পাবনা ঈশ্বরদীর ডিগ্রির চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে ১২ জন আহত হয়েছেন। আজ (শুক্রবার) লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের লক্ষীকুন্ডা ডিগ্রির চরে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন ঈশ্বরদী লক্ষ্মীকুন্ডার ইউনিয়নের আকাত আলী শেখের ছেলে পিল্লু শেখ (২৫), আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৬), আতিয়ারের ছেলে আসিফ (২০), চরগড়গড়ি গ্রামের হাবিবুল ইসলামের ছেলে সোয়াইল (২৪) ও আলম (২৭)। এ ছাড়া অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে।
আহতদের অধিকাংশই পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আরো পড়ুন
আরবি ভাষার প্রচলিত ৫ উপভাষা
স্থানীয়, থানা ও নৌ-পুলিশ সূত্র জানায়, পদ্মানদীতে জেগে ওঠা চরের জমি অবৈধভাবে দখলকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ডিগ্রিরচর এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা, হামলা ও গুলাগুলির ঘটনা ঘটছে। বাংলা ১৪৩২ সালে চরটি সরকারিভাবে ইজারাদারি দেওয়া হয়েছে। এটি বিএনপি কর্মী সাইদুল ইসলাম প্রামাণিকের লোকজন ডেকে নিয়েছে।
কিন্তু ওই এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাদের সঙ্গে যোগ সাজছে কুষ্টিয়া হরিপুর এলাকার মুকুল বাহিনী চরটি অবৈধভাবে দখল নেওয়া চেষ্টা করছে।
সকালে সাইদুলের পক্ষে লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের চরগরগড়ি গ্রামের রিকাত আলী শেখ ও তার ছেলে, ভাই, ভাতিজা এবং এলাকাবাসী নিয়ে চরের জমি দেখতে যান। এ সময় পূর্বে থেকে চরে অবস্থান করা কুষ্টিয়া হরিপুরের মকুল, কামালপুর এলাকার আওয়ামী লীগ ও শফি মিরের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রিকাতের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলি হয়।
এতে রিকাত শেখের পক্ষের পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১২ জন আহত হন।
আরো পড়ুন
বাথরুমে পড়াশোনা করে ক্লাসে প্রথম হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী
এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে রিকাত বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল মেম্বার, তরিকুল মেম্বার চরের জমি অবৈধভাবে চাষাবাদ করে আসছিলেন। আমরা লিজ নেওয়ার পরেও জমিতে যেতে পারতাম না। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে চরের মধ্যে পালিয়ে আছেন তারা। চরাঞ্চলে গা ঢাকা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করছে।
মুকুল বাহিনীর লোকজন আমাদের একটি মোটরসাইকেল নিয়ে গেছে।'
লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম মেম্বার বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাড়িতে তো দূরের কথা এলাকাতেই থাকতে পারি না। সেখানে চর দখল নিয়ে মারামারি করার ঘটনাটি অতি হাস্যকর। মিথ্যা ও ভিত্তিহীনভাবে আমাকে জড়িয়ে মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে।'
আরো পড়ুন
তারেক রহমানকে নিয়ে দ্য উইকের কাভার স্টোরি ‘নিয়তির সন্তান’
কুষ্টিয়ার হরিপুর এলাকার মুকুল মেম্বার বলেন, 'আমি সন্ত্রাসী নই। ডিগ্রির চরে আমার বাবার নামে অন্তত ১০০ বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমিও বিএনপির লোকজন দখল করে নিয়েছে।'
তিনি আরো বলেন, 'আওয়ামী লীগের সময় লিজগ্রহণকারী তরিকুল আমার নামে ডিগ্রিরচর লিখে দিয়েছিল। কিন্তু সেই কারণে আমার বাবার নামীয় জমি ও চরের জমিতে কলাগাছ লাগিয়েছিলাম। অন্যদের নিকটও সাব লিজ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা জোর করে দিনে রাতে কলা কেটে নিয়ে যেত। ঘটনার দিন রাতে আকাত শেখের লোকজন কলা কেটে যাওয়ার সময় তাদের আটকানো হয়। সকালে আকাত শেখ লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করতে চরে এলে সংঘর্ষ বাঁধে।'
আরো পড়ুন
ঘুমানোর সময় যে দোয়া পড়া সুন্নত
লক্ষ্মীকুন্ডা নৌ পুলিশ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এমরান মাহমুদ তুহিন জানান, ঘটনাস্থলে আমাদের নৌ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছি। এখন চরের পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ডিগ্রির চরের জমি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশ সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে। বর্তমানে চরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ব্যাপারে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। লিখিত অভিযোগও পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন
কাশ্মীরে হামলা, পার্টি বন্ধ করলেন আরিয়ান