<p>অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন নির্ধারণ করতে চলতি বছর শুরু হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। এই শুমারির মাধ্যমে দেশের ছোট-বড়-মাঝারি আকারের কলকারখানায় বিনিয়োগের পরিমাণ, আয়-ব্যয়, শ্রমিকের সংখ্যাসহ নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে। অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের অধীনে হবে এই শুমারি কার্যক্রম। </p> <p>রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার (২ মে) শুমারি কার্যক্রমের বিষয়ে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রধান খান মো. নুরুল আমিন এবং বিবিএসের উপমহাপরিচালক পরিমল চন্দ্র বসু। </p> <p>কর্মশালায় জানানো হয়, দেশের প্রথম অর্থনৈতিক শুমারি পরিচালিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে, দ্বিতীয়টি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে। তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারি হয় ২০১৩ সালে। ১০ বছর পর এবার হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৫৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ২০২৩ সালে অনুমোদিত প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে। </p> <p>অর্থনৈতিক শুমারির প্রধান কার্যক্রম চলতি বছরের নভেম্বরে-ডিসেম্বর পরিচালিত হবে। এই সময়ে কম্পিউটার সহায়তার মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহ করা হবে। অর্থনৈতিক আদমশুমারির ম্যাপিং অপারেশন মে মাসে শুরু হয়ে জুন মাস পর্যন্ত পরিচালিত হবে। সেখানে সব পরিবার ও উদ্যোক্তার তালিকা করা হবে। শুমারি পরবর্তী অপারেশন পরিচালিত হবে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।</p> <p>অর্থনৈতিক আদমশুমারির মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সমগ্র দেশকে ১৩০টি জেলা এবং দুই হাজার ৬০০ জোনে বিভক্ত করা হয়েছে। এ জন্য ইতিমধ্যে ১৩০ জন জেলা আদমশুমারি সমন্বয়কারী, ৫০০ উপজেলা বা থানা আদমশুমারি সমন্বয়কারী ও দুই হাজার ৬০০ জন জোনাল অফিসার বাছাই করা হয়েছে।</p> <p>অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন এই অর্থনৈতিক আদমশুমারি সর্বশেষ জনসংখ্যা ও গৃহগণনা শুমারির মতো সফল করেত সবাইকে সচেষ্ট থাকার কথা বলেন। একই সঙ্গে দেশের ব্যবসার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্ভুল তথ্য তুলে আনার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি। শুমারি কার্যক্রম সফল করতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ এবং গণমাধ্যমকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েও মত দেন তিনি। </p> <p>জিইডি প্রধান খান মো. নুরুল আমিন বলেন, রাষ্ট্রীয় ডাটাবেইস তৈরির মাধ্যমে এই অর্থনৈতিক শুমারি দেশকে সমৃদ্ধ করবে। এভাবে ভবিষ্যৎ সরকারি কার্যক্রম পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে। </p> <p>অর্থনৈতিক শুমারির মূল উদ্দেশ্য জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক গাইডলাইন সিস্টেম অব ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস (এসএনএ), ইন্টারন্যাশনাল স্টান্ডার্ড অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লাসিফিকেশন (আইএসআইসি) এবং জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ অনুযায়ী দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মালিকানা, কাঠামো, লিগ্যাল স্ট্যাটাস, কর্মকাণ্ডের ধরন, উৎপাদিত পণ্য বা সেবার ধরন, কর্মসংস্থান, স্থায়ী সম্পদের মূল্য ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা। কৃষি বহির্ভূত সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ও খানা অর্থনৈতিক শুমারির আওতাভুক্ত হবে।</p>