাহ : ৫৮, রদ্দুল মুহতার : ৪/৩৫৬, আহসানুল ফাতাওয়া : ৬/৪৩৩)।

সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আরবি ভাষার প্রচলিত ৫ উপভাষা

আববার আবদুল্লাহ
আববার আবদুল্লাহ
শেয়ার
আরবি ভাষার প্রচলিত ৫ উপভাষা

পৃথিবীর কমপক্ষে ৩৫ কোটি মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে। ভাষাভাষীর বিচারে আরবি পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম ভাষা। ইসলামপূর্ব আরব উপদ্বীপই আরবি ভাষার জন্মস্থল। জাহেলি যুগ (যে যুগে ইসলামের আগমন ঘটে) এবং ইসলামী যুগেই আরবি ভাষার চূড়ান্ত বিকাশ সাধিত হয়।

পরবর্তী সময়ে তা বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্র্যের সংযোগে একাধিক আরবি উপভাষার জন্ম হয়।

আরবির কোনো কোনো উপভাষার ভেতর পার্থক্য অনারব ভাষার মতোই প্রজ্জ্বল। যেমন—কেউ যদি উত্তর আফ্রিকা ও ইরাকের দুজন আরবিভাষীর কথা শোনে তবে তার কাছে মনে হতে পারে উভয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলছে।

তবে আরবি ভাষার একটি প্রমিত রূপ শিক্ষিত আরবদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

যাকে ইংরেজিতে মডার্ন স্ট্যান্ডার্ড অ্যারাবিক (এমএসএ) বা ফুসহা বলা হয়। ফুসহা বা প্রমিত আরবি কোরআনে ব্যবহৃত ধ্রুপদি আরবি ভাষার নিকটবর্তী। বর্তমানে শিক্ষা, সংবাদমাধ্যম, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাজনৈতিক বিবৃতি এবং ধর্মীয় বক্তৃতায় ফুসহা ব্যবহার করা হয়। তবে আরবি ভাষার আঞ্চলিক উপভাষা দেশগুলোর জাতিচিন্তা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে উজ্জীবিত করে।

আরবি ভাষার প্রধান পাঁচ উপভাষা

আরবি ভাষার প্রচলিত উপভাষাগুলোর মধ্যে প্রধান পাঁচ উপভাষার পরিচয় তুলে ধরা হলো—

১. মিসরীয় উপভাষা : আরবি ভাষাভাষীদের ভেতরে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষ মিসরীয় উপভাষায় কথা বলে। এটা প্রায় ১০ কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ভাষা। মিসরের বাইরেও লাখ লাখ মানুষ এই উপভাষায় কথা বলে। মিসরীয় চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম মিসরীয় উপভাষা জনপ্রিয় করে তুলেছে। এই উপভাষার একটি বৈশিষ্ট্য হলো ‘জিম’ বর্ণকে ‘গাইন’-এর মতো উচ্চারণ করা।

যেমন—নাজমকে (তারকা) নিগম উচ্চারণ করা। এই উপভাষার ওপর তুর্কি, ফরাসি ও ইংরেজি ভাষার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।

২. মেসোপটেমিয়ান উপভাষা : মেসোপটেমিয়ান উপভাষায় কথা বলে ইরাক, কুয়েত, সিরিয়ার একাংশ, ইরানের আরবি ভাষীরা ও দক্ষিণ তুরস্কের আরবি ভাষীরা। এই উপভাষার ওপর প্রাচীন ও আধুনিক মেসোপটেমিয়ান ভাষাগুলোর প্রভাব আছে। যেমন—সুমেরি, আক্কাদি, ফারসি, কুর্দি ও গ্রিট। মেসোপটেমিয়ান উপভাষার প্রধান দুটি ধারা হলো জেলেট ও কেল্টু। এই উপভাষায় ‘দোয়াদ’ বর্ণকে কিছু ‘সা’ বর্ণের মতো উচ্চারণ করা হয়। একইভাবে ‘ক্বফ’ বর্ণকে ‘গাইন’ বর্ণের মতো উচ্চারণ করা হয়।

৩. শামি উপভাষা : ইংরেজিতে শামি উপভাষাকে লেভানটাইন বলা হয়। শামি উপভাষায় তিন কোটি ৮০ লাখ মানুষ কথা বলে। যাদের বেশির ভাগ সিরিয়া, লেবানন, জর্দান, ফিলিস্তিন ও তুর্কি সাইপ্রাসে বসবাস করে। শামি উপভাষা প্রমিত আরবির (এমএসএ) খুবই নিকটবর্তী। এই উপভাষায় ‘সা’ বর্ণকে ‘সিন’ বর্ণের মতো, ‘ক্বফ’ বর্ণকে ‘গাইন’ বর্ণের মতো এবং ‘কাফ’ বর্ণকে ‘সোয়াদ’ বর্ণের মতো উচ্চারণ করা হয়। শামি উপভাষার ওপর তুর্কি ভাষার বিশেষ প্রভাব রয়েছে। ইংরেজি ও ফরাসি ভাষারও সামান্য প্রভাব আছে।

৪. মাগরিবি : উত্তর আফ্রিকা তথা মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়া, লিবিয়া, পশ্চিম সাহারা ও মৌরিতানিয়া এবং পশ্চিম মিসরের লোকেরা এই উপভাষায় কথা বলে। স্থানীয়রা মাগরিবি আরবিকে দারিজা বলে। যার অর্থ নিত্যদিনের ভাষা। অভিযোগ আছে, মাগরিবি উপভাষা বোঝা তুলনামূলক কঠিন। এই উপভাষার ওপর ফরাসি, স্প্যানিশ, তুর্কি ও ইতালিয়ান ভাষার প্রভাব আছে। মাগরিবি উপভাষার বৈশিষ্ট্য হলো স্বরবর্ণ বিলোপ করা। যেমন—প্রমিত আরবি বাক্য ‘মিন আইনা আনতা’-এর মাগরিবি উচ্চারণ হলো ‘মানিনতা’। মিন আইনা আনতা অর্থ আপনি কোথা থেকে এসেছেন।

৫. খালিজি উপভাষা : আরবি খালিজি শব্দের অর্থ উপসাগরীয়। এই উপভাষায় কমপক্ষে ৭০ লাখ মানুষ কথা বলে। সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ ইরাক ও উত্তর ওমানের অধিবাসীরা খালিজি উপভাষায় কথা বলে। তবে প্রত্যেক দেশের খালিজি উপভাষার ব্যবহার ও উচ্চারণে সামান্য ব্যবধান আছে। এই উপভাষার বৈশিষ্ট্য হলো ‘ক্বফ’ বর্ণকে ‘গাইন’ বর্ণের মতো উচ্চারণ করা এবং ‘কাফ’ বর্ণকে ‘সোয়াদ’ বর্ণের মতো উচ্চারণ করা। খালিজি উপভাষার ওপর ফারসি ও তুর্কি ভাষার দৃশ্যমান প্রভাব আছে।

মিডল ইস্ট আই অবলম্বনে

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ