ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধে কঠোর বার্তা দিন : ইসলামী আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধে কঠোর বার্তা দিন : ইসলামী আন্দোলন
সংগৃহীত ছবি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মহাসচিব মাওলানা অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেছেন, ‘ভারত ১৯৭১ সালে আমাদের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদেরও কিছু করণীয় আছে। আজকে যখন ভারতের মুসলিম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তখন তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই সরকারকে বলব, সংখ্যালঘু (মুসলিম) নির্যাতন বন্ধে ভারতকে কঠোর বার্তা দিন।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি নিরীহ মানুষকে রক্ষায় প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে ভারতে মুসলিম নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তার প্রতিকারে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘আধুনিক ভারত রাষ্ট্র গঠন হওয়া, এমনকি ভারতে হিন্দুত্ববাদের বিকাশের আগেই ওয়াকফর প্রচলন ছিল। ভারতসহ এই অঞ্চলের শিক্ষা ও নাগরিক সমাজ গড়েই উঠেছে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহার করে।

সভ্যতা বিকাশের সেই ঐতিহাসিক পদ্ধতিকে বিজেপি সরকার অন্যায্য ও সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার বশীভূত হয়ে ভারতজুড়ে মুসলিম নিধনের নতুন উপলক্ষ তৈরি করেছে। বিজেপি সরকার ভারতকে যে ভয়ংকর পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত করছে তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত এটা।’ 

অধ্যক্ষ ইউনুস আহমদ বলেন, ‘বিজেপি সরকার এই অঞ্চলে তো বটেই, এমনকি ভারতের নাগরিকদের জন্যও আগ্রাসী ও হানাদার শক্তি হয়ে উঠেছে। নিজ দেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক চক্রান্ত এবং তাদের নিপীড়নে হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়া কেবলমাত্র উপনিবেশিক শাসকদের পক্ষেই সম্ভব।

বিজেপি ভারতের জন্যই উপনিবেশিক চরিত্র ধারণ করেছে। তাই ভারতের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান করব, ভারতের অস্তিত্ব রক্ষায় মোদি ও তার সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।’

তিনি দেশের মিডিয়ার প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, বিজেপি ও মোদি মিডিয়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে মর্মে অবিরাম মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। অথচ তাদের দেশেই মানুষ কেবল ধর্মের কারণ নৃসংশতার শিকার হচ্ছে। আপনারা মানবতার স্বার্থে এগুলো তুলে ধরুন।

বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করতে সহায়তা করুন। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গুম-খুনের শিকার হয়েও বিএনপির নেতাকর্মীরা পিছপা হননি : এ্যানি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
শেয়ার
গুম-খুনের শিকার হয়েও বিএনপির নেতাকর্মীরা পিছপা হননি : এ্যানি
ছবি: কালের কণ্ঠ

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, সব দল-মতকে একত্রিত করে একটি লক্ষ্যে পৌঁছতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে (সাড়ে ১০টা) ঠাকুরগাঁও ইএসডিও জয়নাল আবেদীন মিলনায়তনে জেলা বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বাস্তবায়নে দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন
আপত্তিকর ভিডিও পোস্ট : বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা বললেন, ‘ফেসবুক চালাতে পারি না’

আপত্তিকর ভিডিও পোস্ট : বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা বললেন, ‘ফেসবুক চালাতে পারি না’

 

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগে বাধ্য করা একদফা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীদের অনেক নির্যাতিত হতে হয়েছেন, অনেকেই গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তারপরও নেতাকর্মীরা পিছপা হননি, হাসিনার কাছে মাথা নত করেন নাই।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার নিয়ে যে কথা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে যে আলোচনাগুলো করছেন বিএনপির ৩১ দফার সঙ্গে তার অনেক মিল রয়েছে। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত, আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিশেষ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাও ৩১ দফার মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে এই বাংলার মাটিতে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না।’

আরো পড়ুন
অপহরণের অভিযোগ : ওসি বললেন, ‘নবম শ্রেণির ছেলে-মেয়ে কি প্রেম করতে পারবে না?’

অপহরণের অভিযোগ : ওসি বললেন, ‘নবম শ্রেণির ছেলে-মেয়ে কি প্রেম করতে পারবে না?’

 

কর্মশালায় ঠাকুরগাঁওয়ের সদরসহ ৫টি উপজেলার থানা ও ইউনিয়নের তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপির কয়েক শ নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছেন।

দ্বিতীয় পর্যায়ে বিকালে (৪টা) প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য প্রদান করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ইসমাইল জাবিহুল্লাহ, বিএনপি নেত্রী রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন শ্যামল।

মন্তব্য

ক্ষমা-অনুশোচনার প্রশ্নে এখনো আওয়ামী লীগের ‘না’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ক্ষমা-অনুশোচনার প্রশ্নে এখনো আওয়ামী লীগের ‘না’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয়েছে আওয়ামী সরকারের। আওয়ামীলের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কয়েকজন আছেন কারাগারে। ছাত্র-জনতার ওই আন্দোলন দমাতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা।

সরকার পতনের ৯ মাস পার হলেও এর দায়ে ক্ষমা প্রার্থনা বা অনুশোচনা করেনি আওয়ামী লীগ। আন্দোলনে দমননীতি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমা চায় বা অনুশোচনা করে, তাহলে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারে, এমন একটা আলোচনা রয়েছে রাজনীতিতে। অন্তর্বর্তী সরকারেরও কেউ কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।

তবে ক্ষমা চাওয়ার কোনো চিন্তা দলটিতে এখনো নেই।

তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা আছে, এমন ইঙ্গিতও পাওয়া যায় না। বরং তারা এখনো ‘ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ নিয়েই আছেন। ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক মাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনা আমলে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এখন বিদেশে অবস্থান করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পতনের আগে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ের সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। কিন্তু অনুশোচনার প্রশ্নে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে। এ জন্য অন্য কোনো পক্ষের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার বিষয় নেই।’

আরো পড়ুন
বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

 

বিদেশে অবস্থান করা দলটির আরেকজন নেতা জানান, পরিস্থিতি সামলাতে তাদের কিছু ভুল ছিল, এমন আলোচনাও তাদের মধ্যে আছে। দলগতভাবে অবশ্য তারা এখনো কিছু বলেননি।

তিনি উল্লেখ করেন, তাদের দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ এখনো হয়নি। তারা এখন পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে চাইছেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য তুলে ধরার বিষয় নিয়েও তারা আলোচনা করছেন।

তবে শুরু থেকেই ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনার বিষয়টি দলীয় সংস্কৃতিতে নেই বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশে ভুলের জন্য দলীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়া বা অনুশোচনা করার সংস্কৃতি নেই। এর আগে কোনো দল তা করেনি।

আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগও সে পথে হাঁটবে না। দলটি তাদের ন্যারেটিভ এবং অবস্থান নিয়েই রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’

সূত্র : বিবিসি বাংলা

মন্তব্য
সাক্ষাৎকার

খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল

    কায়সার কামাল
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বের করে দেওয়া হয়েছিল

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৪০ বছরের ভিটা থেকে এক কাপড়ে বের হতে হতো না। আর খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে এক কাপড়ে বের করা হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সংস্কার নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সংস্কার সংস্কার বলতে বলতে আট মাস কাটিয়ে দিলাম।

বস্তুতপক্ষে এখনো পর্যন্ত সংস্কারের কী ঘটেছে সেটা কিন্তু মানুষ দেখেনি। গতকাল এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কসহ সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি।

প্রশ্ন : আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ কারা?

কায়সার কামাল : সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণ কাকে ভোট দেবে সেটা জনগণের ইচ্ছার বিষয়।

নির্বাচন যখন শুরু হবে তখনই বোঝা যাবে বিএনপির প্রতিপক্ষ কে? বিএনপির রাজনীতি মা, মাটি, মানুষের রাজনীতি। গত ১৬ বছর এই দেশের গণতন্ত্রের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তারেক রহমানসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এই ত্যাগকে যদি দেশের মানুষ মূল্যায়ন করে বিএনপি তাদেরকে স্বাগতম জানাবে।

প্রশ্ন : গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দল এনসিপির কার্যক্রমকে কীভাবে দেখছেন?

কায়সার কামাল : স্বাধীন বাংলাদেশে দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।

তিনি বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। সেই দলের একজন কর্মী হিসেবে আমরা যে কোনো দলকেই স্বাগত জানাব- যদি তাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মানসিকতা থাকে, অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আর তারা কিংস পার্টি কি না সেই সিদ্ধান্ত জনগণই নেবে।

প্রশ্ন : সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলো ভিন্ন মত দিয়েছে। কীভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব?

কায়সার কামাল : সংস্কার নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

সংস্কার সংস্কার বলতে বলতে আট মাস কাটিয়ে দিলাম। বস্তুতপক্ষে এখনো সংস্কারে কী ঘটেছে, তা মানুষ দেখেনি। বাংলাদেশে সংস্কার প্রথা চালু করেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতার পর দেশ যখন একদলীয় দুঃশাসনে ছিল তখন সংস্কারের মাধ্যমেই জনগণ তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে। বিএনপি এই সংস্কারের ধারাটা রক্ষা করতে চায়। বর্তমানে সংস্কারের নামে মুখে মুখে সংস্কার চলছে, কার্যত বাংলাদেশের মানুষ কোনো সংস্কার পাচ্ছে না। প্রকৃত সংস্কার তখনই হবে যখন একটা নির্বাচিত সংসদ থাকবে।

প্রশ্ন : রোডম্যাপ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব বলেছেন ‘অসন্তুষ্ট’। নির্বাচনি রোডম্যাপ আদায়ে বিএনপি কোন পথে যাচ্ছে?

কায়সার কামাল : গত ১৬ বছর এদেশের সর্বস্তরের জনগণ গণতন্ত্রের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছেন। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা তাদের প্রাণের বিনিময়ে এবং হাজার হাজার মানুষের অঙ্গহানির বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের এই ত্যাগের একটাই কারণ ছিল- তারা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চায়। গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত হচ্ছে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। সংবিধানেও আছে, জনগণ সব ক্ষমতার মালিক। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তার এই ক্ষমতার প্রতিফলন ঘটায়। বিএনপি সব সময় বলে আসছে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে। আমরা মনে করছি, যৌক্তিক সময় শেষের পথে। এ কারণে বিএনপির পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিবের অসন্তুষ্ট হওয়ার যৌক্তিক কারণ আছে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি, মতবিনিময় করা হচ্ছে। নির্বাচনে কে ক্ষমতায় যাবে তা বিএনপির বিবেচ্য বিষয় নয়। যেই দলই ক্ষমতায় আসুক আমরা তাদের স্বাগতম জানাব।

প্রশ্ন : বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলাগুলো কোন পর্যায়ে?

কায়সার কামাল : বেগম খালেদা জিয়ার নামে এখন আর কোনো মামলা নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলাই প্রায় খারিজ হয়ে গেছে, বাকিগুলো বাতিল হয়েছে। একটি মামলা আছে যা ওয়ান ইলেভেনের সময় দায়ের করা হয়। তথাকথিত দুর্নীতি দমন কমিশনের সময়ে। ওই মামলাটা নিম্ন আদালতে পেন্ডিং আছে।

প্রশ্ন : এই মামলাটির কারণেই তারেক রহমান দেশে ফিরছেন না?

কায়সার কামাল : তারেক রহমানের দেশে ফেরার সঙ্গে মামলার কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ উনি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আইন আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রচলিত সিআরপিসির প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মামলার বিষয়ে যখন যা আসে তিনি তখন সেটাকে সেভাবে মোকাবিলা করবেন। দেশের আবালবৃদ্ধবনিতা অনেক আগ্রহ নিয়ে তার অপেক্ষা করছেন। যথা সময়েই তিনি দেশে ফিরে আসবেন- ইনশা আল্লাহ।

প্রশ্ন : আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৬০ লাখ মামলা কোন পর্যায়ে?

কায়সার কামাল : দুঃখজনক। এসব মামলা প্রত্যাহারের গতি নেই বললেই চলে। মানুষ এবং রাজনৈতিক কর্মীরা এটিকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। দিনে দিনে তারা ফুঁসে উঠছেন।

প্রশ্ন : সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে বিএনপির অবস্থান কী হবে?

কায়সার কামাল : বিশ্বাস করি ড. মুহাম্মদ ইউনূস অবশ্যই তার অঙ্গীকার রক্ষা করবেন এবং নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন দেবেন।

প্রশ্ন : জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কটা এখন কেমন?

কায়সার কামাল : আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো সংগঠনের সঙ্গেই বিএনপির দূরত্ব নেই। তারেক রহমান অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যেসব রাজনৈতিক দল যুদ্ধ করেছে সবদল নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ হবে। এটি থেকেই প্রমাণ হয় যে, জামায়াতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।

প্রশ্ন : ব্যবসা-বাণিজ্য কমছে। নতুন করে বিনিয়োগ আসছে না। করণীয় কী?

কায়সার কামাল : দেশে যখন গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং স্থিতিশীলতা থাকে তখন বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়ে। মানুষের একটা আস্থার জায়গা সৃষ্টি হয়। জবাবদিহিতা তৈরি হয়। বর্তমান সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত নন। তারা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। জবাবদিহিতার জায়গাটা তাদের নেই। এজন্যই বিনিয়োগ যেভাবে আশা করা হয়েছিল সেভাবে হচ্ছে না।

প্রশ্ন : সরকারের আট মাসের সফলতা-ব্যর্থতা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

কায়সার কামাল : মানুষ মূল্যায়ন করবে যথাসময়ে।

প্রশ্ন : সরকারের কাছে বিএনপির প্রত্যাশা কী?

কায়সার কামাল : ২০০৮ সালে মানুষ কম-বেশি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিল। তারপর কোনো নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যায়নি। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। বিএনপি জনগণের দল জনগণের প্রতিধ্বনি নিয়েই কথা বলবে।

প্রশ্ন : ৫৪ বছরেও স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলো না। এর পেছনে অন্তরায় কী?

কায়সার কামাল : এজন্য কাউকে এককভাবে দোষারোপ করা যাবে না। যদি বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকত তাহলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চল্লিশ বছরের ভিটা থেকে এক কাপড়ে বের হতে হতো না। আর খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে এক কাপড়ে বের করা হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বিচার বিভাগ অনেকাংশেই এগুলোর জন্য দায়ী। বিচারের নামে অবিচার হয়েছে। বিচারের নামে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ শত সহস্র মানুষকে নির্জন কারাগারে বসবাস করতে হয়েছে। সলিটারি কনফাইনমেন্টে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এর জন্যও দায়ী বিচার বিভাগ। আমরা সব সময় বলে এসেছি, বিচার বিভাগ স্বাধীন হোক। বর্তমানে বিচার বিভাগের যে সংস্কার চলছে সেখানে আমরা বলেছি, মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগ স্বাধীন করা হোক।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

মন্তব্য

‘১৫ বছরে গোল দিতে পারেন নাই, এখন আর চেষ্টা করবেন না’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘১৫ বছরে গোল দিতে পারেন নাই, এখন আর চেষ্টা করবেন না’
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোওয়ার তুষার বলেছেন, যারা নব্য আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করছেন, খুব ভাবছেন মাঠ ফাঁকা। ফাঁকা মাঠে গোল দেব। ১৫ বছরে গোল দিতে পারেন নাই। এখন আর গোল দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।

 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আওয়ামী লীগের বিচার, রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে’ মশাল মিছিল আয়োজন করে এনসিপির শাহবাগ জোন। মিছিলে এনসিপির মতিঝিল, রমনা, পল্টন ও শাহবাগ এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা মশাল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়সহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

আরো পড়ুন
আপত্তিকর অবস্থায় ছাত্রলীগ সম্পাদক আটক

আপত্তিকর অবস্থায় ছাত্রলীগ সম্পাদক আটক

 

মিছিলের পর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার তুষার, মাহবুব আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নুল আবেদীন শিশির, নিজাম উদ্দিন নিজাম, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক দ্যুতি অরণ্য চৌধুরীসহ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পালী ডেভিড রাজু প্রমুখ।

নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের সমাধান করার আহ্বান জানিয়ে সারোয়ার তুষার বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। বিচার এবং সংস্কার প্রশ্নে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, নির্বাচনে আগে আওয়ামী লীগের বিচার, শেখ হাসিনার বিচার এগুলোর প্রশ্নে এবং সংস্কার প্রশ্নে আমরা সকল পক্ষকে আন্তরিক দেখতে চাই।

এগুলো হলে আমরা নির্বাচনের পক্ষে খুব ইতিবাচক আছি এবং থাকব। তবে বিচার এবং সংস্কার প্রশ্নে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।

পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কারণে যে গণহত্যার অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। এটা পাপ মোচনের একটাই রাস্তা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করুন। সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঢাকা শহরে এসে জড়ো হচ্ছে, আর যেখানে সেখানে মিছিল করছে - তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন।

তাহলে ছাত্রজনতা আপনাদের বুকে টেনে নেবে।

তিনি বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি থেকে আমরা রাজপথ দখলে রাখব। ঢাকা মহানগরের প্রত্যেকটা জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমরা সবসময় রাজপথে সক্রিয় থাকব। কোন আওয়ামী লীগ আসে আমরা দেখব।

সারোয়ার তুষার আরো বলেন, যারা নব্য আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করছেন, খুব ভাবছেন মাঠ ফাঁকা। ফাঁকা মাঠে গোল দেব। ১৫ বছরে গোল দিতে পারেন নাই। এখন আর গোল দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। জনগণ কিন্তু খুব শক্ত ডিফেন্স তৈরি করেছে কারচুপি, দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সুতরাং যারা সন্ত্রাস করতে চাইবেন, মাদক কারবার করবেন, এলাকায় চাঁদাবাজি করতে চাইবেন, ঢাকায় সুশীল হয়ে সভা সেমিনারে মাঠ গরম করবেন আর কর্মীরা নরসিংদী, ঝালকাঠি, শরীয়তপুরে সমস্ত কিছু লুটপাট করে ফাঁকা বানিয়ে দেবে- এটা আর হতে যাচ্ছে না। জনগণ সচেতন হয়েছে।

যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কোনো আইনের প্রয়োজন নেই। কারণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার পতন আইন মেনে হয়নি। সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় ফ্যাসিস্ট এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব।

যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আওয়ামী লীগ নিয়ে সরকার নতজানু আচরণ করছে। আওয়ামী লীগকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। একটি বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুসুম কুসুম বিরোধিতা করছে। তারেক রহমানকে স্পষ্ট করতে হবে— আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে চান কি না। এ ব্যাপারে কোনো টালবাহানা চলবে না।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ