<p>গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বন্ধুকে নিয়ে বড় বোনের বাড়িতে চুরি করার সময় তা দেখে চিৎর করেন বোন। চুরির বিষয়টি গোপন রাখতে সহোদর বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।</p> <p>শুক্রবার (৫ এপ্রিল) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বোনের বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করেন মো. কামরুজ্জামান রুবেল। মধ্যরাতে বসতঘরের সঙ্গে যুক্ত রান্নাঘরের চালার টিন খুলে বন্ধুকে নিয়ে ঘরে ঢোকেন তিনি। বিষয়টি টের পেয়ে বড় বোন চিৎকার করায় তাঁর হাত-পা, চোখ ও মুখ বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তাঁরা। এরপর নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে রুবেল ও তাঁর বন্ধু পালিয়ে যান।</p> <p>পিবিআই সদস্যরা কামরুজ্জামান রুবেল (৩৬) ও তাঁর বন্ধু মো. মিনাল ওরফে মিস্টারকে (২১) গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তারের পর পিবিআইয়ের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে তাঁরা দুজন এসব তথ্য জানান। রুবেল কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের কুলগঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বন্ধু মো. মিনাল হোসেন ওরফে মিস্টার শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার মামদাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। </p> <p>এর আগে গত মঙ্গলবার শোবার ঘর থেকে শাহনাজ বেগম শিমুর (৩৮) হাত-পা, চোখ ও মুখ বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিমুর সামনের পাটির দুটি দাঁত ভাঙাসহ বিছানায় ধস্তাধস্তির আলামত ছিল। নিহত শিমু কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের পূর্বভিটিপাড়া গ্রামের দক্ষিণ কোরিয়াপ্রবাসী মোশারফ হোসেনের স্ত্রী। রুবেল শিমুর আপন ছোট ভাই।</p> <p>গাজীপুর পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালেহ ইমরান জানান, থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআইয়ের একাধিক দল মামলাটির রহস্য উদঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরের গাছা এলাকা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিস্টারকে ওই দিনই রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।</p> <p>পিবিআইকে রুবেল জানিয়েছেন, তিনি ঋণগ্রস্ত। ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য নিজের বড় বোনের বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করেন। এতে তাঁর সহযোগী ছিলেন বন্ধু মিস্টার। গত সোমবার রাত ১২টার দিকে তাঁরা শিমুর বাড়িতে যান। সেখানে বসতঘরের সঙ্গে যুক্ত রান্নাঘরের চালার টিন খুলে ঘরে ঢোকেন। ওই সময় শিমুর ঘুম ভেঙে যায়। তাঁদের দেখে চিৎকার করায় দড়ি দিয়ে বোনের হাত-পা, চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে শিমুর মুখে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে আঘাত করেন মিস্টার। এতে শিমুর দুটি দাঁত ভেঙে যায়। এরপর শিমুর গলা চেপে হত্যা করেন মিস্টার। পরে নির্বিঘ্নে দুজন ঘরের ভেতর লুট করেন। লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকার দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন তাঁরা।</p> <p>গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, রুবেল ও মিস্টার দুজনই শুক্রবার ১৬৪ ধারায় গাজীপুরের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার বিক্রির ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঝাঁজরা সেতুর নিচে পানিতে ফেলা মোবাইল ফোনসেট ও সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।</p>