<p>চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক আওয়ামী লীগ নেতাকে চিকিৎসা দিতে দেরি হওয়ার অভিযোগে একটি বেসরকারি হাসপাতালের দায়িত্বরত এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত ১১টা ২০ মিনিটে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রক্তিম দাশের (২৯) ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন। </p> <p>এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক এস এইচ খাদেমী বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় মোহাম্মদ মুকুল, মোহাম্মদ টিপু এবং পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সৈয়দকে আসামি করা হয়েছে। </p> <p>মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে সাইফুল্লাহ পলাশ (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়। এ সময় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রক্তিম দাশ আহত সাইফুল্লাহ পলাশকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য অপারেশন রুমে নেন। অপারেশন রুমে যেতে দেরি হওয়ায় ডা. রক্তিম দাশকে হাসপাতালেই মারধর করা হয় এবং সরঞ্জাম ভাঙচুর করা হয়।</p> <p>বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। </p> <p>সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার রাতে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং হামলায় আহত চিকিৎসক রক্তিম দাশকে দেখতে গিয়েছিলাম। এ সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। হামলাকারীদের কিল-ঘুষিতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। যেহেতু এটা বেসরকারি হাসপাতাল তাই বিষয়টি সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখছে।’</p> <p>মামলার বাদী ও হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক এস এইচ খাদেমী বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রক্তিম দাশের সাথে অহেতুক ঝগড়া-বিবাদ শুরু করে আসামিরা। এক পর্যায়ে তারা ডা. রক্তিম দাশকে বাধ্য করে জরুরি বিভাগে অপেক্ষারত অন্য রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দিয়ে শুধু সাইফুল্লাহ পলাশকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। মামলার ৩ নম্বর আসামির নেতৃত্বে অন্যরা ডা. রক্তিম দাশের ওপর অতর্কিত আক্রমণপূর্বক এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম করে। এ সময় আসামিরা হাসপাতালের চিকিৎসার সরঞ্জাম ভাঙচুর করে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তারা আমাকেসহ হাসপাতালে থাকা ডাক্তার-কর্মচারীদের দেখে নেওয়া, মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে।’</p> <p>উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সৈয়দ বলেন, ‘মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সাইফুল্লাহ পলাশকে চিকিৎসা দিতে অবহেলা করায় কর্তব্যরত চিকিৎসকের সাথে আমাদের বাগবিতণ্ডা হয়েছে।’</p> <p>পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন বলেন, বুধবার রাতে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে একটি মামলা করেছেন। এতে তিনজনকে এজাহারনামীয় এবং ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।</p>