<p>চাঁদপুর শহরে নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত রাজু শীলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ৫০ হাজার টাকা আদায় না হলে আসামিকে আরো এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।</p> <p>রবিবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে অভিযুক্তের উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক।</p> <p>মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে চাঁদপুর শহরের বিপনিবাগ এলাকার টিপটপ হেয়ার কাটিং নামে একটি সেলুনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন নারায়ণ চন্দ্র শীল (৬০)। একই শহরের ঘোষপাড়ায় তার বাসা। ঘটনার রাত সাড়ে ১০টায় নিজ বাসা থেকে বের হন তিনি। কিন্তু পরেরদিন ভোর হলেও নিজ বাসায় ফিরে যাননি নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ। তারপর পরিবারের কাছে সংবাদ আসে। বিপনিবাগের একটি সেলুনে নারায়ণ চন্দ্র ঘোষের গলা কাটা মরদেহ পড়ে আছে। </p> <p>এই ঘটনা সম্পর্কে বিপনিবাগ বাজারের নৈশপ্রহরী ইসমাইল বকাউল পুলিশকে জানান, ঘটনার রাতে রাজু শীলকে (৩০) দ্রুত সেলুন ত্যাগ করতে দেখেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণেও তার ধারণা ছিল না কি কারণে রাজু শীল সেলুন ছেড়ে পালিয়ে গেল।</p> <p>এদিকে, নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর এই হত্যা মামলার তদন্ত পান সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক চৌধুরীকে। মামলার বাদী হন নিহতের ছেলে রাজীব ঘোষ। তারপর এক সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্ত রাজু শীলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন তিনি। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন রাজু শীল।</p> <p>এসময় রাজু শীল জানায়, তার নিয়মিত খদ্দের ছিলেন নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ। তাই সখ্যতা গড়ে উঠে তার সঙ্গে। যে কারণে আর্থিক লেনদেনও ছিল এবং এই নিয়ে বাদানুবাদে সেলুনে ডেকে নিয়ে গলায় চাকু বসিয়ে তিনি হত্যা করে নারায়ণ চন্দ্র ঘোষকে। একপর্যায়ে সেলুনে রক্তের দাগ ধুয়ে মুছে গাঢাকা দেন রাজু শীল।</p> <p>অন্যদিকে, এই মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন পিপি রনজিত রায় চৌধুরী এবং আসামির পক্ষে লিগ্যাল এইডের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণার পর তাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজু শীল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলায় বাবার নাম সুভাষ চন্দ্র শীল।</p>