<p>জয়দেবপুর জংশনের কাজীবাড়িতে ট্রেন দুর্ঘটনার ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ সমাপ্ত করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও শিডিউলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। প্রতিটি ট্রেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। আজ রবিবার (৫ মে) ঢাকা, টঙ্গী ও জয়দেবপুর স্টেশনে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা যায়।</p> <p>প্রাপ্ত তথ্যমতে, ঢাকা-জয়দেবপুর রেল রুটে চলাচলকারী ট্রেনের মধ্যে জয়দেবপুর জংশনে থামে ৪৪ জোড়া ট্রেন। গত শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে জয়দেবপুর জংশনের কাজীবাড়িতে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে তিন ঘণ্টা এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। এরপর এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল চলমান রাখা হয়। ৩২ ঘণ্টা পর শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর উদ্ধারকাজ শেষে দুই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ৩২ ঘণ্টা ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে চলাচলকারী সকল ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার ২৫ ঘণ্টা পরও নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। দীর্ঘ সময় ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় বর্তমানে এই রুটে চলাচলকারী সকল ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় বলে জানিয়েছে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।</p> <p>এ বিষয়ে জয়দেবপুর জংশনের প্রধান স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘একটি দুর্ঘটনার পর ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হওয়াই স্বাভাবিক। আস্তে আস্তে এই সমস্যা সমাধান হবে।’</p> <p>জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত যত ট্রেন যাতায়াত করছে সকল ট্রেনই বিলম্বে চলাচল করছে। দুই ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে চলছে ট্রেন। ফলে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি স্টেশনে যাত্রীদের বিড়ম্বনা তৈরি হয়। অনেক যাত্রী ট্রেনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্ল্যাটফরমে অপেক্ষমাণ রয়েছে।</p> <p>জয়দেবপুর জংশনে অপেক্ষমাণ যাত্রী আয়াত আলী বলেন, ‘ঢাকায় যাব। এক ঘণ্টা ধরে ট্রেনের জন্য বসে আছি।’</p> <p>হালুয়াঘাটগামী যাত্রী আবুল বাসার বলেন, ‘হালুয়াঘাট গ্রামের বাড়ি যাব। ট্রেন পাচ্ছি না।’</p> <p>রাজশাহীগামী যাত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, ‘বাড়ি যাব। ট্রেনের অপেক্ষায় তিন ঘণ্টা ধরে বসে আছি।’</p> <p>গত শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ঢাকা-জয়দেবপুর রেলরুটের জয়দেবপুরের কাজীবাড়ি এলাকায় দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ সময় তেলবাহী ট্রেনের ৯টি ওয়াগনের মধ্যে কয়েকটি ওয়াগনে ফাটল ধরলে তেল ঝরা শুরু হয়। এ ঘটনার পর প্রায় তিন ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও পশ্চিমবঙ্গের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার কাজ শেষে শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি ও রেলওয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দুর্ঘটনায় চারজন আহত হয় ও ঘটনার দায়ে তিন রেল কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।</p>