জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোওয়ার তুষার বলেছেন, যারা নব্য আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করছেন, খুব ভাবছেন মাঠ ফাঁকা। ফাঁকা মাঠে গোল দেব। ১৫ বছরে গোল দিতে পারেন নাই। এখন আর গোল দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আওয়ামী লীগের বিচার, রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে’ মশাল মিছিল আয়োজন করে এনসিপির শাহবাগ জোন। মিছিলে এনসিপির মতিঝিল, রমনা, পল্টন ও শাহবাগ এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা মশাল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়সহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আরো পড়ুন
আপত্তিকর অবস্থায় ছাত্রলীগ সম্পাদক আটক
মিছিলের পর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার তুষার, মাহবুব আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নুল আবেদীন শিশির, নিজাম উদ্দিন নিজাম, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক দ্যুতি অরণ্য চৌধুরীসহ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ভীম্পালী ডেভিড রাজু প্রমুখ।
নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের সমাধান করার আহ্বান জানিয়ে সারোয়ার তুষার বলেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। বিচার এবং সংস্কার প্রশ্নে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আগে আওয়ামী লীগের বিচার, শেখ হাসিনার বিচার এগুলোর প্রশ্নে এবং সংস্কার প্রশ্নে আমরা সকল পক্ষকে আন্তরিক দেখতে চাই।
এগুলো হলে আমরা নির্বাচনের পক্ষে খুব ইতিবাচক আছি এবং থাকব। তবে বিচার এবং সংস্কার প্রশ্নে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের কারণে যে গণহত্যার অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। এটা পাপ মোচনের একটাই রাস্তা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করুন। সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঢাকা শহরে এসে জড়ো হচ্ছে, আর যেখানে সেখানে মিছিল করছে - তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন।
তাহলে ছাত্রজনতা আপনাদের বুকে টেনে নেবে।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি থেকে আমরা রাজপথ দখলে রাখব। ঢাকা মহানগরের প্রত্যেকটা জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে আমরা সবসময় রাজপথে সক্রিয় থাকব। কোন আওয়ামী লীগ আসে আমরা দেখব।
সারোয়ার তুষার আরো বলেন, যারা নব্য আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করছেন, খুব ভাবছেন মাঠ ফাঁকা। ফাঁকা মাঠে গোল দেব। ১৫ বছরে গোল দিতে পারেন নাই। এখন আর গোল দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। জনগণ কিন্তু খুব শক্ত ডিফেন্স তৈরি করেছে কারচুপি, দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সুতরাং যারা সন্ত্রাস করতে চাইবেন, মাদক কারবার করবেন, এলাকায় চাঁদাবাজি করতে চাইবেন, ঢাকায় সুশীল হয়ে সভা সেমিনারে মাঠ গরম করবেন আর কর্মীরা নরসিংদী, ঝালকাঠি, শরীয়তপুরে সমস্ত কিছু লুটপাট করে ফাঁকা বানিয়ে দেবে- এটা আর হতে যাচ্ছে না। জনগণ সচেতন হয়েছে।
যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কোনো আইনের প্রয়োজন নেই। কারণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার পতন আইন মেনে হয়নি। সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় ফ্যাসিস্ট এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব।
যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আওয়ামী লীগ নিয়ে সরকার নতজানু আচরণ করছে। আওয়ামী লীগকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। একটি বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুসুম কুসুম বিরোধিতা করছে। তারেক রহমানকে স্পষ্ট করতে হবে— আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে চান কি না। এ ব্যাপারে কোনো টালবাহানা চলবে না।