<p>বাড়ির পাশের কৃষিজমি থেকে এক প্রভাবশালীর পানির পাম্প চুরি হয়ে যাওয়ায় সন্দেহবশত হোসাইন নামের কিশোরকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। তাকে ধরে নিয়ে ডোবার নোংরা পানিতে চুবানো ছাড়াও ব্যাপক মারধর করেন সাবেক ইউপি সদস্য মো. তফাজ্জলের ছেলে নাঈম মিয়া। পরে বাড়িতে গিয়ে ওই কিশোর অভিমানে নিজ ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের কালিয়ান গ্রামে।</p> <p>গত শুক্রবার রাতে ময়নাতদন্তের পর লাশ গ্রামে দাফন করা হয়। নিহত হোসাইন রিকশাচালক মো. শামীম মিয়ার ছেলে।</p> <p>সাবেক ইউপি সদস্য মো. তফাজ্জলের মোটর পাম্পটি চুরি হয়ে গেলে তাঁরা সন্দেহ করেন কিশোর হোসাইনকে। পরে গত বুধবার রাতে তফাজ্জলের স্ত্রী সুফিয়া আক্তার হোসাইনের দাদির ঘরে প্রবেশ করে হোসাইনের সন্ধান না পেয়ে হুমকি দিয়ে আসেন। পরদিন বৃহস্পতিবার হোসাইনকে ধরে নিয়ে গিয়ে একটি কচুরিপানা ভর্তি ডোবায় নামিয়ে একাধিকবার পানিতে চুবানো হয়।</p> <p>হোসাইনের দাদি রোকিয়া জানান, নাতিকে রক্ষা করতে ওই সময় তিনি সমাজের অনেকের দ্বারস্থ হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। এ অবস্থায় ঘণ্টাখানেক পর তফাজ্জলের ছেলে নাঈম মিয়া হোসাইনকে বাড়ি থেকে ধরে এনে বাড়ির পেছনের জঙ্গলে নিয়ে যান। সেখানে তাকে বেদম মারধর করে ফেলে রেখে যান। পরে আহত অবস্থায় বাড়িতে এসে হোসাইন কাউকে কিছু না বলে একটি ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বৃহস্পতিবারে রাতে লাশ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।</p> <p>হোসাইনের বাবা শামীম মিয়া বলেন, ‘আমার ছেড়াডা ফেরেশতার মতো। কোনো খারাপ কামে যায় না। অনর্থক মিছা বদনাম দিয়া ময়লা পানিতে চুবাইছে ও পরে মারপিট করছে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তফাজ্জলের বাড়িতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তফাজ্জলের ভাই আলী হোসেন দাবি করেন, তাকে কোনো মারধর করা হয়নি।</p> <p>নান্দাইলে জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মণ্ডল জানান, তিনি খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন তফাজ্জলের পরিবারের লোকজনের মিথ্যা চুরির অপবাদ ও মারধর সহ্য করতে না পেরেই নিরীহ এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে।</p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল থানার ওসি মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p>