<p>রাজধানীর বাজারগুলোতে মাংস ও মুরগির দাম আবার বেড়েছে। চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় কমেছে মাছের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে চাষ করা মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। সব ধরনের সবজি বাড়তি দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে। পেঁয়াজের দাম আরো বেড়েছে, কমেছে রসুনের দাম। </p> <p>বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।</p> <p>মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানের বাড়তি খরচের চিন্তা করে ক্রেতারা মাছ কেনা কমিয়ে দিয়েছে। এতে বাজারে মাছ কম বিক্রি হচ্ছে। এতে দামও কমে গেছে।</p> <p>এবার ভরা মৌসুমেও বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কারণে রোজায় এই পণ্যটি নিয়ে ভোক্তাদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। কারণ রোজায় ইফতারির অন্যতম প্রচলিত খাবার পিঁয়াজুতে প্রচুর পেঁয়াজ লাগে। এ ছাড়া আরো অনেক মুখরোচক ইফতারে পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়। ফলে রোজায় বাড়তি চাহিদা থাকে পেঁয়াজের।<br />  <br /> তবে বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজ নিয়ে এবার রমজানে কোনো দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তাঁরা বলছেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বাজারে সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। তবে রমজান শুরুর আগেই কৃষকরা হালি পেঁয়াজ তোলা শুরু করবেন। তখন দাম কিছুটা কমতে পারে।</p> <p>মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোট তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি করা হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। বড় তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। ছোট পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। ছোট রুই (নলা) প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, দেড় থেকে দুই কেজি রুই প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, তিন-চার কেজি রুইয়ের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০। মৃগেল মাছ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। মাঝারি মাছের মধ্যে পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কৈ মাছ ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাঝারি চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। </p> <p>জোয়ারসাহারা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্রেতারা এখন মাছ কম খাচ্ছে, তাই দাম কম। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বাজারে মাছ বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে পাইকারি আড়তেও মাছ এখন কম আসছে।’<br />  <br /> তবে ইলিশের দাম এখনো চড়া। খুচরায় এক কেজি ওজনের ইলিশ দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা, ৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৫৫০ গ্রাম ইলিশ এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়, ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। <br /> বাজারে এখনো সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এর পরও সব ধরনের শাক-সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে আলু, মুলা ও পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই।</p> <p>বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গোল বেগুন মানভেদে কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। ফুলকপি ও পাতাকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।  লম্বা লাউ প্রতিটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মুলা ও পেপে ৪০ টাকা, করলা ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও আলু কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।</p> <p>বাড্ডার কাঁচাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মেহেদি হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাইকারি বাজারে এখন প্রতিটি সবজির দাম বাড়তি। এতে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারছি না। এখন আলুর দাম কম বলে এটিই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে।’</p> <p>রাজধানীর বাজারে মুরগির সরবরাহ কমার অজুহাতে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা।<br />  <br /> দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর এক সপ্তাহ পর পবিত্র শবেবরাত। প্রতিবছর শবেবরাতের আগে আগে গরুর মাংসের দাম বাড়ে। এবারও তাই হচ্ছে।<br />   <br /> মুরগির বাজার দরের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মুরগির বাজার এখন কিছুটা বাড়তির দিকে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছি প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা।’<br />  <br /> বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর খুচরা বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ মানভেদে কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে নতুন রসুনের সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমেছে। দেশি নতুন রসুন কেজি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা। গত এক মাস আগেও বাজারে ক্রেতারা ২৫০ টাকার নিচে রসুন কিনতে পারেননি। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি করা হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ১৪৮ টাকা ও খোলা চিনি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।</p>