বিয়েবাড়িতে উচ্চৈঃশব্দে গান বাজানোয় সংঘর্ষ, বরের চাচা নিহত

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
শেয়ার
বিয়েবাড়িতে উচ্চৈঃশব্দে গান বাজানোয় সংঘর্ষ, বরের চাচা নিহত
সংগৃহীত ছবি

নাটোরের বড়াইগ্রামে বিয়েবাড়িতে উচ্চৈঃশব্দে গান বাজানো নিয়ে সংঘর্ষে কামাল ব্যাপারী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মানিকপুর পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কামাল একই এলাকার মৃত ইসমাইল ব্যাপারীর ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে কামাল ব্যাপারীর ভাতিজা সুমনের বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছিল।

এ সময় প্রতিবেশী মৃত আকু ব্যাপারীর তিন ছেলে সামসুল ব্যাপারী (৪২), শাজাহান ব্যাপারী (৫০) ও শাহাদত ব্যাপারী (৫৫) রাগান্বিত হয়ে বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়। এরই একপর্যায়ে তিন ভাইয়ের কিল, ঘুষিতে ও লাথিতে সঙ্গে সঙ্গেই কামাল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।  

বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়াইগ্রাম থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিয়েবাড়িতে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে কামাল ও শাজাহানদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শাজাহান ও তার ভাইয়েরা কামালকে মারধর শুরু করেন।

এরপর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার স্বজনরা স্থানীয় আমেনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক কামালকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন। নিহতের পরিবার থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সাবেক প্রতিমন্ত্রীর দখল করা ‘তালুকদারি’ কেড়ে নিচ্ছে এলাকাবাসী

রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল
শেয়ার
সাবেক প্রতিমন্ত্রীর দখল করা ‘তালুকদারি’ কেড়ে নিচ্ছে এলাকাবাসী
ছবি: কালের কণ্ঠ

পটুয়াখালীর কলাপাড়া (খেপুপাড়া) থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন এ কে এম ইসমাইল তালুকদার। সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটার আশপাশে তার পারিবারিক অনেক কৃষিজমি ছিল। সংগঠনের হাল ধরতে গিয়ে কৃষক বাবার রেখে যাওয়া সেই জমি ইসমাইল তালুকদার একটু একটু করে সব বিক্রি করেছেন। শেষমেষ নিজের ভিটেবাড়ির বড় একটা অংশও বিক্রি করেছিলেন।

একটা সময় তিনি প্রায় নি:স্ব হয়ে পড়েন।

ঠিক তখনই পরিবারের হাল ধরতে তার ছেলে মো. মাহবুবুর রহমান ওরফে মাহবুব তালুকদার বিদেশে পাড়ি জমান। আশির দশকের শেষভাবে কলাপাড়ায় ফিরে পরিবারের পাশাপাশি হাল ধরেন আওয়ামী লীগের। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

তখন থেকেই বাবার বিক্রি করা জমি উদ্ধারে তিনি দখল মিশনে নামেন। সেই মিশনের পাশাপাশি অনেকের জমিই তিনি জবরদখল করেন। এভাবে তিনি জমি দখল করে নামের সঙ্গে মিল রেখে কলাপাড়ায় ‘তালুকদারি’ গড়ে তোলেন।

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় তিনবারের সংসদ সদস্য হয়েও তিনি পরপর অনুষ্টিত দুটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন।

তাঁর আপন ফুপাত ভাই মো. মহিববুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পান। তাকেও প্রতিন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে মাহবুব তালুকদার রাজনীতিতে কোনঠাসা হয়ে পড়েন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাহবুবের দখল করা সেই ‘তালুকদারি’ এলাকাবাসি কেড়ে নিতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে জমির কয়েকজন মালিক মামলাও করেছেন।

রাজনীতিতে উত্থান যেভাবে

মাহবুব তালুকদার ১৯৯০ সালে কলাপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করে হেরে যান। কিন্তু ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০১৪ সালেও তিনি কথিত ‘বিনা ভোটে’র নির্বাচনে টানা তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হয়েছেন।

কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগের কারণে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাননি। একই কারণে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। তাঁর আপন ফুপাত ভাই মো. মহিববুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পান। তাকেও প্রতিন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। গেল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মাহবুব স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দলীয় মনোনীত প্রার্থী মো. মহিববুর রহমানের কাছে হেরে যান।

গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবারসহ মাহবুব আত্মগোপনে চলে যান। এই সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা দায়ের হয়। একইসঙ্গে জমি দখল করে তার গড়ে তোলা তালুকদারি বেদখল হতে শুরু করে। এতে মানষিকভাবে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন। ঢাকার একটি হাসপাতালে প্রায় এক মাস ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতবছরের ২২ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।

‘তালুকদারি’ উদ্ধারের নামে দখলবাজি

কলাপাড়া পৌর শহরের কুমারপট্রি এলাকায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব তালুকদারের দ্বিতল ভবন। লাগোয়া পশ্চিম পাশের সাড়ে ৪ শতাংশ জমি ১৯৭৭ সালের ১৪ জুন ইসমাইল তালুকদার বিক্রি করেন। জমি নিয়ে সেখানেই মো. খলিলুর রহমান ওরফে চুন্নু মিয়ার বসবাস করছিলেন। তিনি এক সময় উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। 

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর মাহবুব তালুকদার পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর কতিপয় সন্ত্রাসীরা মাহবুব তালুকদারের নির্দেশে অস্ত্রের মুখে চুন্নু মিয়ার বসতবাড়ি দখল করে। দখলের ৮ দিন পর ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ওই জমি মাহবুব জোরপূর্বক লিখে নেন। এই ঘটনার প্রায় ১৬ বছর পর মাহবুব তালুকদার, তাঁর ছোট ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মো. হাবিবুর রহমানসহ ২৭ জনের নামে চুন্নু মিয়া গতবছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেছেন।

চুন্নু মিয়া বলেন, আমার বসত ভিটা থেকে নামিয়ে দেওয়ার পর শোকে-কষ্টে আমার স্ত্রী মাজেদা বেগম ২০১৭ সালের ২১ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে বিচারক থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। মামলার এক আসামি গ্রেপ্তার হলেও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মো. হাবিবুর রহমানসহ অপর আসামি পলাতক রয়েছেন।

 মাহবুব তালুকদারের আরেক প্রতিবেশী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান। মাহবুরের বাবার কাছ থেকে সোয়া ৬ শতাংশ জমি তারা কিনেন। সেখানে টিন-কাঠের তৈরি বড় ঘর ছিল। জমির পিছনের অংশে আরেকটি ঘর ছিল। দেখাশোনার সেখানে একজন কেয়ারটেকার থাকতেন। প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন মাহবুব পুরো জমিটি জোড়পূর্বক দখল করেন। সীমানা প্রাচীর দিয়ে নিজের জমির সঙ্গে যুক্ত করেছেন।

অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, 'সাবেক প্রতিন্ত্রীর আমার বাড়িসহ পাশের আরেকটি বাড়ি দখল করেন। পরবর্তীতে তিনি দখলকৃত জমির দলিল সম্পাদন করে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু আমি জমির দলিল দেয়নি। দখল হওয়া জমি ফিরে পেতে আইনী প্রক্রিয়া শুরু করেছি।'

খেপুপাড়া কো-অপারেটিভ সাপ্লাই এন্ড সেল সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি বিশ্বাস শফিকুর রহমান টুলু বলেন, 'মাহবুব তালুকদারের ভবনের পাশেই শতবর্ষী সোসাইটির অয়েল মিল ছিল। সেই মিলের অন্তত ৫ শতাংশ জমি তিনি প্রচীর দিয়ে দখল করেছেন। সেই ঘটনায় থানায় সাধারন ডায়েরি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। সেই জমি উদ্ধারের জন্য সম্প্রতি সোসাইটি আইনী প্রক্রিয়া শুরু করেছে।'

মাদ্রাসার জমি দখল
কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া মৌজায় ১৪ একর ২ শতাংশ জমি জাল জালিয়াতি করে দখলে রেখেছেন মাহবুব তালুকদার। পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার জলিশা-জাটরা হাসানিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এ জমির মালিক ছিল। ১৯৬৩ সালে এই জমি মাদ্রাসার নামে কবলা করে দেন কলাপাড়া পৌর শহরের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক মুন্সীর পরিবার।

প্রায় ৪৭ বছর পর ২০০৯ সালে এ জমির দখল হারায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন মাদ্রাসার ৮ একর জমি মাহবুব নিজের নামে লিখে নেন। ২০০৯ সালের ১০ জুলাই এই দলিল সম্পাদিত হয়। মাহবুবের ভাগনি জামাই আবু সালেহ, কলাপাড়া ভূমি অফিসের তৎকালীন নাজির রফিকুল ইসলাম এবং টিয়াখালী এলাকার গাজী আব্বাস উদ্দিন বাচ্চু বাকি জমি তাঁদের নামে ভুয়া দলিল দিয়ে দখল করেন।

কলাপাড়া পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মুসা তাওহীদ নাননু মুন্সী বলেন, মাদ্রাসায় দানকৃত জমির প্রায় ৬ একর পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহন করে। তার বিপরীতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়েছিল। কিন্তু উচ্চ আদালতে মামলার কারনে সেই টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। তবে অপর জমি সম্প্রতি মাদ্রাসা দখলে নিয়েছে।

মাহবুব পরিবার যা বলছেন
মাহবুব তালুকদারের ছোটবোন সুরাইয়া বেগম কালের কণ্ঠকে মুঠোফোনে বলেন, তার ভাইয়ের বেশকিছু জমি ৫ আগষ্টের পর দখল হয়েছে। আরো কিছু জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে জমিজমার বিষয়টি তার ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) মো. হাবিবুর রহমান ভালো বলতে পারবেন। তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে তিনি আর ফোন ধরছেন না।

মো.হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তাকে খুর্তে বার্তা পাঠালেও তিনি তাতে সাড়া দেননি। মাহবুব তালুকদারের স্ত্রী প্রীতি রহমানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তারা সবাই ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে সুরাইয়া বেগম কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।

মন্তব্য
কুমিল্লা

বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে পৃথক সংঘর্ষে আহত ২১

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে পৃথক সংঘর্ষে আহত ২১
সংগৃহীত ছবি

কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) লাকসাম উপজেলার আজগরা এবং মনোহরগঞ্জের বাইশগাঁও ও নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নে পৃথক এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে লাকসামের আজগরা হাজি আলতাফ আলী হাই স্কুল ও কলেজ মাঠে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই কাউন্সিলকে ঘিরে কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম (চৈতী কালাম) ও সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) আনোরুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়।

এক পর্যায়ে দুপক্ষের অনুসারী কর্মী-সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উভয়পক্ষের অনুসারী স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ৬ নেতাকর্মী আহত হন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সংঘর্ষের মাঝেই ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা হয়।
 

লাকসাম উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম জানান, শনিবার আজগরা স্কুল ও কলেজ মাঠে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠন উপলক্ষে কাউন্সিল চলছিল। ঠিক তখন বাহিরে প্রার্থীর সমর্থন নিয়ে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও সামান্য হাতাহাতি হয়। পরে দায়িত্বশীলদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে এতে কাউন্সিলে কোনো সমস্যা হয়নি।

অন্যদিকে একইদিন সকালে মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে আয়োজিত কাউন্সিলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষে আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে বাইশগাঁও ও আশপাশের এলাকার দলের উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানান, শনিবার সকালে মনোহরগঞ্জের বাইশগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

কাউন্সিলে সভাপতি পদে বিএনপি নেতা সুলতান আহমেদ এবং হোসাইন মোহাম্মদ হেলাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ভোট প্রদান ও সমর্থন নিয়ে সুলতান ও হেলালের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দফায় দফায় সংঘর্ষে সুলতানের অনুসারী এক কর্মী এবং হেলালের অনুসারী তিন কর্মী গুরুতর আহত হন।

বাইশগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি সুমন পাটোয়ারী বলেন, কমিটি ঘোষণা শেষে হঠাৎ সুলতান ও হেলালের অনুসারী কর্মী-সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষে চার নেতাকর্মী আহত হন। নিজেদের মধ্যে এমন সংঘর্ষ, হানাহানি অত্যন্ত দুঃখজনক।

অপরদিকে একই উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের কান্দি স্কুল মাঠে ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কাউন্সিলেও আবুল কালাম ও আনোরুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. হারুনুর রশিদ জানান, শনিবার সকালে স্থানীয় কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে কাউন্সিল অনুষ্ঠান শুরু হয়। হঠাৎ দু'গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে জেলার নেতৃবৃন্দ কমিটি ঘোষণা না করে কাউন্সিল অসমাপ্ত রেখেই স্থান ত্যাগ করেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, আ. লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২

লালমাই-সদর দক্ষিণ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
লালমাই-সদর দক্ষিণ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, আ. লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২
জাহাঙ্গীর হোসেন ও এনামুল হোসেন বাচ্চু

কুমিল্লার লালমাইয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগে আওয়ামী লীগের এক নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।

ধর্ষণে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের উৎসবপদুয়া গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজি অটোরিকশার চালক।

আর এনামুল হোসেন বাচ্চু একই ইউনিয়নের পাড়া দৌলতপুর গ্রামের মৃত আবদুল ওয়াদুধের ছেলে। তিনি পেরুল উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পাড়াদৌলতপুর গ্রামের সর্দার।

প্রতিবন্ধীর মা খোরশেদা বেগম বলেন, আমার মেয়েটা প্রতিবন্ধী। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর জাহাঙ্গীর ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে ডাক দিলে মেয়ে বের হয়ে যায়।

জাহাঙ্গীর তাকে গ্রামের গার্ড বাড়ির একটি বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়ে ঘরে এসে আমাকে জানালে আমি গ্রামের সর্দার-মাতবরদের বিষয়টি জানাই।

তিনি আরো বলেন, শুক্রবার সকাল ৭টায় পাড়া দৌলতপুরের সর্দার এনামুল হোসেন বাচ্চু গ্রামের চা দোকানে (মারিয়াম স্টোর) বসে মাতবরদের নিয়ে জাহাঙ্গীরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং কান ধরে উঠবস করান। সালিসে রায় কার্যকরের ৫০০ টাকা তাৎক্ষণিক উৎসবপদুয়ার জয়নাল সর্দারের কাছে জমা দেওয়া হয়।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সিএনজি চালক জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সালিস বৈঠক করে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে গ্রাম সর্দার এনামুল হোসেন বাচ্চুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। 

মন্তব্য

সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ বিএনপিতে নাই : শামা ওবায়েদ

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ বিএনপিতে নাই : শামা ওবায়েদ
ছবি: কালের কণ্ঠ

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু বলেছেন, যে যেই ধর্ম-বর্ণের মানুষ হই না কেন, আমরা সকলেই সমান। আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে, আমরা মানুষ। সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ আমাদের বিএনপিতে নেই।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে নিজ নির্বাচনী ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের হাজরাতলা সার্বজনীন মহাশ্মশানের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা দিয়েছে। যে দফার আদলে আগামী দিনের বাংলাদেশ উন্নয়ন উন্নয়নের উন্নতি হবে পরিচালিত হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদয়ের উদ্দেশ্য শামা ওবায়েদ বলেন, আপনাদের আত্মার আমার সম্পর্ক। এটা মাটির সম্পর্ক।

আপনারা মা-বোনেরা যারা এসেছেন সকলের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। এই সম্পর্ক আল্লাহ প্রদত্ত। সেই সম্পর্ক কেউ মুছে ফেলতে কেউ পারবে না। সুতরাং আমি সব সময় আপনাদের পাশে আছি এবং থাকব।

হাজরাতলা সার্বজনীন মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় মজুমদারের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক শ্রী অরুণ মন্ডলের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খন্দকার ফজলুল হক টুলু, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, শিক্ষক নেতা জাহিদ হোসেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শাহিন মাতুব্বর, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার খায়রুল বাসার আজাদ, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আছাদ মাতুব্বর প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ