হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কয়েক শ গজ এগোলেই বাস হেলপারের হাঁকডাক শুরু হয়- রাজলক্ষ্মী। তবে এটা কোনো এলাকা বা নির্দিষ্ট স্থানের নাম নয়। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বহুতল বিপণিবিতানের নাম। স্থানীয়ভাবে বলা হয় 'রাজলক্ষ্মী মার্কেট'।
নায়করাজের মৃত্যু
অশ্রুভেজা রাজলক্ষ্মী
আপেল মাহমুদ

উত্তরা মডেল টাউনের ৩ নম্বর সেক্টরের ঠিক সম্মুখ অংশে ১৮ কাঠার একটি প্লটের ওপর দাঁড়িয়ে বিপণিবিতানটি। লোকমুখে দিনে দিনে পুরো এলাকাটিই রাজলক্ষ্মী নামে পরিচিতি পেয়েছে। উত্তরার সর্বপ্রথম আধুনিক বিপণিবিতান হওয়ায় এটি আলাদা একটি মাত্রা পেয়েছে। সেই মাত্রায় আরো ব্যাপকতা এনেছে এর প্রতিষ্ঠাতা নায়করাজ রাজ্জাকের নামটি।
নায়করাজ গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় মারা যাওয়ার পরদিন তাঁর সম্মানে বিপণিবিতানটি বন্ধ রাখা হয়। সেদিন বিপণিবিতানের গেটে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন ষাটোর্ধ্ব ইসহাক। ৩৯ বছর ধরে তিনি এখানে আছেন।
চোখ মুছতে মুছতে বললেন, '১৯৮৮ সালের দিকে ঝালকাঠির রাজাপুর থেকে ঢাকায় এসে উদ্বাস্তুর মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম।
স্মৃতিচারণা করে ইসহাক বলেন, 'রাজলক্ষ্মীর কাজ শুরুর প্রথম দিকে উত্তরা ছিল জনমানবশূন্য এলাকা। তখন রাজ্জাক স্যার প্রায় প্রতিদিন নির্মাণকাজ দেখতে আসতেন। কখনো তেজগাঁওয়ে এফডিসি থেকে আবার কখনো আউটডোর থেকে সরাসরি চলে আসতেন। এই মার্কেটের প্রতি স্যারের আলাদা একটা দরদ ছিল। তিনি নিজ সন্তানের মতোই রাজলক্ষ্মী গড়ে তুলেছিলেন। মার্কেটের দোকানপাট বিক্রি করলেও কখনো এর স্বত্ব হাতছাড়া করেননি। তাই এখনো তিনি স্বত্বাধিকারী হিসেবে জমিদারি ভাড়া পাচ্ছেন।'
রাজলক্ষ্মী মার্কেট অফিসে কাজ করেন আবদুল খালেক। তিনি ২৯ বছর ধরে এখানে আছেন। বললেন, 'স্যার পাঁচ বছর ধরে মার্কেটে নিয়মিত আসেননি। অথচ আগে তিনি একদিন এখানে না এলে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারতেন না। মার্কেটটি ছিল স্যারের দ্বিতীয় বাড়ি। বর্তমানে তাঁর বড় ছেলে বাপ্পা স্যার জমিদারির আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ করেন।'
আবদুল খালেক বলেন, 'আমরা যারা ছোটখাটো চাকরি করি স্যার তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সব খোঁজখবর নিতেন। কার কী অসুবিধা, কার বেতন বাড়ানো দরকার- সবকিছু তিনি তদারক করতেন। এত বড় একজন মানুষ হয়েও তিনি গরিব কর্মচারীদের প্রতি দরদি ছিলেন। তা না হলে এত দিন এখানে কাজ করতে পারতাম না।'
রাজলক্ষ্মীর প্রথম ব্যবস্থাপক সন্তোষ চন্দ্র দাস বলেন, 'রাজ্জাক স্যার তাঁর অভিনয়জীবনে আয়ের বেশির ভাগ অর্থই এই মার্কেটের পেছনে ব্যয় করেছেন। নিজে অনেক কষ্ট করেছেন। সারা দিন শুটিং করে এসে মার্কেটে সময় দিতেন। অনেক সময় রুটি-বিস্কুট খেয়ে সময় কাটিয়ে দিতেন। তখন উত্তরায় দোকানপাট কিংবা হোটেল-রেস্তোরাঁ তো দূরের কথা, কোনো বাড়িঘরও গড়ে ওঠেনি। তিনি নিজের ঘামে মার্কেটটি নির্মাণ করে এর নাম রেখেছিলেন রাজলক্ষী কমপ্লেক্স। নিচে মার্কেট এবং ওপরে অফিসের উপযোগী হিসেবে ভবন নির্মাণ করা হয়। রূপায়ণ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুল লতিফ এবং মুখলেছুর রহমান নামে দুজন ঠিকাদার এটা নির্মাণ করেছিলেন।'
সন্তোষ চন্দ্র জানান, রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৮৮ সালের মার্চে। শেষ হয় ১৯৯২ সালের দিকে। প্রথমে কমপ্লেক্সের তিন তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়। এরপর সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছয় তলার কাজ শেষ করা হয়। তিল তিল করে গড়ে তোলা এই সম্পত্তির প্রতি রাজ্জাক স্যারের আলাদা একটি মায়া ছিল। অনেক সময় তিনি লুঙ্গি পরেই মার্কেটে চলে আসতেন। মার্কেটের ছয় তলায় একটি অফিস কক্ষ বানিয়েছিলেন। মার্কেটে এলে সেখানেই বসতেন।
সরেজমিনে গিয়ে রাজলক্ষ্মীর সর্বত্র শোকের ছায়া চোখে পড়েছে। বর্তমান ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, 'স্যার মার্কেটের কর্মচারীদের নিজ সন্তানের মতো দেখতেন। ব্যবসায়ীদের মনে করতেন পারিবারিক সদস্য। তাঁর মৃত্যুতে যেন আমরা আমাদের বাবাকেই হারিয়ে ফেলেছি।'
নজরুল ইসলাম জানান, নায়করাজ গুলশানের আজাদ মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন। এক ওয়াক্ত নামাজও কাজা পড়তেন না। যেদিন তিনি মারা যান সেদিনও ফজর ও জোহরের নামাজ তিনি আজাদ মসজিদে গিয়ে আদায় করেন।
সম্পর্কিত খবর

মোহাম্মদপুরে চাপাতি দিয়ে দুই তরুণকে পেটানো কিশোর আশিকসহ গ্রেপ্তার ৪
অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি চাপাতি দিয়ে দুই তরুণকে পেটাচ্ছে এক কিশোর। তার পাশেই দাঁড়িয়ে একজন ভিডিও করছেন। এসংক্রান্ত একটি ভিডিও সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি মোহাম্মদপুর এলাকার হওয়ায় জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়।
গ্রেপ্তার ওই কিশোরের নাম আশিক। সে টুন্ডা বাবুর ভাতিজা।
তিনি জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর আদাবর এলাকায় কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত টুণ্ডা বাবু গ্রুপ।
জানা গেছে, টুণ্ডা বাবুকে কিছুদিন আগে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারপর থেকে ছোট ভাই স্বপন গ্যাংকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিল।

মধ্যরাতে ফ্লাইওভারে মিলল তরুণীর লাশ, মেলেনি পরিচয়
অনলাইন ডেস্ক

মধ্যরাতে রাজধানীর ফ্লাইওভার থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত তরুণর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, সড়ক দুর্ঘটনায় ওই তরুণী মারা গেছেন। তিনি মানসিক ভারসম্যহীন ও বয়স আনুমানিক ২২ বছর।
শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর থানাধীন রাজারবাগ পুলিশ লাইন সংলগ্ন ফ্লাইওভারে এ ঘটনা ঘটে। আজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রিয়াজুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, মধ্যরাতে খবর আসে রাজারবাগ পুলিশ লাইন সংলগ্ন মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের ওপরে একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এক তরুণীর লাশ পড়ে রয়েছে।
উপপরিদর্শক রিয়াজুল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই তরুণী মানসিক ভারসাম্যহীন। হেঁটে ফ্লাইওভারের ওপরে উঠে এক পাশ থেকে আরেক পাশে যাওয়ার সময় কোনো যানবাহনের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছে তার। তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

নারীদের সুরক্ষায় চালু ‘হেল্প অ্যাপ’, অভিযোগ করলেই এফআইআর
অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর গণপরিবহনে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে হ্যারাসমেন্ট এলিমিনেশন লিটারেসি প্রোগ্রাম (হেল্প) অ্যাপ চালু করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ডিএমপি শেখ সাজ্জাদ আলী জানিয়েছেন, এই অ্যাপের মাধ্যমে কোনো নারী অভিযোগ করলে তা এফআইআর হিসেবে গণ্য করা হবে।
ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (বিজেসি) ও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের যৌথভাবে চালু করা পরিষেবাটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, হেল্প অ্যাপের মাধ্যমে কোনো নারী অভিযোগ করলে এক কিলোমিটারের মধ্যের থানায় তা এফআইআর হিসেবে লিপিবদ্ধ হবে।
পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরুতে এই সেবা ঢাকার বছিলা থেকে সায়েদাবাদ রুটে বাস্তবায়ন করা হবে। পরবর্তী সময়ে এটিকে সব রুটে চালু করার ওপর জোর দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এ ব্যাপারে পুলিশ সব ধরনের সাহায্য করবে। রাজধানী এখন অনেক বিস্তৃত।

দুপুর ২টা পর্যন্ত গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
অনলাইন ডেস্ক

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের আওতাধীন এমআরটি লাইন-১ এর ভূগর্ভস্থ স্টেশনের অ্যালাইনমেন্ট থেকে তিতাস গ্যাসের বিদ্যমান গ্যাস লাইন স্থানান্তর কাজের জন্য রাজধানীর বিমানবন্দর ও খিলক্ষেত এলাকায় আজ রবিবার ৬ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। গতকাল শনিবার তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ রবিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট ছয় ঘণ্টা ঢাকা মহানগরীর কামারপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা হতে বলাকা ভবন পর্যন্ত সকল শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। ফলে উত্তরা সকল সেক্টর, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে।
গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিতাসগ্যাস কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।