সংবাদ প্রকাশের জেরে পটুয়াখালীর দুই সাংবাদিক ও এক স্থানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি ঘিরে সাংবাদিক মহলে ব্যাপক উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান জুয়েল।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করা হয়।
বাদী নিজেকে মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি, দৈনিক দিনকাল পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি এবং মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দাবি করেছেন।
মামলায় বিবাদী করা হয়েছে দৈনিক সমকালের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি মুফতি সালাউদ্দিন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি এম কে রানা এবং পশ্চিম সুবিদখালী এলাকার বাসিন্দা মাসুম হাওলাদারকে।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম ফারুক মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।
ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী নাজমুল হাসান বলেন, ‘চাঁদা না দিলে ব্যবসায়ীকে মারধর বিএনপি নেতার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ১৫ এপ্রিল সমকালের অনলাইনে এবং ১৬ এপ্রিল প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত হয়।
একই দিনে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের অনলাইন পোর্টালে ‘মাসে ৫০ হাজার টাকা না দিলে ব্যবসা বন্ধের হুমকি বিএনপি নেতার’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর মাসুম হাওলাদার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রতিবেদনটি শেয়ার করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এসব সংবাদ ‘ভিত্তিহীন, মনগড়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’, যা বাদীর সামাজিক ও রাজনৈতিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে। প্রতিবেদনগুলো রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়াতে পারে।
এ বিষয়ে দৈনিক সমকাল পত্রিকার পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি মুফতি সালাউদ্দিন ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি এম কে রানা জানান, তথ্য-উপাত্ত নিয়েই সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। প্রয়োজনে সবকিছু উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে, মামলার পর সাংবাদিক মহল এটিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর চরম হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন একে সাংবাদিক হয়রানি হিসেবে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছে। তারা মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় একত্রিত থাকার আহ্বান জানান।