কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করায় মিফতাহুল মাওয়া নামের চার বছরের এক শিশুকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া সেই শিক্ষক শাহজাহান ফজলুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে তিনি নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
কুমিল্লা কোর্ট ইন্সপেক্টর মুজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে জেলার বুড়িচং সদর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়িতে সড়ক পাশে থাকা বালু নিয়ে খেলা করায় মিফতাহুল মাওয়া নামের ৪ বছরের এক শিশুকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠে শিক্ষক শাহজাহানের বিরুদ্ধে।
এসময় মিফতাহুলের বড় বোন গালিবা সুলতানা তার পা ধরে ক্ষমা চাইলেও তিনি শিশুটিকে পানি থেকে না উঠিয়ে বাসায় চলে যান। পরে তার চিৎকারে শিশু মাওয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন এক নারী পথচারী। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
একই দিন সন্ধ্যার পর এ ঘটনার ৪ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এরপর কুমিল্লাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। পরে ওই রাতেই আহত শিশু মিফতাহুল মাওয়া সামছুন নাহার তানিয়া বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকে মেমোরিয়্যাল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক অভিযুক্ত শাহজাহান ফজলুর রহমান গা ঢাকা দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষক শাহজাহা কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
আহত শিশু মিফতাহুল মাওয়া পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়ির সৌদি প্রবাসী নজির আহমেদের মেয়ে।
মিফতাহুলের মা সামছুন নাহার তানিয়া বলেন, ‘তিনি একজন শিক্ষক হয়েও আমার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে পানিতে ফেলে দিয়েছেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’