<article> <p>আইনি জটিলতার সুযোগ নিয়ে রপ্তানি আয়ের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিদেশি প্রতারকচক্র। এর ফলে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন ছোট-মাঝারি উদ্যোক্তারা। সম্প্রতি শক্তিশালী এই সিন্ডিকেট নিয়ে মুখ খুলেছে চট্টগ্রামের পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেলো ফ্যাশন। প্রতারণার এই বিষয় মামলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছে তারা।</p> </article> <article> <p>প্রতিষ্ঠানটির পাঠানো তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি বিদেশি লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান ওয়াইদা ফ্রেইট সিস্টেম লিমিটেড নামের একটি কম্পানির স্থানীয় এজেন্ট রেজর ফ্রেইট সার্ভিস লিমিটেডের দুটি শিপিং বিলের মাধ্যমে তিন হাজার ৯৩৬ কার্টন পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে মেলো ফ্যাশন। তবে ওই শিপিং কম্পানি ব্যাংক ডকুমেন্ট ছাড়াই পণ্য ডেলিভারি করায় রপ্তানি বিলের তিন লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৮ মার্কিন ডলার থেকে বঞ্চিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বিশাল এই বৈদেশিক মুদ্রা দেশে ফেরত আসেনি।</p> <p>এই প্রেক্ষাপটে গত ১০ জুন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে লাইসেন্স বাতিল এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে মেলো ফ্যাশন।</p> </article> <article> <p>চিঠিতে মেলো ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ সাইফ উল্লাহ (মনসুর) জানান, এসআরও ১৮/০৮-এর ১৯ ধারা মতে, লাইসেন্স নম্বর ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ছাড়া বিএল ইস্যু নিষেধ থাকলেও তারা বিএলে কোনো লাইসেন্স নম্বর বা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেয়নি।</p> <p>এ ছাড়া ওই লাইসেন্সের ১৩ (জ) ধারায় কোনো রপ্তানি পণ্য বিদেশে ব্যাংক ডকুমেন্ট ছাড়া ডেলিভারি না দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তারা তা অমান্য করে ব্যাংক ডকুমেন্ট ছাড়াই চালানটি ডেলিভারি দেয়।</p> <p>এতে আরো উল্লেখ করা হয় যে বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্মুখীন হয়েছে। হাজারো শ্রমিকের কর্মসংস্থান ঝুঁকির মধ্যে আছে।</p> </article> <article> <p>এমতাবস্থায় লাইসেন্সিং আইন ভঙ্গ করায় এসআরও ১৮/০৮-এর (ক) ধারা মতে, তাদের লাইসেন্স বাতিল, আমাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা এবং ১৩(ক) মোতাবেক বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন যথাযথ পালন না করায় বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাই।</p> <p>এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেলো ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন শরীফ উল্ল্যা কালের কণ্ঠকে বলেন, এভাবেই তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারিত হয়ে আসছে। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যারা শক্তিশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেউ কিছু বলে না।</p> <p>তিনি বলেন, ‘রেজরের বিরুদ্ধে আমরা প্রতারণার মামলা করেছি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম এবং তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএকে বিষয়টি অবহিত করেছি।’</p> </article> <article> <p>তবে গত বুধবার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে রেজর ফ্রেইট সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিজিএমএ নেতারা চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনের কাছে গিয়েছিলেন এবং রেজর কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চেয়েছে। একই সঙ্গে রপ্তানির টাকা ফেরত আনার দায়দায়িত্ব নিয়েছে।</p> <p>রেজরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মেলো ফ্যাশন পণ্য রপ্তানি করেছে, সেই টাকা পায়নি। কোনো ক্রেতা রপ্তানিকারকের টাকা না দিলে সেটা পরিবহন সেবা প্রতিষ্ঠানের নয়। আমরা পণ্য পৌঁছানোর দায়িত্বে ছিলাম। সেটা করা হয়েছে। এ ছাড়া তারা টাকা আদায়ে সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা তাদের এই বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছি।’</p> </article>