<p>যুক্তরাজ্যের পোর্ট ট্যালবোটে ব্লাস্ট ফারনেস-৪ কারখানায় শেষবারের মতো স্টিল উৎপাদন করেছে ভারতীয় মালিকানাধীন কম্পানি টাটা স্টিল। ১০০ বছর ধরে সেখানে স্টিল উৎপাদন করছিল টাটা গ্রুপ। </p> <p>গত সোমবার বিকেলে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয় হয়। কারখানা বন্ধ হওয়ায় চাকরি হারাবেন দুই হাজার ৮০০ কর্মী। টাটা ইউকের প্রধান নির্বাহী রাজেশ নায়ের জানান, শেষবারের মতো উত্পাদনকাজ চালানো সহজ ছিল না। আবেগঘন একটি দিন ছিল। </p> <p>২০২৮ সালে পুনরায় স্টিলের কারখানা চালু করবে টাটা। চুল্লির বদলে পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক চুল্লি নির্মাণ করবে তারা। এর ফলে কারখানা থেকে কম পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরিত হবে। পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরিতে খরচ হবে ১২৫ কোটি পাউন্ড। এর মধ্যে ৫০ কোটি পাউন্ড ভর্তুকি দেবে যুক্তরাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে পাঁচ হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। টাটা স্টিলের ব্যবসাও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সুবিধা পাবে। কয়েক মাস ধরেই স্থানীয় সংগঠনগুলো কারখানা বন্ধের সময়সীমাকে পিছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সে চেষ্টা সফল না হওয়ায় কমিউনিটি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রয় রিকহাস বেশ হতাশ। স্টিল কর্মীদের এই প্রতিনিধি বলেন, ‘ব্রিটিশ স্টিল ইন্ডাস্ট্রির জন্য খুবই দুঃখ-ভারাক্রান্ত ও মর্মান্তিক একটি দিন।’ স্টিল কর্মী অ্যাডাম বিচি বলেন, ‘এখানে আমি পাঁচ বছর ধরে কাজ করেছি। চাকরি নেওয়ার সময় ভেবেছিলাম যে সারা জীবন এই কাজ করে যাব। এখন চাকরি থাকে কি না সে ভয়ে আছি। স্টিলের কারখানা বন্ধ হওয়ায় শহরটির অধিকাংশ মানুষ অখুশি। তবে বিপরীত ভাবনার মানুষও আছে।’ </p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জানান, ‘স্টিলের কাজ হলে ধুলা হয়। আমাদের বসবাস করতে হয় ধুলা ও গন্ধের মধ্যে। আমার ছেলে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় ভুগছে। তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া নিত্য ঘটনা। কারখানা বন্ধ হলেও পোর্ট ট্যালবোটে স্টিল তৈরির কার্যক্রম একেবারে থেমে যাবে না। আমদানি করা স্টিল নিয়ে কাজ করবে পোর্ট ট্যালবোটের স্টিল কর্মীরা।’</p> <p>স্টিল খাত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল গ্রহণ করবে যুক্তরাজ্য সরকার। আগামী বছরের শুরুতে এই কৌশল প্রকাশ করবে তারা। ভারত, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডে টাটা স্টিলের ১০টি বড় বড় কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল যুক্তরাজ্যের সাউথ ওয়েলস কাউন্টির পোর্ট ট্যালবোটের স্টিল কারখানা। সূত্র : বিবিসি</p>